রেইনট্রির রুম ভাড়া নিয়েছিল দুইজন, অন্যরা কেন ঢুকল?

মানবাধিকার কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য ও রেইনট্রিতে ঘটে যাওয়া ঘটনার তদন্ত কমিটির প্রধান মো নজরুল ইসলাম বলেছেন, রেইনট্রির কর্তৃপক্ষ হাজির হয়েছেন। তারা তাদের মতো করে আমাদের প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন। কী প্রশ্ন করা হয়েছে তার জবাবে তিনি বলেন, সেদিন কীভাবে দুজন রুম ভাড়া দিয়ে অন্যরা কেন প্রবেশ করেছে এবং অস্ত্র নিয়ে প্রবেশ করেছিল কি না সেটির ব্যাপারে তারা তাদের মতো করে উত্তর দিয়েছে। তবে তারা বলেছে অস্ত্র ডেস্কে রেখে গিয়েছিল। আরো অনেক প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। সেগুলো তদন্ত শেষ হলে প্রকাশ করা হবে।

রেইনট্রির কর্তৃপক্ষ বলেছেন তাদেরও মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে। কারণ হিসেবে বলেছেন তাদের অনেক কর্মকর্তা নানানভাবে লাঞ্চনার শিকার হচ্ছে। তাই সেই দিকে নজর দেওয়ার জন্য মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত কমিটির কাছে বক্তব্য রেখেছেন।

পুলিশ কেন অাসেনি সেই ব্যাপারে তদন্ত কমিটির প্রধান বলেন, পুলিশ অাগামী ৪ জুন পর্যন্ত লিখিত সময় চেয়েছেন। জুনের ৪ তারিখ তারা অামাদের কাছে অাসবে। অাসামি ও বাদীদের সাথে তদন্ত কমিটি কোন কথা বলবে কিনা সে ব্যাপারে বলেন, অাসামি ও বাদীর সাথে কথা বলা হবে তবে কখন হবে তা সঠিক করে বলা যাচ্ছে না। অার ৪ জুনের পর কমিটির তদন্তের রিপোর্ট প্রকাশ করবে বলেও জানান নজরুল ইসলাম।

হোটেল দুই তরুণী ধর্ষণের ঘটনায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের গঠিত তদন্ত কমিটির জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হয়েছিলেন হোটেলের এমডি ও জিএম।

বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে কমিশনের কার্যালয়ে হাজির হন দ্য রেইন ট্রির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বি এ এইচ আদনান হারুন এবং মহাব্যবস্থাপক (জিএম) ফ্রাঙ্ক ফরগেট। তাদের সঙ্গে একজন আইনজীবীসহ আরও চারজন হাজির হয়েছিলেন। তবে অন্যদের ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তাদের দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে মানবাধিকার কমিশন।

রেইনট্রির এমডি বলেন, ‘এখানে ( হোটেল) মানবাধিকার লঙ্ঘনের কোনো ঘটনা ঘটলে আমরাও শাস্তি চাইছি। সবসময় আমরা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীতে সহায়তা করে যাচ্ছি।’

গত ২৩ মে এক চিঠির মাধ্যমে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মানবাধিকার কমিশন কার্যালয়ে তলব করে তদন্ত কমিটি। গত ২৮ মার্চ রাজধানীর বনানীতে ‘দ্য রেইন ট্রি’ হোটেলে সাফাত আহমেদ নামে এক বন্ধুর জন্মদিনে যোগ দিতে গিয়ে অপরাপর বন্ধুদের সহায়তায় ধর্ষণের শিকার হন ওই দুই তরুণী। ওই ঘটনার ৪০ দিন পর গত ৬ মে সন্ধ্যায় বনানী থানায় পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেন তারা।

মামলার এজাহারভুক্ত পাঁচ আসামি হলেন- সাফাত আহমেদ, তার বন্ধু সাদমান সাকিফ ও নাঈম আশরাফ, সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল ও তার দেহরক্ষী আবুল কালাম আজাদ (রহমত আলী)। আসামিরা সবাই পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন।

এদিকে ধর্ষণের ঘটনায় রেইন ট্রি হোটেল কর্তৃপক্ষ কিংবা বনানী থানা পুলিশের মামলা নেয়ার ক্ষেত্রে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে কি না তা জানতে পৃথক কমিটি করা হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য নজরুল ইসলামকে আহ্বায়ক করে গঠিত ৫ সদস্যের তথ্যানুসন্ধান কমিটিতে আছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের অবৈতনিক সদস্য নুরুন নাহার ওসমানী, এনামুল হক চৌধুরী ও পরিচালক শরীফ উদ্দীন। সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করছেন সহকারী পরিচালক এম রবিউল ইসলাম।