রেহাই পেলো না ১০ দিনের রোহিঙ্গা শিশুটিও
জন্ম নিয়েই হয়েছে শরণার্থী। দেখেছে নৃশংসতা ও বর্বরতা। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ধ্বংসজ্ঞ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে ১০ দিনের অবুঝ শিশুটিকেও রেহাই দেয়নি তারা। জাতিগত নির্মূল অভিযানের অংশ হিসেবে পোড়ামাটির নীতি পুড়িয়ে দিয়েছে ছোট্ট শিশু আরমানের শরীরও।
যন্ত্রণা নিয়ে এখন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে লড়াই করছে সে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলছেন চিকিৎসকরা। এ ছাড়া শিশু ওয়ার্ডে রয়েছে গুলিবিদ্ধ ৫ বছরের আরেক শিশু রহমত উল্লাহ।
বর্বরতার জনপদ রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বর্বর ও নিষ্ঠুরতা থেকে রেহাই পায়নি ছোট্ট এই রোহিঙ্গা শিশুটিও। আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে ছোট্ট তুলতুলে নিষ্পাপ দেহটিকে।
শিশুটির বাবা বলেন, সেনাবাহিনীর সদস্যরা আগুন জ্বালিয়ে দেয়, কোনোমতে বাচ্চার প্রাণ নিয়ে এদেশে এসেছি।
শরীরে বড় ক্ষত নিয়ে হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটের বিছানায় যন্ত্রণায় ছটফট করছে সাত-আট দিন ধরে শিশুটি। মা-বাবার কোলেও শান্তি নেই তার। চিকিৎসকদের চেষ্টার কোন কমতি নেই শিশুটিকে সুস্থ করতে।
চমেক বার্ণ ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডাক্তার মোহাম্মদ এস খালেদ বলেন, বাচ্চাটার যে মূল সমস্যা সেটি হলো তার শরীরে রক্ত নেই। পুড়ে যাওয়ার কারণে অনেক সংক্রামক হয়ে গেছে। আপরা সঠিক এন্টিবায়োটিক দিচ্ছি। আমরা চাচ্ছি বাচ্চাটা সুস্থ্য হয়ে উঠুক।
হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে পেটে গুলিবিদ্ধ আরেক রোহিঙ্গা শিশু রহমত উল্লাহ। তার বাবা জানান, মৃত্যুর হাত থেকে ফিরে আসা মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্মম নির্যাতনের কথা।
রোহিঙ্গা শিশু রহমত উল্লাহ’র বাবা বলেন, সেনাবাহিনী ও পুলিশ গুলি করেছে। সীমান্ত পার হয়ে আমার বাচ্চাকে নিয়ে চট্টগ্রামে মেডিকেলে এনেছি। আল্লাহর রহমাতে চিকিৎসায় ভালো হবে।
চমেক পেডিয়াট্রিক সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডাক্তার মোহাম্মদ মিনহাজ উদ্দীন সাজিদ বলেন, ডান পাশ দিয়ে গুলি লেগে বাম পাশ দিয়ে বেরিয়ে গেছে। বাচ্চাটির ড্রেসিং চলছে, এন্টিবায়োটিক দিচ্ছি। এখন সে সুস্থ্যর দিকে।
জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসের তথ্য মতে, রাখাইনে সেনাবাহিনীর হত্যাযজ্ঞের পর প্রাণ ভয়ে পালিয়ে আসা শরণার্থীদের ৬০ ভাগই শিশু। অভিভাবকহারা হয়েছে প্রায় ১৩’শো। আর নৌকা ডুবিতে মারা গেছে ১শ ৪০ জন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন