রাষ্ট্রদূতকে তলব, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বন্ধে পদক্ষেপের পরামর্শ

রাখাইন রাজ্যে সর্বশেষ সহিংসতার জেরে বাংলাদেশে নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বন্ধে মিয়ানমারকে পদক্ষেপ নিতে বলেছে বাংলাদেশ। শনিবার দুপুরে ঢাকায় মিয়ানমারের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স অং মিন্টকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে বাংলাদেশের এ অবস্থানের কথা জানানো হয়।

মিয়ানমারের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স এদিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয়) মাহবুব জামানের সঙ্গে দেখা করেন। আলোচনার পর বিকেলে মাহবুব উজ জামান প্রথম আলোকে এসব তথ্য জানান।

আলোচনায় উপস্থিত দুই কূটনীতিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাখাইনে সংঘর্ষে বেশ কিছু লোকজন হতাহত হওয়ার পর সেখানকার মুসলিম সংখ্যালঘুরা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে। তাই উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সেখানকার বেসামরিক লোকজনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে মিয়ানমারের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত সেটা অং মিন্টকে বলা হয়েছে। তা ছাড়া আলোচনার মাধ্যমে সেখানকার সমস্যার সমাধানের বিষয়টিও তাঁকে বলা হয়েছে। সমস্যা যেহেতু মিয়ানমারে, তাই তাঁদেরই এর সমাধান করতে হবে। সেই সঙ্গে লোকজনের বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ বন্ধে তাঁদের মিয়ানমারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে বলেছে বাংলাদেশ।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সীমান্তচৌকিতে ‘রোহিঙ্গা জঙ্গিদের’ হামলার জেরে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যসহ ৮৯ জন নিহত হয়েছে। মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ১২ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য এবং অন্য ৭৭ জন জঙ্গি। মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্যটিতে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে মুসলিম বিদ্রোহীদের সংঘর্ষের ফলে প্রাণ বাঁচাতে বিপুল হারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের আশঙ্কা করা হচ্ছে। রোববার বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) ১৪৬ জন রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠিয়েছে।

গত অক্টোবরে রাখাইনের সীমান্তচৌকিতে সন্ত্রাসী হামলার পর সশস্ত্র বাহিনী ব্যাপক নিধনযজ্ঞ শুরু করলে এ বছরের জুলাই পর্যন্ত প্রায় ৮৭ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে।

কোস্টগার্ড ও বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের ২০৮ কিলোমিটার স্থল ও ৬৩ কিলোমিটার জলসীমানা রয়েছে। গত দুই দিনে টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে ২১৯ জন রোহিঙ্গাকে আটক করে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

বাংলাদেশে এখন রোহিঙ্গা আছে প্রায় ৪ লাখ

১৯৯২: বাংলাদেশে এসেছিল ২ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গা

১৯৯৩-৯৭: মিয়ানমারে ফিরে যায় আড়াই লাখ

২০১২: সাম্প্রদায়িক হানাহানির পর ফের অনুপ্রবেশ

২০১৬: সীমান্তচৌকিতে হামলার পর এসেছে ৮৭ হাজার