লিটনের ভুল আউট কফিনে শেষ পেরেক!
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2018/09/liton-das-out-20180928203310.jpg)
শুরুর সাথে শেষটার কি অস্বাভাবিক অমিল! প্রথম উইকেটে ১২০ রান তোলা দল ২২২ রানে অলআউট। ভাবা যায়!
পুরো আসরে উদ্বোধনী জুটিতে রান না পাওয়া বাংলাদেশ ফাইনালে লিটন দাস আর মেহেদী মিরাজের অসামান্য দৃঢ়তায় শতরানের রানের ওপেনিং জুটি পেয়েও বড়সড় স্কোর গড়ে তুলতে পারেনি। এই ব্যর্থতার দায় পুরোটাই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের।
যে মুশফিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শতরান আর পাকিস্তানের সাথে ৯৯ রানের দু’দুটি ম্যাচ জেতানো ইনিংস উপহার দিয়ে নায়ক বনে গিয়েছিলেন, আজ ফাইনালে সেই মুশফিক হাঁটলেন ভুল পথে। ভায়রার পদাংক অনুসরণ করলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও।
মিঠুন, ইমরুলও কিছুই করতে পারলেন না। দুই ওপেনার ছাড়া শেষ দিকে সৌম্য (৩৩) ডাবল ফিগারে পা রাখলেন। মিডল ও লেট অর্ডারের এমন চরম ব্যাটিং ব্যর্থতায় ভক্ত-সমর্থকদের মন খারাপ। এর সাথে মিঠুন, নাজমুল অপুু ও সৌম্য সরকার- তিন তিনটি রান আউটও হতাশার মাত্রাকে বাড়িয়ে দিয়েছে।
কিন্তু আবার ভিন্ন কথাও আছে। থার্ড আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্তে আউট হয়েছেন লিটন দাস। ক্যারিয়ারে প্রথম শতরান করা লিটন প্রথম ১৫ থেকে ২০ ওভারে ভুবনেশ্বর, বুমরাহ, চাহাল, কেদর ও কুলদ্বীপ যাদবের মাপা বোলিংয়ের বিপক্ষে দুর্দান্ত ব্যাটিং করে উইকেটের সামনে ও দুদিকে অনেকগুলো নজরকাড়া শটস খেলে মাঠ গরম করে দেন।
সঙ্গী মিরাজ (৩২) আউট হবার পর মড়ক লাগলেও লিটন দাস একদিক আগলেই ছিলেন। ৫২ রানে একবার আকাশে ক্যাচ তুলে জীবন পাবার পর লিটন মনোযোগী হয়ে পড়েন একদিক দিক আগলে রাখায়। কিন্তু তার সে দায়িত্বপূর্ণ ইনিংসটি শেষ হয় থার্ড আম্পায়ার রড টাকারের ভুল সিদ্ধান্তে।
ভারতীয় বাঁহাতি চায়নাম্যান স্পিনার কুলদীপ যাদবের বলে লিটন স্টাম্পড হলেও টিভি রিপ্লেতে দেখা গেছে তার পায়ের একটা ক্ষুদ্র অংশ পপিং ক্রিজের ভিতরেই ছিল।
লিটন বল ব্যাটে আনতে ব্যর্থ হলে কিপার ধোনি মুহূর্তে বেলস ভেঙ্গে দেন। কিন্তু টিভি রিপ্লেতে কয়েক অ্যাঙ্গেল থেকে পরিষ্কার হয়েছে লিটনের পা ক্রিজের ভিতরে ছিল। সাধারণত স্পিন বোলিংয়ে স্ট্যাম্পিংয়ের সময় ব্যাটসম্যানের পিছনের পা উঠে যায়। অনেক সময় বুটের একটা অংশ ক্রিজের ভিতর থেকেও যায়। আম্পায়ারা টিভির পর্দায় রিপ্লেতে গিয়ে সেটাই দেখেন।
আজকের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ান টিভি আম্পায়ার রড টাকার কি দেখে কি বুঝে স্টাম্পিংয়ের সিদ্ধান্ত দিলেন, তা তিনিই ভালো বলতে পারবেন।
দুর্দান্ত সূচনার পরও মিডল অর্ডারদের চরম ব্যর্থতা এবং দায়িত্বহীনতায় সর্বনাশ যা হবার তা আগেই হয়ে গিয়েছিল। লিটনের বাজে আউটটি কফিনে যে শেষ পেরেকটাও ঠুকে দিল।
লিটন যখন সাজঘরে পা বাড়ান, তখনো বাংলাদেশ ইনিংসের ৫৪ বল বাকি ছিল। হাতে অবশিষ্ট ছিল ৪ উইকেট। কে জানে, লিটন তখন আম্পায়ারের ভুলের শিকার না হলে হয়তো আরও একটি বড় জুটি গড়ে উঠতেও পারতো। লিটনের সঙ্গী সৌম্য ৩৩ রান করেছেন। লিটনের ব্যাট থেকে আর ২০/২৫ রান যোগ হলে স্কোর ২৫০ পেরিয়ে যেতেও পারতো।
এক বছর আগে ইংল্যান্ডের বার্মিংহামের এজবাস্টনে ২৬৪ রান করেও ভারতের কাছে হারতে হয়েছিল ৯ উইকেটে। খেলা শেষ হয়েছিল ৫৯ বল আগে। মিডল অর্ডারের এত খারাপ ব্যাটিংয়ের পরও আজ লিটন আম্পায়ারের ভুলে আউট না হলে ঐ রানের আশপাশে থাকার সম্ভাবনা ছিল। হয়তো তারপরও বাংলাদেশ হারতো। তবে একটা আফসোস তো রয়েই গেল। অন্ততপক্ষে আড়াশোর্ধ পুঁজি থাকলে জয়েরও ভালো একটা সম্ভাবনা তো থাকতো!
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন