লাখো মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত প্রধানমন্ত্রী
বিমানবন্দর থেকে গণভবন। প্রায় ১৪ কিলোমিটার এই সড়কের দুই পাশে তিল ধারণের জায়গা নেই। পুরো সড়কজুড়েই লোকে লোকারণ্য। চারিদিকে এক অন্যরকম আবহ। সড়কের দুই ধারে দাঁড়িয়ে থাকা প্রতিটি মানুষের মধ্যে উৎসবের আমেজ। জনতার ঢলে রাজপথ যেন জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। সড়কের দুই ধারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য অপেক্ষায় থাকা লাখো মানুষ দীর্ঘ এই পথের দুই ধারে দাঁড়িয়ে পুষ্পবৃষ্টি ছিটিয়ে, বাদ্য-বাজনার তালে স্লোগানে স্লোগানে বরণ করে নেন তাদের প্রিয় নেত্রীকে। গণসংবর্ধনায় অত্যাধুনিক সাউন্ড সিস্টেমের বাস-ট্রাকসহ কোন কিছুরই কমতি ছিল না।
জাতিসংঘের ৭২তম সাধারণ অধিবেশন শেষে দেশে ফেরার পর শনিবার এভাবেই লাখো মানুষের পুষ্পবৃষ্টি আর হৃদয় নিংড়ানো ভালবাসায় সিক্ত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া লাখো রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে তাদের সুরক্ষার বিষয়টি জাতিসংঘে তোলায় প্রধানমন্ত্রীকে শেখ হাসিনাকে এই সংবর্ধনা দিচ্ছে আওয়ামী লীগ ও ক্ষমতাসীনদের জোট ১৪ দল। বিমানবন্দর থেকে গণভবন পর্যন্ত সড়কের দুইপাশে নেতা-কর্মীরা ফুল আর ব্যানার-ফেস্টুন হাতে অবস্থান নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে গণসংবর্ধনা ও শুভেচ্ছা জানায়। এ সময় হাত নেড়ে প্রধানমন্ত্রী তাদের অভিবাদনের জবাব দেন।
প্রধানমন্ত্রীকে দেয়া সংবর্ধনা কর্মসূচিতে যোগ দিতে ভোর থেকেই ঢাকা ও এর আশপাশের জেলা থেকে বাস, ট্রাক ও ব্যক্তিগত যানে করে নেতাকর্মীরা প্রধানমন্ত্রীর ফেরার পথে অবস্থান নিতে থাকেন। ঢাকার বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা থেকে সড়ক ধরে মিছিল আসে প্রধানমন্ত্রীর আগমনের পথে। আটটার আগেই বিজয় সরণি, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনের সড়ক, জাহাঙ্গীর গেট, বনানী থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত সড়কের একটা বড় অংশ চলে যায় কর্মী-সমর্থকদের অধীনে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে ব্যানার ও ফেস্টুন স্থাপন করা হয়।
এর আগে সকাল ৯টা ২৫মিনিটে প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমানটি হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সেখানে দলের ও সরকারের পক্ষ থেকে তাঁকে ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানানো হয়। বিমানবন্দরে মন্ত্রিসভার সদস্য ও ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা ছাড়াও লেখক, শিল্পী, শিক্ষাবিদ, সংস্কৃতিকর্মী, ক্রীড়াবিদ ও ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
ফুলেল শুভেচ্ছা জানানোর পর প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য দেন। এরপর সরকারি বাসভবন গণভবনের উদ্দেশ্যে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জাতিসংঘের ৭২তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে গত ১৬ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১৭ সেপ্টেম্বর তিনি নিউইয়র্ক পৌঁছান। সাধারণ অধিবেশনে বক্তৃতা, গুরুত্বপূর্ণ সভায় অংশগ্রহণ ও কয়েকজন সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও তাদের ফেরত নিতে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে পাঁচ দফা প্রস্তাব দেন, যা ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়। জাতিসংঘের কর্মসূচি শেষে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে গত ২৫ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে শেখ হাসিনার পিত্তথলি অপসারণ করা হয়। কয়েকদিন বিশ্রাম নিয়ে ৩ অক্টোবর লন্ডনে যান তিনি। সেখান থেকে শুক্রবার দেশের পথে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন