রাজীবের খালার মিথ্যাচারের জবাব দিলেন অনন্ত জলিল
রাজধানীতে দুই বাসের চাপায় প্রথমে হাত ও পরে প্রাণ হারানো কলেজছাত্র রাজীবের ছোট দুই ভাইয়ের পড়াশোনা এবং ভরণপোষণের দায়িত্ব নিয়েছেন চিত্রনায়ক, প্রযোজক ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী অনন্ত জলিল।
গত ২২ এপ্রিল তার নিজস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এজেআই গ্রুপের কার্যালয়ে রাজীবের খালা জাহানারা বেগম এবং মামা জাহিদুল ইসলামের উপস্থিতিতে তার ছোট দুই ভাই মেহেদি ও আবদুল্লাহকে ডেকে নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এ দায়িত্ব নেন তিনি।
সম্প্রতি কয়েকটি গণমাধ্যমে রাজীবের খালার বরাত দিয়ে প্রকাশিত হয়েছে- অনন্তর কাছ থেকে রাজীবের ছোট দুই ভাইয়ের জন্য প্রত্যাশিত সাহায্য মেলেনি।
রাজীবের খালা আরও বলেন, অনন্তর ঘোষণার পর তারা তার সঙ্গে যোগাযোগ করে দেখা করেছেন। কিন্তু তাদের ১০ হাজার টাকা দিয়ে বিদায় করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অনন্ত জলিলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে জানান।
অনন্ত জলিল বলেন, ‘আমার লোক রাজীবের ছোট দুই ভাই, খালা ও মামাকে খুঁজে বের করে আমার অফিসে নিয়ে আসে। আমি পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পারি, রাজীবের মৃত্যুর পর ওর ছোট দুই ভাইয়ের আর কেউ নেই। তাই তাদের দায়িত্ব নিতে চেয়েছি।
এ জন্য আমি আমার ফ্যাক্টরির কাছাকাছি একটি ভালো মাদ্রাসায় তাদের ভর্তির জন্য কথাও বলেছি। তাদের থাকার জায়গার ব্যবস্থা করেছি। তারা যেন আমার সঙ্গে প্রতি সপ্তাহে একবার দেখা করতে পারে সেই কথাও বলেছি।
কিন্তু ওরা আমার অফিসে আসার পর দেখলাম, ওদের সঙ্গে আপন মামা-খালা রয়েছেন। তারা রাজীবের দুই ভাইকে বর্তমানে যেখানে আছে, সেখানে রেখেই পড়াশোনা করাতে চান।
তাই আমিও ভাবলাম, আপন কোনো মানুষের কাছাকাছি থাকলে তারাও হয়তো ভালো থাকবে। মানসিকভাবে শান্তি পাবে। তাই তাদের শর্ত মেনে যেখানে আছে সেখানেই পড়াশোনা ও ভরণপোষণের দায়িত্ব নিলাম।’
অনন্ত আরও বলেন, ‘সেদিন আমার অফিসের কর্মকর্তা মুফতি রুহুল আমিন। তাদের সামনে ডেকে সব দায়িত্ব বুঝিয়ে দিলাম। মুফতি সাহেবকে মাদ্রাসায় গিয়ে তাদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নিয়ে সব দায়িত্ব মাদ্রাসার প্রিন্সিপালকে বুঝিয়ে দিতে বলেছি। আমার লোকজন সেটি করেছেও।
ওইদিন আমার অফিস থেকে বের হওয়ার সময় আমি এমনিতেই ছেলে দুটির জন্য কিছু কিনে দিতে ১০ হাজার টাকা দিয়েছি। যদিও আলোচনা চলাকালীন রাজীবের খালা আমাকে বলেছিল ছেলে দুটিকে তাদের তত্বাবধানে আলাদা বাসায় রাখতে চান। কিন্তু তাতে আমি রাজি হইনি।
কারণ ওরা আগে থেকেই মাদ্রাসার হোস্টেলে থাকত। হোস্টেলে ছাত্রদের পড়াশোনার বিষয়ে শিক্ষকরা নিয়মিত খোঁজখবর নেন। সেখানে থাকলে লেখাপড়াও ভালো হবে। তাই বাসায় রাখার পক্ষে আমি ছিলাম না। তা ছাড়া আমি তাদের সব দায়িত্ব নিব বলেছি, কিন্তু তার খালা কিংবা মামাদের কোনো টাকা-পয়সা দেব সেটি বলিনি। কথা অনুযায়ী দায়িত্বও নিয়েছি।
আমার দায়িত্ব নেয়ার পরও শুনেছি ছেলে দুটিকে নিয়ে তার খালা ও মামা আরও অন্যান্য জায়গায় যাচ্ছেন সাহায্যের জন্য। তাতেও আমি নিষেধ করিনি। বরং এটিও বলেছি, আমি তো সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিলাম, তার পরও যদি কেউ তাদের নগদ সাহায্য করতে চায় তা হলে দুই ছেলের নামে দুটো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট করে সেখানে জমা করে রাখতে। ভবিষ্যতে তাদের কাজে লাগবে। এসব কিছুর পরও তারা কেন অভিযোগ করছেন সেটি বোধগম্য নয়।’
এজেআই গ্রুপ সূত্রে জানা গেছে, ছেলে দুটির দায়িত্ব নেয়ার পর গ্রুপের কর্মকর্তা মুফতি রুহুল আমিন রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে অবস্থিত তামিরুল মিল্লাত মাদ্রাসায় গিয়ে তাদের খোঁজখবর নিয়েছেন। প্রিন্সিপালের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন, ওই দুই ভাই মূলত মাদ্রাসার এতিম কোটায় পড়াশোনা করছেন। তাদের খুব বেশি খরচ লাগে না।
এর পর অনন্তর অনুরোধে তাদের এতিম কোটা থেকে সাধারণ কোটায় নিয়ে আসেন প্রিন্সিপাল। সাধারণ কোটায় থেকে পড়াশোনার জন্য মাসিক যে খরচ লাগবে সেটিও পরিশোধ করেন।
এভাবে প্রতি মাসে তাদের পড়াশোনা ও ভরণপোষণের সব খরচ অফিসিয়ালি প্রিন্সিপালের কাছে পাঠিয়ে দেয়া হবে বলে জানান। তা ছাড়া ছেলেদের জন্য আরও কিছু যদি প্রয়োজন হয় তা হলে সেটি প্রিন্সিপালের কাছে চাইলেই তারা পাবে বলে জানানো হয়।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন