রোজার পরে ঈদে খেতে হবে সাবধানে
ঈদ মানেই আনন্দ, ঈদ মানেই ঘরে ঘরে মজাদার রান্না আর আয়েশ করে পেট ভরে নানা পদের খাবার খাওয়া।
ঈদে শুধু নিজের বাড়িতে নয়, বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়স্বজনদের বাড়িতেও খেতে হয় নানান পদের সব রান্না। তবে ঈদে গা ছেড়ে দিয়ে শুধু মজাদার খাবার খেলেই চলবে না, নিজের দিকে একটু বিশেষ নজর দিতে হবে।
কারণ সারা মাসে রোজা রেখে হঠাৎ তেল মসলাযুক্ত খাবার আপনাকে অসুস্থ করে দিতে পারে। এতে আপনার ঈদ আনন্দ মাটি হয়ে যাবে।
তাই ঈদে কী খাচ্ছেন, কতটুকু খাচ্ছেন তার সঠিক পরিমাণ ও খাদ্যের ক্যালরি জানাটা জরুরি। এছাড়া তৈলাক্ত বা চর্বিযুক্ত খাবার বেশি খাওয়া হলে পেটের ওপর চাপ পড়ে। এতে পেট ফাঁপা, পেট জ্বালা, ব্যথা, বমি ও পেট খারাপ হতে পারে।
এ ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছেন তেঁজগাও ইমপালস হাসপাতালের মেডিসিন অ্যান্ড ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ ডা. ফাহিম আহমেদ রুপম-
ঈদের দিনে খাবারের তালিকায় স্বাভাবিকভাবেই মিষ্টিজাতীয় খাবার বেশি থাকি। এছাড়া পোলাও, মুরগি, গরু বা খাসির মাংস, কাবাব ইত্যাদি ঝাল খাবারও খাওয়া হয়। যাদের বয়স কম এবং শারীরিক কোনো সমস্যা নেই, তারা নিজের পছন্দ মতো সবই খেতে পারেন।
তবে বড়দের একটু বেছে সাবধানে খেতে হবে। বিশেষ করে উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও হৃদরোগীরা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খাবার খেলে ভালো হয়।
* সারা মাস রোজা রেখে ঈদে একসঙ্গে প্রচুর পরিমাণ তৈলাক্ত বা চর্বিযুক্ত খাবার খেয়ে তা হজম করতে পারেন না। ফলে পেট ফাঁপে, জ্বালাপোড়া করে, ব্যথা করে, বার বার পায়খানা হয়।
* ঈদে খাবার খেতে মানা নেই, কিন্তু পরিমাণ বজায় রাখা জরুরি।
* ভাজাপোড়া ও চর্বিজাতীয় খাবারের পাশাপাশি ফলমূল বা ফলের রসজাতীয় খাবার বেশি করে খেতে হবে।
* রোজায় এক মাসের অনভ্যাসের কারণে হঠাৎ খুব বেশি ঝাল বা তৈলাক্ত বা ভাজাপোড়া খেলে অসুস্থতা বোধ হতে পারে। তাই সবার উচিত কম মসলাযুক্ত, কম তৈলাক্ত ও ভালোভাবে রান্না করা খাবার খাওয়া।
* যাদের আগে থেকে পেটের সমস্যা আছে, তাদের অতিরিক্ত ঝাল ও মসলাযুক্ত খাবার পরিহার করেই উত্তম।
* ডায়াবেটিক রোগীকে অবশ্যই মিষ্টিজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা, এসব খাবার একবেলাই খাওয়া উচিত, অন্যবেলা স্বাভাবিক খেতে হবে। রক্তে সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য এদিন একটু বেশি হাঁটাহাঁটি করতে পারেন। এছাড়া চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ডায়াবেটিসের ওষুধ বা ইনসুলিনের মাত্রা একটু বাড়িয়ে নিতে পারেন।
* কিডনির সমস্যা থাকলে আমিষজাতীয় খাদ্য, যেমন মাছ-মাংস অবশ্যই নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এগুলো দিনে দুই টুকরার বেশি খাওয়া যাবে না।
* যাদের রক্তে কোলস্টেরল বেশি বা উচ্চ রক্তচাপ আছে, অথবা হার্টের সমস্যা আছে অথবা যারা মুটিয়ে যাচ্ছেন, তাদের অবশ্যই তেল ও চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। আপনাদের ফল, ফলের রস, সালাদ ইত্যাদি বেশি করে খেতে হবে।
* ঈদের দিন সকালে ইসবগুলের ভুসি পানিতে মিশিয়ে খেলে পেট ভালো থাকবে।
* সকালে ঈদের নামাজে যাওয়ার আগে সেমাই-পায়েসের সঙ্গে ফলের রস খেতে পারেন। সঙ্গে প্রচুর পানি পান করবেন।
* ঈদের দিন দুপুর ও রাতে অবশ্যই সবজির একটি পদ রাখবেন।
* পেট ভরে খাবেন না, গোগ্রাসে না খেয়ে সময় নিয়ে চিবিয়ে খাবেন, খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পান করবেন না। প্রয়োজনে খাওয়ার একটু পরে পানি পান করুন।
* রাতে খাওয়ার পর পরই ঘুমাতে যাবেন না, কিছুক্ষণ হাঁটাচলা করুন, দু-তিনঘণ্টা পরে ঘুমাবেন।
* প্রচুর পানি পান করতে হবে, যাতে কোষ্ঠকাঠিন্য না হয়।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন