রাজনৈতিক ক্ষমতা-কালোটাকা গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করছে: গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনপ্রধান
রাজনৈতিক ক্ষমতা ও কালোটাকা গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করছে বলে মন্তব্য করেছেন গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ।
রোববার সকালে রংপুর জেলা প্রশাসনের সম্মেলনকক্ষে রংপুর বিভাগের সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
কমিশনের সদস্যদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন; দ্য ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক ও সম্পাদক পরিষদের প্রতিনিধি শামসুল হক; বেগম কামরুন্নেসা হাসান; আবদুল্লাহ আল মামুন এবং মোস্তফা সবুজ উপস্থিত ছিলেন।
কামাল আহমেদ বলেন, অধিকাংশ গণমাধ্যম দেশের মানুষের স্বার্থের বদলে তাদের ব্যবসায়িক স্বার্থে ব্যবহৃত হয়েছে। ফলে এটি দুষ্টচক্রে পরিণত হয়েছে। এই দুষ্টচক্র না ভাঙলে গণমাধ্যমের সমস্যার সমাধান খুব সহজে আসবে না।
কামাল আহমেদ বলেন, ‘দেশে অনেক বেশিসংখ্যক পত্রিকা। অনেক বেশিসংখ্যক টেলিভিশন। এগুলোর মধ্যে সুস্থ প্রতিযোগিতা ও প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ নেই। পরিবেশ এমনই, যেখানে যার যত রাজনৈতিক ক্ষমতা আছে, যার যত কালোটাকার দাপট আছে, সে তত বেশি লাভবান হচ্ছে। সে তত বেশি শক্তিশালী হচ্ছে। এভাবেই রাজনৈতিক ক্ষমতা ও কালোটাকা গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করছে।’
মতবিনিময় সভায় রংপুর বিভাগের কর্মরত সাংবাদিকেরা বিভিন্ন দাবি ও মতামত তুলে ধরেন। রংপুরের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক লিয়াকত আলী বলেন, দেশে ৪৬টি বেসরকারি টেলিভিশনের মধ্যে ৭ থেকে ৮টি ছাড়া অধিকাংশই ঢাকার বাইরের সাংবাদিকদের বেতন দেয় না। সাংবাদিকতার কারণে মফস্সলের সাংবাদিকেরা বিভিন্ন সময় হামলা-মামলার মধ্যে পড়লেও গণমাধ্যমগুলো ঝুঁকি ভাতা দিতে চায় না।
কালের কণ্ঠের প্রতিনিধি রফিকুল ইসলাম বলেন, একজন চাইলেই আগামীকাল একটি দৈনিকের পরিচয়পত্র নিয়ে এসে সাংবাদিক পরিচয় দিচ্ছেন। এটা বন্ধ হওয়া উচিত। রংপুর রিপোর্টার্স ক্লাব ও রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সরকার মাজহারুল মান্নান ঢাকার বাইরের সাংবাদিকদের বেতনকাঠামো বাস্তবায়ন বাধ্যতামূলক করার দাবি জানান।
রংপুরে কর্মরত বাংলাভিশনের ভিডিও সাংবাদিক শাহনেওয়াজ বলেন, ভিডিও সাংবাদিকেরা ইলেকট্রনিক ও ডিজিটাল সাংবাদিকতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেও তাদের অধিকাংশের নিয়োগ বা স্বীকৃতি নেই।
এসব বিষয়ে কামাল আহমেদ বলেন, গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলো সঠিকভাবে চলছে না, বিধায় কর্মীদের বঞ্চিত করছে। সাংবাদিকদের মধ্যে চরম বিভাজন, ঐক্য নেই। একদল হচ্ছে সাংবাদিক লীগ, আরেকটি হচ্ছে দল। এরা যারা সাংবাদিকদের ব্যবহার করতে চান, তারা এর সুযোগ নিচ্ছেন। সব দিক থেকে নৈরাজ্য তৈরি হয়েছে।
মূলধারার গণমাধ্যমগুলো গত ১৫ বছরে রাজনৈতিক কারণে ব্যর্থ হয়েছে মন্তব্য করে কামাল আহমেদ বলেন, গত ১৫ বছরে রাজনৈতিক প্রভাব, সরকারের বিভিন্ন স্বৈরাচারী প্রভাব, মামলা ও আইন করে বিভিন্নভাবে নিয়ন্ত্রণ ও নিপীড়নের চেষ্টা, ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন