রাজধানীর যেসব স্থানে বসবে কোরবানির পশুর হাট

আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানীর দুই সিটি কর্পোরেশন এলাকার ২৬টি স্থানে অস্থায়ী পশুর হাট বসানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। কোরবানির পশুর চাহিদা মেটাতে স্থায়ী পশুর হাট গাবতলী ছাড়াও প্রতি বছর বসে বেশকিছু অস্থায়ী হাট। রাজধানীবাসীর চাহিদার কথা মাথায় রেখে বিপুলসংখ্যক কোরবানির পশু আমদানি হয় এসব হাটে। খামারিরাও একটু বেশি লাভের আশায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কোরবানির জন্য প্রস্তুত পশুগুলো রাজধানীতে নিয়ে আসেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) আওতাধীন এলাকায় ১৪টি এবং ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকার ১২টি স্থানে হাট বসাতে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। তবে সীমানা জটিলতায় আফতাবনগর হাট নিয়ে টানাটানি বেধেছে দুই সিটির মধ্যে। ওই হাটের জন্য দরপত্র আহ্বান করেছে দুই সিটি কর্পোরেশনই।

হাটের ইজারার জন্য দরপত্র আহ্বানের পর থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ১৪টির মধ্যে ১১টির ইজারা পাওয়া গেছে। বাকি হাটগুলোর কাঙ্ক্ষিত মূল্য না পাওয়ায় পুনঃদরপত্র আহ্বান করা হবে বলে জানা গেছে। অন্যদিকে উত্তর সিটির হাটগুলোর মধ্যে যেগুলোর কাঙ্ক্ষিত মূল্য পাওয়া যাবে না সেগুলোরও পুনঃদরপত্র আহ্বান করা হবে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় যেসব হাট বসবে

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় হাট বসবে মোট ১৪টি। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- ধূপখোলা মাঠসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা; ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউয়ারটেক মাঠসংলগ্ন আশপাশ এলাকার খালি জায়গা; আমুলিয়া মডেল টাউনের আশপাশের খালি জায়গা; দাওকান্দি ইন্দুলিয়া ভাগাপুরনগর (আফতাবনগর ইস্টার্ন হাউজিং মেরাদিয়া মৌজার সেকশন-১ ও ২) লোহারপুলের পূর্ব অংশ এবং খোলা মাঠসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা; উত্তর শাহজাহানপুর খিলগাঁও রেলগেট বাজারের মৈত্রী সংঘের মাঠসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা; শ্যামপুর বালুর মাঠসহ আশপাশের এলাকার খালি জায়গা; মেরাদিয়া বাজারসংলগ্ন আশপাশের এলাকার খালি জায়গা; ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের সামসাবাদ মাঠসংলগ্ন আশপাশের এলাকার খালি জায়গা; জিগাতলা হাজারীবাগ মাঠসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা; লালবাগের রহমতগঞ্জ খেলার মাঠসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা; কামরাঙ্গীরচর চেয়ারম্যানের বাড়ির মোড় হতে দক্ষিণ দিকে বুড়িগঙ্গা নদীর বাঁধসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, শ্যামপুর বালুর মাঠসহ আশপাশের খালি জায়গা, লিটিল ফ্রেন্ডস ক্লাবসংলগ্ন গোপীবাগ বালুর মাঠ ও কমলাপুর স্টেডিয়াম সংলগ্ন বিশ্বরোডের আশপাশের খালি জায়গা এবং শনির আখড়া-দনিয়া মাঠসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা।

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় যেসব হাট বসবে

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় এবার অস্থায়ী হাট বসবে ১২টি। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- কাওলা-শিয়ালডাঙ্গা সংলগ্ন খালি জায়গা, উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টরের উত্তরার স্লুইসগেট হতে কামারপাড়া ব্রিজ পর্যন্ত ফাঁকা জায়গা; মিরপুর ডিওএইচএসের উত্তর পাশের সেতু প্রপার্টিসংলগ্ন খালি জায়গা; ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট খেলার মাঠ; উত্তরখান ময়নারটেক শহিদনগর হাউজিংয়ের খালি জায়গা; বাড্ডা ইস্টার্ন হাউজিং (আফতাবনগর) ব্লক-ই, সেকশন-৩ এর খালি জায়গা; মিরপুর সেকশন-৬, ওয়ার্ড- ৬ (ইস্টার্ন হাউজিং) এর খালি জায়গা; খিলক্ষেত বনরূপা আবাসিক প্রকল্পের খালি জায়গা; উত্তরা ১৫ নম্বর সেক্টরের ১ নম্বর ব্রিজের পশ্চিম অংশ এবং ২ নম্বর ব্রিজের পশ্চিমে গোলচত্বর পর্যন্ত সড়কের উভয় পাশের ফাঁকা জায়গা; ভাটারা (সাইদনগর) পশুর হাট; মোহাম্মদপুর বুদ্ধিজীবী সড়কসংলগ্ন (বসিলা) পুলিশ লাইনের খালি জায়গা এবং খিলক্ষেত ৩০০ ফুট সড়কসংলগ্ন উভয় পাশের বসুন্ধরা হাউজিংয়ের খালি জায়গা।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সদ্যবিদায়ী প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যে প্রতিটি হাটের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। স্বচ্ছতার সঙ্গে সব হাটের ইজারা দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে।

আফতাবনগর হাট নিয়ে দুই সিটির টানাটানির বিষয়ে তিনি বলেন, সীমানা নির্ধারণ গেজেট অনুযায়ী যেখানে আফতাবনগর হাট বসানো হয়, তার বেশির ভাগ অংশ ডিএসসিসির আওতাভুক্ত। সীমানা অনুযায়ী আফতাবনগর হাটের ৪ ভাগের ৩ ভাগ ডিএসসিসির আওতাভুক্ত।

অন্যদিকে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, আফতাবনগর হাট অনেক বছর ধরে ডিএনসিসি ইজারা দিচ্ছে। গত বছর বিশেষ কারণে ডিএনসিসিকে বরাদ্দ দেয়া হয়নি, তবে এবার দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।

জানা গেছে, আফতাবনগর হাটের জন্য দরপত্র আহ্বান করেছে দুই সিটি কর্পোরেশন। তাদের দাবি, ওই হাটের এলাকা তাদের সীমানায় পড়েছে। মূলত জায়গাটি দুই সিটি কর্পোরেশনের সীমান্ত এলাকায়। সামনের জায়গা ডিএনসিসির এবং পেছনের জায়গা ডিএসসিসির।