রেল যোগাযোগসহ একতরফাভাবে ভারতকে সব সুবিধা দিয়ে বাংলাদেশের স্বার্থ ক্ষুন্ন

বিএনপির অবস্থান ভারতের বিরুদ্ধে নয়, শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বিএনপি সব সময় সোচ্চার বলেও দাবি করেন তিনি।

মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

প্রধানমন্ত্রীর সম্প্রতি ভারত সফরে দেশটির সঙ্গে হওয়া সকল চুক্তি বিএনপি প্রত্যাখ্যান করেছে জানিয়ে ফখরুল বলেন আরও বলেন, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে ভারতের সঙ্গে দুটি চুক্তি ৫টি নতুন সমঝোতা স্বারক ও ৩টি চুক্তি নবায়নসহ ১০টি চুক্তি সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষর হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। সম্পাদিত চুক্তিগুলোতে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কাও প্রকাশ করছি। তিস্তাসহ অভিন্ন নদীগুলোর পানি বন্টনের কোনো চুক্তি না করা, সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যা বন্ধ না করা, একতরফাভাবে ভারতকে সব সুবিধা প্রদান করে বাংলাদেশের স্বার্থ ব্যাপকভাবে ক্ষুন্ন হয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব জানান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আন্দোলন গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেই লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কর্মসূচি প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ায়ার অবদান, সংগ্রাম ও আত্মত্যাগ সাম্প্রতিক গণতান্ত্রিক বিশ্বে অতুলনীয়। বেগম খালেদা জিয়াকে পরিকল্পিতভাবে মিথ্যা মামলায় সাজা প্রদান করে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে এই হীন চক্রান্ত করছে অবৈধ সরকার। শুধু মাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে দেশনেত্রীকে বন্দি করে রাখা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ বে-আইনী এবং সংবিধান বিরোধী। এই মামলায় জামিন পাওয়া তার সাংবিধানিক অধিকার।

ফখরুল বলেন, বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘদিনযাবৎ বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছেন। চিকিৎসকেরা তার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে প্রেরণের সুপারিশ করেছেন। দলের পক্ষ থেকে তাকে মুক্তি দিয়ে বিদেশে প্রেরণের দাবি জানানো হয়েছে। এমন কি পরিবারের পক্ষ থেকে দুই বার তার বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি চাওয়া হয়েছে। কিন্তু অবৈধ সরকার তাদের ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার লক্ষ্যে দেশনেত্রীকে হত্যার উদ্দেশ্যে উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করেছে অনতিবিলম্বে দেশনেত্রীর নিঃশর্ত মুক্তি দাবি জানাচ্ছি।

মির্জা ফখরুল বলেন, কানেকটিভিটির নামে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের একপ্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত পর্যন্ত রেল যোগাযোগ, ডাক ও টেলিযোগাযোগের সমঝোতা, কৌশলগত ও অপারেশনাল খাতে সামরিক শিক্ষা সহযোগীতা, ঔষধ সংক্রান্ত সমঝোতা, বাংলাদেশের জলসীমায় ভারতের অবাধ বিচরণ এবং ভারতের ইনস্পেস ও বাংলাদেশের ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সমঝোতা, রেলমন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমঝোতা, সমুদ্র বিষয়ক গবেষণায় দুই দেশের সমঝোতা ইত্যাদি সমঝোতাগুলোতে বাংলাদেশের স্বার্থ ক্ষুন্ন হয়েছে। ভারতকে সকল প্রকার সুবিধা প্রদানের বিনিময়ে ভারতের কাছে থেকে বাংলাদেশের কোনো স্বার্থ আদায় করতে শেখ হাসিনা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছেন এবং এটা ম্যান্ডেট বিহীন অবৈধ সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতি বহিঃপ্রকাশ।

তিনি বলেন, এই অবৈধ সরকার পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশকে ভারতের ওপর নির্ভরশীল করে ফেলছে। এই চুক্তিগুলোকে বাংলাদেশের স্বার্থ বিরোধী হওয়ায় বিএনপি এই চুক্তিগুলো প্রত্যাখান করছে। এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সম্বলিত সংবাদ সম্মেলন আগামী ২৮ জুন বিকাল ৩টা অনুষ্ঠিত হবে।