রাজনৈতিক দল পারেনি ছাত্ররা পেরেছে: মামুনুল হক

ছাত্রদের নেতৃত্বেই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক। তিনি বলেন, ছাত্র-জনতা যদি সুপরিকল্পিত ও সুসংগঠিতভাবে আগায় তাহলে তারা কি পারে ৫ আগস্টই তার জ্বলন্ত প্রমাণ।

বড় বড় রাজনৈতিক দল ও নেতারা যা পারেনি তা ছাত্ররা করে দেখিয়েছে। মানুষ বিশ্বাস করতে শুরু করেছিল যে হাসিনার জীবদ্দশায় ক্ষমতার পালাবদল সম্ভব নয়। বড় বড় রাজনৈতিক দলগুলো হতাশ হয়ে বলেছে, আমরা হাসিনার পতনের এজেন্ডা বাদ দিয়ে দিছি। এই ছাত্র ও নতুন প্রজন্মই এসব বড় বড় রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দকে প্রত্যাশার আলো দেখিয়েছে।

সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) বটতলায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা খেলাফত ছাত্র মজলিস আয়োজিত এক সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মামুনুল হক বলেন, বিট্রিশ ও আধিপত্যবাদ বিরোধী সংগ্রামের ৫৩ বছর পর আবারও ছাত্র জনতাকে বৈষম্যবিরোধী সংগ্রাম করতে হল। এটি জাতির জন্য দুখঃজনক। ছাত্রজনতা বারবার বৈষম্যহীন সমাজ গড়ার জন্য রক্ত দিয়েছে তবে বারবার এই রক্ত বিফলে গিয়েছে।

আজ বাংলাদেশের যুব সমাজ ইসলামী সমাজ ব্যবস্থার দিকে বাধঁভাঙা জোয়ারের মতো ঝুঁকছে যা অকল্পনীয়। কারণ তারা সব সমাজব্যবস্থা দেখেছে। কোন আর্দশই বৈষম্যহীন সমাজ উপহার দিতে পারেনি। তাই এখন তারা ইসলামের বাংলাদেশ দেখতে চায়। বিপুল জনগোষ্ঠীর এই উদ্দীপনাকে কাজে লাগাতে হলে আমাদের প্রশিক্ষিত জনশক্তি দরকার।

ছাত্ররা যদি সম্মিলিত ও সুপরিকল্পিতভাবে প্রচেষ্টা করে তাহলে তারা কি করতে পারে তা তারা ৫ আগষ্ট দেখিয়ে দিয়েছে। তাই ছাত্ররা বিপুল জনগোষ্ঠীকে সংগঠিত করতে পারলে আগামীতে সুন্দর দেশ গড়া সম্ভব। আমাদের হীনমন্যতায় ভুগলে চলবে না।

তিনি আরো বলেন, বিগত ১৬ বছর দেশের মানুষের উপর আওয়ামী ফ্যাসিস্ট অন্যায়, নির্যাতন, জুলুম ও গুম-খুন করেছে। গুমের ভয়াবহ দৃশ্য আমরা আয়নাঘরে প্রকাশের মাধ্যমে দেখেছি। তবে ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলে সবচেয়ে বেশি জুলুমের শিকার হয়েছে ইসলাম ও ইসলামী নেতৃবৃন্দ। আলেমদেরকে জুড়িশিয়াল কিলিংয়ের মাধ্যমে শুধু হত্যা নয় বরং হত্যার আগে নিকৃষ্ট মিথ্যা অপবাদ ও চরিত্র হননের চেষ্টা করা হয়েছে। এই জাতি, সমাজ ও দেশ এই আওয়ামীলীগকে ক্ষমা করলেও আল্লাহ ক্ষমা করবেন না।

সভায় উপস্থিত ছিলেন খেলাফত মজলিসের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির আতাউল্লাহ আমিন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন, ধর্মতত্ত্ব অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. ছিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী, আল হাদিস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান, আল হাদিস বিভাগের অ্যালামনাই ও তরুণ ইসলামী বক্তা আব্দুল হাই মো. সাইফুল্লাহ, খেলাফত ছাত্র মজলিশের সভাপতি কামাল উদ্দিন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইবির সমন্বয়ক এস এম সুইট, শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মাহমুদুল হাসানসহ খেলাফত ছাত্র মজলিসের অন্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।