রোহিঙ্গা নিধনের ফল ভালো হবে না : জাতিসংঘ মহাসচিব

জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্থনি গুতেরেস মিয়ানমারকে সতর্ক করে বলেছেন, রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর জাতিগত নিধনের ফল ভালো হবে না।

অবিলম্বে তিনি রোহিঙ্গা সংখ্যালঘুদের ওপর চলা সহিংসতা বন্ধেরও দাবি জানান। খবর: আলজাজিরার।
গত ২৪ আগস্ট মধ্যরাতের পর থেকে বিগত ১১ দিনে রাখাইনে সহিংসতার মুখে প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও সীমান্ত বাহিনী বিজিপির সর্বশেষ অভিযানের পরিপ্রেক্ষিতে রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে এসেছে বিশাল এই জনস্রোত। মিয়ানমার সরকারের তথ্যেই, ৪ শতাধিক রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন। আর ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ২ হাজার ৬২৫টি।
এই পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, সহিংসতার এই দুষ্ট চক্রের ইতি টানার জন্য মিয়ানমার কর্তৃপক্ষকে সুচিন্তিত পদক্ষেপ নিতে হবে এবং রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও সহায়তা দিতে হবে।
তিনি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্যের কাছে একটি চিঠিতে অনুরোধ করেন, ‘এই সংকট আরও বৃদ্ধি পাওয়া ঠেকাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দায়িত্ব রয়েছে এবং তাদের সমন্বিত উদ্যোগ জরুরি।’
রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে আরেকটি বৈঠক হওয়ার কথা। তবে সর্বশেষ বৈঠকে কী হয়েছিল তা নিয়ে কোনো যৌথ বিবৃতি আসেনি। এজন্য দ্বিতীয় বৈঠকটি হবে বলে জানা গেছে।
গত ২৪ আগস্ট মধ্যরাতের পর কয়েকটি পুলিশ স্টেশন ও একটি সেনাক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের মুক্তিকামী সংগঠন আরসার হামলার পর মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও বিজিপি কড়া প্রতিক্রিয়া দেখানো শুরু করে। গ্রামের পর গ্রাম পুড়িয়ে ছারখার করে দেওয়া হয়।
মিয়ানমার সরকারের তরফ থেকেই স্বীকার করা হয়েছে, অন্তত ২ হাজার ৬২৫টি বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং ৪ শতাধিক রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন।
অবশ্য মিয়ানমারের অভিযোগ এগুলো করেছে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা। কিন্তু রাখাইন রাজ্য থেকে জীবন নিয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা বলছেন, মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও উগ্রবাদী বৌদ্ধ জনতা তাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দিচ্ছে এবং দেখামাত্র গুলি করছে।
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ রোহিঙ্গা পাওয়া গেছে। কয়েকজন আহতের হাত-পা কেটে ফেলে দিতে হয়েছে।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর চলা সহিংসতা দক্ষিণ এশিয়ায় একটি বড় মানবিক বিপর্যয় নিয়ে আসছে বলে অভিমত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও সংবাদমাধ্যমের।