লারমনিরহাটের হাতীবান্ধায় ওসিকে প্রত্যাহারে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা থানার ওসি মাহমুদুন-নবীকে প্রত্যাহারের ৭২ ঘণ্টা (তিন দিনের) আল্টিমেটাম দিয়েছেন উপজেলা বিএনপির কৃষকদলের নেতারাসহ এলাকাবাসীরা। প্রত্যাহার না হলে সড়ক পথ অবরোধ করে কঠোর আন্দোলনের হুমকী দিয়েছেন মানববন্ধনে অংশ নেয়া মানুষরা।

তাদের দাবি, ‘চাহিদা মতো টাকা না পেয়ে’ মামলায় অনেক নিরীহ মানুষকে জড়ানো হয়েছে, এমনকি ‘আওয়ামীলীগের মিছিল থেকে হামলার’ অভিযোগে দায়ের মামলাটিতে বিএনপির লোকজনকেও আসামি করা হয়েছে। তাই বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলাগুলোর সুষ্ঠু সমাধান না করা হয় তাহলে ৭২ ঘন্টা পর অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হবে।

সোমবার (১০ মার্চ) দুপুরে লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কের হাতিবান্ধা ফিলিং স্টেশনের সামনে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। এসময় ৩ শতাধিক মানুষ মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন। এছাড়াও মানববন্ধনে অংশ নিয়ে ব্যক্তিরা বিক্ষোভ মিছিল করেন।

বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, হাতীবান্ধা উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আফজাল হোসেন মিয়া, সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক রফিকুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক নুরন্নবী খন্দকার কাজল, সদস্য সচিব সোহেল তালুকদার, ছাত্রদলের সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল নোমান, মৎস্যজীবী দলের সভাপতি ওবায়দুল হক, কৃষকদলের আহবায়ক আমিনুর রহমান, সদস্য সচিব মতিউর রহমান মতি প্রমুখ।

বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধনে বক্তরা বলেন, ওসি ও বাদির যোগসাজসে মামলা রেকর্ড করে আমাদের কৃষক দলের ইউনিয়ন সভাপতিসহ নিরীহ অনেক মানুষকে আসামি করা হয়েছে। শুধু তাই নয় সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া রেকর্ডটি প্রমাণ করে মামলার বাদি ও ওসি টাকার জন্য মামলা বানিজ্যে মেতেছেন। আগামী ৭২ঘন্টার মধ্যে যদি ওসিকে প্রত্যাহার করা না হয়, তাহলে আমরা আরও কঠোর কর্মসুচির ডাক দিবো।

এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা কৃষক দলের আহবায়ক আমিনুর রহমান বলেন, ওসি ও বাদির যোগসাজসে মামলা রেকর্ড করে আমাদের কৃষক দলের ইউনিয়ন সভাপতি সহ নিরীহ অনেক মানুষকে আসামি করা হয়েছে। আমরা ৭২ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছি। আগামী ৭২ঘন্টার মধ্যে যদি ওসিকে প্রত্যাহার করা না হয় তাহলে আমরা আরও কঠোর কর্মসুচির ঘোষণা দিবো।

এ বিষয়ে হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুন-নবী বলেন, থানায় যে কোন মানুষের নামে অভিযোগ হতে পারে। এ বিষয়ে তদন্ত করে আসামি গ্রেফতার হয়। এর আগেই আমার বিষয়ে মানববন্ধনে যারা অভিযোগ তুলছেন সেটি সম্পন্ন ভিত্তিহীন।

প্রসঙ্গত, গত ১৮ জুলাই হাতীবান্ধা কৃষি ব্যাংকের সামনে আওয়ামীলীগের একটি মিছিলের ভিডিও ধারণ করার সময় হামলার শিকার হন সাংবাদিক আব্দুর রহিম। এ ঘটনায় গত ৩ মার্চ ৪৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২০/২৫ জনের বিরুদ্ধে হাতীবান্ধা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।

কিন্তু তদন্ত ছাড়া ওসি ওই দিনই মামলাটি নথিভুক্ত করেন। সেই মামলায় বিএনপির পদধারী ২৩ নম্বর আসামি মমিনুর ইসলাম মমিন উপজেলার ফকিরপাড়া ইউনিয়ন কৃষকদলের সভাপতি ও ৪৫ নম্বর আসামি সাহিনুর রহমান ওই ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড কৃষকদলের সভাপতি।