‘রাষ্ট্রের গোপনীয় নথি প্রকাশ করতে পারবেন না সাংবাদিকরা’
রাষ্ট্রের যেসব নথিতে ‘গোপনীয়’ বা ‘অতিগোপনীয়’ লেখা থাকবে, সেগুলো সাংবাদিকরা প্রকাশ করতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তবে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে কারো দুর্নীতি বা অনিয়মের সংবাদ প্রকাশ করা যাবে বলেও জানান তিনি।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে এক নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
আইসিটি আইনের ৫৭ ধারা বিলুপ্তির বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘কথা রেখেছি। কথা দিয়েছিলাম যে আইসিটি অ্যাক্টের ৫৭ ধারা থাকবে না। কেননা, এই ধারা ছিল অস্পষ্ট। মনে হচ্ছিল যেন এই ধারাতেই পৃথিবীর সব অপরাধ সন্নিহিত। ২০০৬ সালে করা এ আইনের ৫৭ ধারাটি সত্যিকার অর্থেই যেন সাংবাদিকদের জন্য হয়রানিমূলক ও নিবর্তনমূলক। এ কারণে আমি সাংবাদিকদের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে বলেছিলাম যে এই ধারা থাকবে না। এখন ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট সাংবাদিকদের জন্য হয়রানিমূলক নয়। অনেক স্বচ্ছতার সঙ্গে যাচাই-বাছাই করে এই আইনের খসড়া তৈরি করা হয়েছে।’
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির যুগের জন্য অত্যন্ত সুন্দর আইন বলে উল্লেখ করে আনিসুল হক বলেন, ‘আইনের ১৭ থেকে ৩৬ দফা পর্যন্ত যে ধারাগুলো আছে, সেগুলো বিস্তারিতভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। এখানে কোনো অস্পষ্টতা নেই। দণ্ডবিধিতেও এই অপরাধগুলোর প্রতিকারের ব্যবস্থা রয়েছে।’
আইনটির ৩২ ধারায় গোপনীয় নথি প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে সাংবাদিকদের হাত-পা বাঁধা হলো কি না জানতে চান উপস্থিত সাংবাদিকরা। তাঁরা জানতে চান, অনেক সময় সোর্সের কাছ থেকে নথি সংগ্রহ করে গুরুত্বপূর্ণ খবর প্রকাশ করেন তাঁরা। এসব ক্ষেত্রে এখন কী হবে?
জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘নথি সংগ্রহ করে সংবাদ প্রকাশ করা যাবে। কিন্তু যেসব নথিতে গোপনীয় বা অতিগোপনীয় লেখা থাকবে, সেগুলো রাষ্ট্রের নিরাপত্তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। এ ধরনের নথি খোয়া যাওয়া বা যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া গোপনে সংগ্রহ করা চৌর্যবৃত্তির শামিল। চৌর্যবৃত্তিটিই এখানে নিষেধ করা হয়েছে। তবে কেউ যদি গোপন তথ্যের ভিত্তিতে কারো দুর্নীতি প্রকাশ করে, অনিয়ম প্রকাশ করে সেটা করা যাবে।’
আইনের এই ধারাটি নিয়ে সাংবাদিকদের অহেতুক ভীতির কোনো কারণ নেই বলেও মন্তব্য করেন মন্ত্রী।
বঙ্গবন্ধুর সমালোচনা করা হলে সাজার বিষয়টি নিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘অনেকেই আছেন মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। মুক্তিযুক্ত, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও স্বাধীনতার স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মর্যাদা নিয়ে কেউ যেন অহেতুক বিতর্ক বা অমর্যাদাকর কিছু না বলে, সে জন্যই ধারাটি সন্নিবেশিত করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা একটি মীমাংসিত বিষয়। এ নিয়ে প্রশ্ন করলেও তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।’
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন