রোহিঙ্গা হত্যায় মিয়ানমারের বিচারে জটিলতা
আন্তর্জাতিক চিকিৎসাসেবা সংস্থা মেডেসিনস স্যান্স ফ্রন্টিয়েরস (এমএসএফ)-এর তথ্যানুযায়ী গত আগস্ট মাসের ২৫ তারিখ থেকে সেপ্টেম্বর মাসের ২৪ তারিখ পর্যন্ত অন্তত ৬ হাজার ৭০০ রোহিঙ্গা মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সহিংসতার শিকার হয়ে মারা গেছে।
সংস্থাটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে রাখাইনে সহিংসতার জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মামলা করা যায় কি না- তা বিশ্লেষণ করেছেন বিবিসি’র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া প্রতিনিধি জোনাথন হেড।
এমএসএফ’এর হিসাবে উপরোক্ত সময়ের মধ্যে মিয়ানমারে ৭৩০ জন শিশুকে হত্যা করা হয়েছে।
সাংবাদিক ও গবেষকদের প্রতিবেদন বিশ্লেষণ ও শরণার্থীদের সাক্ষাৎকার পর্যালোচনা করলে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে- তা নিশ্চিত হওয়া যায়।
এমএসএফ’এর প্রতিবেদনের তথ্য পর্যালোচনা করে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নৃশংসতা সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যায়। প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে মামলা করার সম্ভাব্য সুযোগও থাকে।
তবে বাধা হচ্ছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের “রোম সনদ”, যা সংস্থাটির গঠনকালীন সময়ের মূল দলিল, সেটিতে মিয়ানমার কখনোই স্বাক্ষর করেনি। কাজেই আদালতের সহযোগিতা করতে তারা বাধ্য নয়।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মামলা নিতে হলে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্যের প্রত্যেকের অনুমতি প্রয়োজন। এখন পর্যন্ত চীন মিয়ানমার সরকার যেভাবে এই সঙ্কট মোকাবেলা করেছে, তাতে পূর্ণ সমর্থন দিয়ে এসেছে।
অন্যদিকে অভ্যন্তরীণ তদন্ত শেষে নভেম্বরে মিয়ানমার সেনাবাহিনী নিজেদের নির্দোষ দাবি করে। সাধারণ মানুষ হত্যা, গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়া, ধর্ষণ ও লুটপাটের অভিযোগ অস্বীকার করে তারা।
বিবিসি প্রতিনিধিদের পাওয়া তথ্যের সঙ্গে মিয়ানমার সরকারের বিবৃতির পার্থক্য রয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার প্রধান এটিকে “জাতিগত নিধনের উদাহরণ” হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
এমএসএফ’এর মেডিকেল ডিরেক্টর সিডনি ওয়ং বলেছেন, সহিংসতায় পরিবারের সদস্য হারানো মানুষের সংখ্যা আর সহিংসতার ধরনের বিচারে তাদের জরিপে উঠে আসা তথ্য রীতিমতো বিস্ময়কর।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন