বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ বলেছেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে গুরুতর অসুস্থ। তিনি হাত-পা নাড়াতে পারেন না, হাঁটাচলা করতে মারাত্মক অসুবিধা হয়। গুরুতর অসুস্থতার কারণে আদালতে যেতে পারবেন না, বেগম জিয়া সে কথাটিই বলেছেন। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষ জোর করে আদালতকে ব্যবহার করে বিচারকার্য ছাড়াই রায় দেয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে।’

বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘এটি সম্পূর্ণভাবে ন্যায় বিচারের পরিপন্হী, অমানবিক ও মানবাধিকার লঙ্ঘন। প্রতিহিংসার বিচার চরিতার্থ করতেই তাড়াহুড়ো করার তাগিদ দেয়া হচ্ছে। রাষ্ট্রপক্ষের এ চাপ সরকারের নির্দেশেই হচ্ছে।’

রিজভী বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন গুরুতর অসুস্থ; সে কথাটি আদালতকে তিনি বলেছেন। কিন্তু আদালত তো তার চিকিৎসার ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা দিলেন না। সেই আদালত সরকারের হুকুমের বাইরে যেতে পারবেন কি না সেটি নিয়ে জনগণ সন্দেহ পোষণ করে। যেখানে দেশের প্রধান বিচারপতিকে বন্দুকের নলের মুখে দেশ ছাড়তে হয়, সেখানে নিম্ন আদালত সরকারের চাপ প্রতিহত করে ন্যায় বিচার করতে পারবেন কি? এখনও পর্যন্ত সেই দৃষ্টান্ত আমরা দেখিনি।’

বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘পোলিও টিকা খাওয়ানোর একটি শ্লোগান আমরা অনেকদিন যাবৎ শুনে এসেছি বাদ যাবে না একটি শিশু। এখন সরকার এ শ্লোগানটি ভিন্ন অর্থে প্রয়োগ করছে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর। অর্থাৎ, মামলা-হামলায় বাদ যাবে না একটি বিএনপি নেতাকর্মীও। দেশে এখন মানুষ নিজের ছায়াকেও ভয় পাচ্ছে। বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মী সমর্থকদের ছাঁকনি দিয়ে ধরা হচ্ছে। এ দেশে বিদেশি মিশনের কূটনীতিকদেরও নিরাপত্তা নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী সরকার ভীরু ও কাপুরুষ, তাদের কোনো সাহস নেই। আছে শুধু ভয় ও আশঙ্কা। যদি সাহস থাকতো তাহলে প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ সুগম করার জন্য নির্দলীয় সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতেন। যেকোনো মুহূর্তে পিছলে যাওয়ার ভয়ে তারা পুলিশের ওপর নির্ভর করছে। তবে জনগণ মনের ক্ষোভ চেপে রাখতে ধৈর্য হারিয়েছে, সর্বত্র প্রতিবাদের ধ্বণী উচ্চারিত হচ্ছে। যেকোনো মুহূর্তে ধেয়ে আসা জনগণের ঘুর্ণিঝড় রুদ্ররুপ ধারণ করবে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে জনবিস্ফোরণ ঠেকানো যাবে না।’

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, সহ-দফতর সম্পাদক মো. মুনির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।