শতবর্ষ আগেও ছিল প্লাস্টিক সার্জারি!
বর্তমান সময়ে বিভিন্ন কারণেই প্লাস্টিক সার্জারি করে মানুষ। চিকিৎসা প্রযুক্তির উন্নতি হলেও সকল সার্জারির ক্ষেত্রেই কিছু না কিছু ঝুঁকি থেকেই যায়। পছন্দসই নাক কিংবা ঠোঁট—আজকাল প্লাস্টিক সার্জারির জোরে শরীরের অনেক অঙ্গের অবয়বই পছন্দসই করে নেওয়া যায়। এ সার্জারিকে মানুষ আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের ফসল হিসেবেই জানে। তবে ইতিহাস বলছে, এ ধরনের অস্ত্রোপচারের শিকড় রয়েছে ১০০ বছর গভীরে।
১১ নভেম্বর, ১৯১৮। আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয় প্রথম বিশ্বযুদ্ধ। যুদ্ধ সমাপ্তির সেই শতবর্ষকে স্মরণ করেছেন চিকিৎসক রবার্ট কারবি। যুক্তরাজ্যের কিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ক্লিনিক্যাল অ্যাডুকেশন অ্যান্ড সার্জারি’র এ অধ্যাপক জানালেন, ১০০ বছর আগে, সেই প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আমলেই শুরু হয়েছিল এ ধরনের অস্ত্রোপচারের প্রচলন। পরবর্তীকালে ‘প্লাস্টিক সার্জারি’ বা ‘প্রস্টেথিকস’ প্রযুক্তিও এসেছে সেই প্রাচীন গবেষণারই হাত ধরে।
কারবি জানান, মূলত যুদ্ধে আহত সেনাদের ক্ষতবিক্ষত চেহারা ঠিক করতেই এ ধরনের অস্ত্রোপচার শুরু হয় যুক্তরাজ্যে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শেষে প্রায় সাড়ে সাত লাখ ব্রিটিশ সেনা হাসপাতালে নানা ধরনের চিকিৎসার পর ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফিরেছিল। এদের মধ্যে প্রায় ১৬ শতাংশের মুখে ছিল ভয়াবহ ক্ষত। মূলত শার্পনেল বা শেলের টুকরা অনেকেরই চেহারার একটা বড় অংশকে পুরোপুরি চেনার অযোগ্য করে দিয়েছিল। হ্যারল্ড গিলিজ নামে নিউজিল্যান্ডের এক ইএনটি চিকিৎসক আহত এ ধরনের সেনার চিকিৎসা করছিলেন। তিনিই প্রথম এ ধরনের পুড়ে যাওয়া বা একেবারে ক্ষতবিক্ষত মুখগুলোর ওপর ‘কসমেটিক সার্জারি’ করার প্রয়োজন অনুভব করেন। ১৯১৬ সালে অলডারশটে তৈরি হয় যুক্তরাজ্যের প্রথম প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট। কেমব্রিজ সেনা হাসপাতালে আহত ব্রিটিশ সেনাদের মুখে সেই প্রথম ‘স্কিন গ্রাফটিং’ শুরু করেন চিকিৎসক গিলিজ। একেবারে শুরুতে ২০০ রোগী আশা করেছিলেন গিলিজ। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, সংখ্যাটা দুই হাজারের বেশি। কোনো আহত সেনার ক্ষতবিক্ষত মুখে দেহের অন্য অংশ থেকে চামড়া নিয়ে মুখে জোড়ার কাজ শুরু হয় সেই সময় থেকেই।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন