রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের পাশে থাকবে ভারত
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশের পাশে থাকবে ভারত। দেশটির ঢাকাস্থ হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বাংলাদেশকে তার দেশের কূটনৈতিক ও মানবিক সমর্থনের কথা নিশ্চিত করেছেন। বুধবার রাজধানীর বারডেম হাসপাতাল অডিটরিয়ামে এক অনুষ্ঠানে এ কথা জানান তিনি। অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী উপস্থিত ছিলেন।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা প্রবেশে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে শ্রিংলা বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের পূর্ণ সহায়ক। আমরা কূটনৈতিক ও মানবিকভাবে অব্যাহতভাবে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়াব।’
তিনি বলেন, আমরা ইতোমধ্যে কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের জন্য কিছু ত্রাণ সামগ্রী পাঠিয়েছি, আরো পাঠাব।
এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচটি সদস্য রাষ্ট্র এবং ১০টি অস্থায়ী সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে ৯টি দেশের প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানেও রোহিঙ্গা ইস্যুতে ব্যাপক আলোচনা হয়। বাংলাদেশ সেখানে রোহিঙ্গা ইস্যুর শান্তিপূর্ণ সমাধান চায় বলে জানিয়েছে।
মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে দেশটির সেনাবাহিনীর অভিযানকে মানবতাবিরোধী অপরাধ আখ্যা দিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে হিউম্যান রাইটস্ ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। এজন্য আন্তর্জাতিক আদালতে তাদের বিচারও দাবি করেছে সংগঠনটি। যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠটির সর্বশেষ প্রতিবেদনে উঠে আসে মিয়ানমার সেনাবাহিনী কর্তৃক রোহিঙ্গাদের হত্যা-ধর্ষণসহ নিষ্ঠুরভাবে বিতাড়িত করার বিষয়টি।
এইচআরডব্লিউ’র মতে, মিয়ানমারের কাছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের দাবি করা উচিত যেন তাদের সাহায্যকারী সংস্থাগুলোকে রাখাইনে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় এবং ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করা যায়।
একইসঙ্গে বিষয়টিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে উত্থাপন করারও প্রস্তাব দেয় আন্তর্জাতিক এই মানবাধিকার সংগঠনটি।
এইচআরডব্লিউ’র গবেষণাতে বলা হয়, স্যাটেলাইটে তোলা ছবিতে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অপরাধ ও জোর করে রোহিঙ্গাদের বিতাড়িত করার দৃশ্য পাওয়া যায়।
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া চার লাখেরও বেশি শরণার্থীদের সঙ্গে কথা বলে রাখাইনে চলমান হত্যা, ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিষয়ে রোমহর্ষক তথ্য পাওয়া যায়। রোহিঙ্গাদের উপর মিয়ানমার সেনাবাহিনী যেটা চালাচ্ছে সেটা আন্তর্জাতিক আইনে জাতিগত নিধনের পর্যায়ে পড়ে বলে জানায় মানবাধিকার সংগঠনটি।
গত ২৫ আগস্ট উত্তর রাখাইনে কয়েকটি পুলিশ ফাঁড়ি ও সেনা ক্যাম্পে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের সংগঠন আরসা’র হামলার অভিযোগে রাখাইনে জাতিগত ‘শুদ্ধি অভিযান’ শুরু করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। এর ফলে প্রায় অর্ধেক রোহিঙ্গা রাখাইন থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে চলে যায়।
এই অভিযানে কমপক্ষে পাঁচ হাজার রোহিঙ্গা নিহত হন বলে জানায় মানধিকার সংগঠনগুলো। অসংখ্য নারী ও শিশু ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়।
এইচআরডব্লিউ তার প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করে, গত ২০১২ সালের পর থেকেই রাখাইনের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির উপর মানবতাবিরোধী অপরাধ করে আসছে মিয়ানমার সরকার।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন