রিয়ালকে বিদায় করে ফাইনালে চেলসি
মাঠের খেলা কখনও পরিসংখ্যান বোঝে না- যা আরও একবার প্রমাণিত হলো উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনাল ম্যাচে। একদিকে ইতিহাসের সর্বোচ্চ ১৩ বারের চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মদ্রিদ, যারা কি-না তিন মৌসুম আগেও পাঁচ বছরে জিতেছে চারটি শিরোপা। অন্যদিকে মাত্র একবারের চ্যাম্পিয়ন চেলসি।
এ ম্যাচে স্বাভাবিকভাবেই ফেবারিট ছিল স্পেনের জায়ান্ট ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদ। তবে নিজেদের সাম্প্রতিক ফর্ম ও রিয়ালের ইনজুরিপ্রবণতা আশা বাঁচিয়ে রেখেছিল চেলসিরও। সেই আত্মবিশ্বাস থেকেই সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে রিয়ালকে রীতিমতো উড়িয়েই দিয়েছে থমাস টুখেলের শিষ্যরা।
রিয়ালের মাঠে খেলা প্রথম লেগের ম্যাচে ১-১ গোলে ড্র করেছিল চেলসি। আর বুধবার রাতে নিজেদের ঘরের মাঠে রিয়ালকে হারিয়েছে ২-০ গোলে। দুই লেগ মিলে ৩-১ গোলে এগিয়ে থেকে নয় বছর পর চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে উঠেছে চেলসি।
দ্বিতীয় লেগের ম্যাচটিতে আরও ভরাডুবি হতে পারত রিয়ালের। তাদের গোলরক্ষক থিবো কর্তোয়ার অবিশ্বাস্য ক্ষিপ্রতা, চেলসির ফরোয়ার্ড লাইনের খেলোয়াড়দের ব্যর্থতা ও দুর্ভাগ্যের কারণে অন্তত তিনটি নিশ্চিত গোল পায়নি স্বাগতিক ক্লাবটি।
স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে ম্যাচের সিংহভাগ সময় বলের দখল ছিল রিয়ালেরই পায়ে। কিন্তু মাঝমাঠে বল দেয়া-নেয়া করা ছাড়া তেমন বিশেষ কোনো নৈপুণ্য দেখাতে পারেননি টনি ক্রুস, ক্যাসেমিরোরা। অন্যদিকে সুযোগের সদ্ব্যবহার করেছেন এনগোলো কান্তে। যখনই বল পেয়েছেন, সতীর্থদের দিয়েছেন দুর্দান্ত সব পাস।
ম্যাচের দশ মিনিটের মাথায় প্রথম শট অবশ্য নিয়েছিল রিয়ালই। কিন্তু সেটি কাজে লাগেনি। এর ৮ মিনিট পর প্রথমবারের মতো বল জালে জড়ান টিমো ওয়ের্নার। কিন্তু অফসাইডের কারণে বাতিল হয়ে যায় গোল। আর ২৬ মিনিটের সময় করিম বেনজেমার শট ঠেকান চেলসি গোলরক্ষক এডুয়ার্ড মেন্ডি।
পাল্টা আক্রমণে দুই মিনিট পরই লিড নেয় চেলসি। ওয়েরনারের সঙ্গে বল দেয়া-নেয়া করে ডি-বক্সে থাকা কাই হাভার্টজের উদ্দেশ্যে বাড়ান কান্তে। কিন্তু সেই বল থেকে নেয়া হাভার্টজের শট বাধা পায় পোস্টে। তবে ফিরতি বল খালি বারে ঢোকাতে ভুল করেননি টিমো ওয়ের্নার।
প্রথমার্ধেই আরও অন্তত দুইটি গোল হজম করতে পারত রিয়াল মাদ্রিদ। ছন্নছাড়া মাঝমাঠ ও রক্ষণের মাঝে উজ্জ্বল ব্যতিক্রম ছিলেন গোলরক্ষক কর্তোয়া। তিনি যেন একাই বাঁচিয়ে রাখেন দলের আশা। কিন্তু আক্রমণভাগের কেউই তেমন সুযোগ তৈরি করতে পারেননি।
এক গোলের লিডেই ম্যাচ জেতার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিল চেলসি। ম্যাচ শেষ হওয়ার মিনিট পাঁচেক আগে দ্বিতীয় গোলটি করেন ম্যাসন মাউন্ট। এবারও গোলের উৎস কান্তে। তিনি প্রথমে বল কেড়ে নেন নাচোর কাছ থেকে, এগিয়ে দেন পুলিসিচের উদ্দেশ্যে। পরে পুলিসিচের কাটব্যাক থেকে জালের ঠিকানা খুঁজে নেন মাউন্ট।
চেলসির জয়ে এখন ফাইনালে দেখা যাবে অল ইংলিশ ক্লাব লড়াই। কেননা মঙ্গলবার রাতে পিএসজিকে বিদায় করে প্রথম দল হিসেবে ফাইনালে উঠে গেছে ইংল্যান্ডের আরেক ক্লাব ম্যানচেস্টার সিটি। আগামী ২৯ মে তুরস্কের ইস্তানবুলে ফাইনালে লড়বে এ দুই দল।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন