রোহিঙ্গা গণহত্যার প্রতিবাদে উত্তাল ফ্রান্স
মিয়ানমারে রোহিঙ্গা গণহত্যার প্রতিবাদে উত্তাল বিক্ষোভ-সমাবেশে প্রকম্পিত ফ্রান্সের আইফেল টাওয়ারের সামনের মানবাধিকার চত্বর।
শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল হতেই ফ্রান্সের বিভিন্ন শহর থেকে লোকজন জড়ো হতে শুরু করে এ চত্বরে। নির্ধারিত সময় দুপুর ২টা না বাজতেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় বিশাল চত্বরের পুরো জায়গা।
আয়োজকদের দাবি, কমপক্ষে ৩০টি দেশের ৫০টি সংগঠন এতে অংশ নিয়েছে। এদের বেশির ভাগের হাতে রোহিঙ্গাদের প্রতি সংহতি প্রকাশ সম্বলিত লেখা, নির্যাতনের সাম্প্রতিক ছবি, বিভিন্ন ব্যানার, ফেস্টুন, প্লাকার্ডের পাশাপাশি শান্তিতে নোবেল বিজয়ী বর্তমান মিয়ানমার সরকারের উপদেষ্টা অং সান সু চির বিকৃত ছবিও প্রদর্শন করা হয়। অনেকে সংহতি প্রকাশে নিজ নিজ দেশের পতাকা নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ যোগ দেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারসহ সার্বিকভাবে কালেক্টিভ হামেব এফআর ( Collectif HAMEB fr ) নামে একটি সংগঠন এ প্রতিবাদ বিক্ষোভ সমাবেশের প্রধান সমন্বয়কারীর ভূমিকা পালন করে।
এ ছাড়া অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, ডিগনিটি ইন্টারন্যাশনাল ওআরজি, ইউরোপিয়ান রোহিঙ্গা কাউন্সিল, ইনফো বিরমানি (INFO BIRMANIE), হিউম্যান রাইটস মিশন, বার্মিজ রোহিঙ্গা অ্যাসোসিয়েশন ইন ফ্রান্স (বিআরএএফ), ফ্রান্সের এমজিসি (MJC) পার্টির প্রেসিডেন্ট রাশিদ নেকাজ, ইউরোপিয়ান প্রবাসী বাংলা অ্যাসোসিয়েশন ফ্রান্স, বাংলাদেশ স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন ফ্রান্স, ফ্রান্স বিএনপিসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন সামাজিক, আঞ্চলিক সংগঠনগুলো অংশ নেয়।
চার ঘণ্টা ব্যাপী চলা এ বিক্ষোভ-সমাবেশে ছিলো প্রতিবাদমুখর স্লোগান। এর মাঝে মাঝে অনেকে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন।
বক্তারা বলেন, মিয়ানমার সরকার মানবাধিকারের সব রীতিনীতি লঙ্ঘন করেছে। একটি সরকারের গঠিত এ হত্যাযজ্ঞ মেনে নেওয়া যায় না।]
এর আগে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন চালাতো বুদ্ধ ধর্মীয় জঙ্গিরা। আর এবার তাদের সঙ্গে যৌথভাবে যুক্ত হয়েছে সরকার ও সেনাবাহিনী। তারা রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা, নির্যাতন, গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে ভস্ম ও দেশান্তরিত করছে। এ জাতিগত নিধন বন্ধে এ মুহূর্তেই জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক বিশ্বকে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। না হয় বিশ্বের কাছে এসব সংস্থা ও সংগঠনগুলোকে অসাড় বলে প্রমাণিত হবে।
তারা, রোহিঙ্গা গণহত্যার বিরুদ্ধে মিয়ানমার সরকারের এ হেন আচরণের তীব্র নিন্দা জানিয়ে এ মুহূর্তেই তা বন্ধের আহ্বান জানান। সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক বিশ্বকে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে এগিয়ে আসতে বলেন বক্তারা।
বিক্ষোভ-সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- ড. খোবায়েব, গ্যাব্রিয়েল, নরদিন, রাশিদ নেকাজ, কামিলী, নিকোলা ফ্রসেস, মাডাম লোনা, সেরাফিন, হারুন, আব্দুল মালেক ফরাজী, আব্দুল মান্নান আজাদ প্রমুখ।
এ সমাবেশের অনেকে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রতি বাংলাদেশের জনগণের ভালোবাসা সহযোগিতার প্রশংসা করেন এবং বাংলাদেশ সরকারকে তার যথাযথ ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।
এখানকার বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে সামির ও হেনরির নেতৃত্বে ৪০/৫০ জনের একটি গ্রুপ অদূরে থাকা মিয়ানমার দূতাবাসের সম্মুখে প্রায় ৩০ মিনিট বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। এ সময় সেখানে দেড় শতাধিক পুলিশসহ রাষ্ট্রের অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী উপস্থিত ছিলেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন