রাঙ্গামাটি ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞায় দৈনিক কোটি টাকা ক্ষতির আশঙ্কা

পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে বছরের মার্চ থেকে অক্টোবর পর্যন্ত সময়কে পর্যটনের ‘পিক সিজন’ হিসেবে ধরা হয়। এসব এলাকায় সারা বছরই পর্যটকদের আনাগোনা থাকে।

রাঙামাটি এবং খাগড়াছড়িতে সাম্প্রতিক সংঘর্ষ এবং রাঙামাটি জেলা প্রশাসন কর্তৃক ৮ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত পর্যটকদের পাহাড়ে ভ্রমণের নিরুৎসাহিত করার পরিপ্রেক্ষিতে পর্যটনশিল্পে ব্যাপক ধস নেমেছে।পর্যটন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, নেই কোনো পর্যটক। পর্যটন কেন্দ্রগুলো ফাঁকা পড়ে আছে। পর্যটকশূন্য রাঙামাটি, বড় ক্ষতির আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের। দৈনিক এক থেকে দুই কোটি টাকার ক্ষতি গুনছেন ব্যবসায়ীরা।

এ বিষয়ে রাঙ্গামাটি চেম্বর অব কমার্সের পরিচালক আলী বাবর জানান, ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞার কারণে পর্যটন সেক্টরে জড়িত ব্যবসায়ীদের দৈনিক গড়ে এক থেকে দুই কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে। এটা যদি ৩০ দিন চলে তাহলে এর পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াবে প্রায় ৫০ কোটি টাকা। আমরা এ অবস্থান থেকে পরিত্রাণ চাই।

রাঙ্গামাটি হোটেল মালিক সমিতির সভাপতি মঈনুদ্দিন সেলিম জানান, গত কয়েকমাসের লোকসান পূজার এই ছুটিতে কাটিয়ে তোলার লক্ষ্য ছিল ব্যবসায়ীদের। কিন্তু ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞায় ব্যবসায়ীরা আরও লোকসানে পড়লেন।

ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব রাঙ্গামাটির (টোয়ার) সভাপতি ও গরবা ট্যুরিজমের সিইও বাদশা ফয়সাল বলেন, ‘এই নিষেধাজ্ঞা শুধু একটা নির্দেশনা নয়; দীর্ঘমেয়াদি একটা নেতিবাচক ফল বয়ে আনবে আমাদের জন্য। বাইরে থেকে সবাই ভাববে পাহাড় নিরাপদ নয়, সেখানে ঘুরতে যাওয়া নিরাপদ হবে না। সেক্ষেত্রে প্রত্যাহারের পরও কতটুকু এটা রিকভার করতে পারবো আমরা বুঝতে পারছি না।’

তিনি বলেন, দুর্গাপূজায় টানা ছুটিতে হোটেল, মোটেল, রিসোর্টগুলো অগ্রিম বুকিং ছিল; সেগুলো ক্যান্সেল করতে হচ্ছে। ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত যদি এ নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকে, তাহলে এই খাতে কোটি কোটি টাকা লোকসান হবে।

কাপ্তাই হ্রদে পর্যটকদের নৌ বিহারের জন্য কয়েকশ ট্যুরিস্ট বোট রয়েছে। এর ওপর অন্তত এক হাজার মালিক ও শ্রমিকের সংসার নির্ভরশীল। পর্যটক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞায় বিপাকে পড়েছেন তারা।

রাঙ্গামাটি ট্যুরিস্ট বোট মালিক সমিতির সহ সভাপতি রমজান আলী বলেন, ‘এমনিতেই এতদিন পর্যটক ছিল না। পূজার টানা ছুটিতে যখন সবাই প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, তখন এমন নির্দেশনায় আমাদের মালিক-শ্রমিক সবার মাথার ওপর আকাশ ভেঙে পড়েছে।’