রাঙ্গামাটি রাজবন বিহারে শুরু কঠিন চীবরদান উৎসব

চরকায় সুতা কেটে বৌদ্ধভিক্ষুদের চীবর (পরার কাপড়) তৈরি কার্যক্রমের সূচনার মধ্য দিয়ে রাঙ্গামাটির রাজবন বিহারে শুরু হয়েছে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান উৎসব ‘কঠিন চীবরদান’। উৎসবে বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, থাইল্যান্ডসহ কয়েকটি দেশের ভিক্ষুরা অংশ নিচ্ছেন। এটি রাজবন বিহারের ৪৯তম কঠিন চীবরদান উৎসব।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে বেইন ঘর উদ্বোধনের মাধ্যমে দু’দিন ব্যাপী এ উৎসবের উদ্বোধন করেন রাজবন বিহারের আবাসিক প্রধান প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবির। উদ্বোধনের পর চরকায় সুতা কেটে বৌদ্ধভিক্ষুদের চীবর (পরার কাপড়) তৈরি কার্যক্রমের সূচনা করেন বিশিষ্ট নারী উদ্যোক্তা মঞ্জুলিকা খীসা। আজ শুক্রবার দুপুরে ভিক্ষু সংঘের কাছে এ চীবরদান করা হবে।
বেইন ঘরে পঞ্চশীল প্রদান করেন প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবির। এ সময় পুণ্যার্থীদের সাধু সাধু ধ্বনিতে মুখরিত হয় পুরো রাজবন বিহার প্রাঙ্গণ।
উদ্বোধনের পর রাজবন বিহারের আবাসিক প্রধান প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবির বলেন, ‘মানব মনে বুদ্ধের নীতি অনুসরণ করতে হবে। তবেই হিংসা-হানাহানি লোপ পাবে। বুদ্ধের অহিংস নীতি সবার মধ্যে মৈত্রীভাব শেখায়।’ তিনি বলেন, ‘কঠিক চীবর দানোৎসবে অংশগ্রহণের মাধ্যমে অশেষ পুণ্য অর্জনের মাধ্যমে সবার হৃদয় প্রেম-ভালোবাসায় ভরে উঠুক।’
রাজবন বিহারের কার্যকরী কমিটির সূত্রে জানা গেছে, রাজবন বিহারের বিশাল এলাকা জুড়ে প্রায় ২০০টি বেইন স্থাপন করা হয়েছে। এতে প্রায় হাজারখানেক নারী-পুরুষ এ চীবর প্রস্তুত কাজে অংশগ্রহণ করেন। সারা রাতব্যাপী এ চীবর তৈরির কার্যক্রম চলে।
বৌদ্ধ শাস্ত্রমতে, আড়াই হাজার বছর আগে গৌতম বুদ্ধের উপাসিকা বিশাখা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চীবর তৈরির প্রচলন করেছিলেন। তিন মাস বৌদ্ধভিক্ষুদের বর্ষাবাস শেষে আষাঢ়ি পূর্ণিমা থেকে কার্তিকী পূর্ণিমার মধ্যে বৌদ্ধভিক্ষুদের চীবরদান করা হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় বনভান্তের অনুপ্রেরণায় ১৯৭৬ সাল থেকে বুদ্ধের উপাসিকা বিশাখা প্রবর্তিত নিয়মে রাঙ্গামাটি রাজবন বিহারে কঠিন চীবরদান উৎসব উদযাপিত হয়ে আসছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন




















