রোহিঙ্গা হত্যাকাণ্ডের তদন্তে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির সেনাবাহিনীর হাতে রোহিঙ্গা গণহত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন ও উচ্ছেদের ঘটনা খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সেনা কর্তৃপক্ষ।
গত ২৫ আগস্ট থেকে পরিচালিত এই অভিযানে ‘জাতিগত নিধনের’ শিকার হয়ে সাড়ে পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা বাস্তুচ্যুত হলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সমালোচনার মুখে পড়া মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এই তদন্তের উদ্যোগ নিল।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় ‘দেশহীন জনগোষ্ঠীতে’ পরিণত হওয়া রোহিঙ্গাদের নির্যাতন ও উচ্ছেদের সময় সেনা সদস্যরা সামরিক ‘কোড অব কন্ড্রাক্ট’ মেনে চলেছিলেন কি-না বা বাহিনীর পক্ষ থেকে তাদের যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তা পালন করেছিলেন কি-না এসব বিষয়ই খুঁজে দেখবে লেফটেন্যান্ট জেনারেল আয়ে উইনের নেতৃত্বাধীন এই তদন্ত কমিটির সদস্যরা।
গত ২৫ আগস্ট রাখাইন রাজ্যের কয়েকটি পুলিশ ও সেনা ক্যাম্পে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা হামলা চালিয়েছে অজুহাতে সেখানে অভিযান শুরু করে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। অভিযান শুরুর পর থেকে রোহিঙ্গারা গণহত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতিন ও উচ্ছেদের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিচ্ছে। এখন পর্যন্ত প্রায় পাঁচ লাখ ৩৬ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। যাদের ষাট ভাগই শিশু। বিপদসঙ্কুল পথ পাড়ি দিয়ে প্রতিদিনই রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আসছে।
গতকাল শুক্রবার লেফটেন্যান্ট জেনারেল আয়ে উইন বলেন, বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ রাখাইন রাজ্যে নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গারা যেন ন্যায়বিচার পায় সেজন্য তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, তা আমরা খতিয়ে দেখছি। এ ক্ষেত্রে আমরা সামরিক সেনাদের আচরণ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছি।
তদন্তের সময় সেনাদের কী ধরনের প্রশ্ন করা হবে সে সম্পর্কে এক ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন সেনাবাহিনীর জ্যেষ্ঠ জেনারেল মিন অং হলেইং। তিনি বলেন, ‘তদন্তে সেনাদের প্রশ্ন করা হবে- আপনি কি সামরিক আইন মেনে চলেছেন? অভিযান চলার সময় আপনি কী আদেশ পুরোপুরি অনুসরণ করেছেন? এরপরই তদন্ত কমিটি এ বিষয়ে তথ্য তুলে ধরবে তদন্ত প্রতিবেদনে।’
তবে মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সেখানে ২০১৬ সাল থেকে তদন্ত করা জাতিসংঘের একটি প্যানেলকে এই তদন্ত কমিটিতে রাখতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছে মিয়ানমার।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন