শপথ নিয়ে পাকিস্তানে নতুন ইনিংস শুরু ইমরান খানের
পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন সাবেক ক্রিকেট তারকা এবং তেহরিক-ই-ইনসাফ দলের প্রধান ইমরান খান। তাকে শপথ বাক্য পাঠ করান প্রেসিডেন্ট মামনুন হুসাইন। শুক্রবার পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের ১৭৬ সদস্যের ভোট পেয়ে দেশের ২২তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হন তিনি।
রাজধানী ইসলামাবাদে আইওয়ান-ই-সদরে (প্রেসিডেন্ট ভবন) শনিবার সকাল ১০ টার দিকে শপথ অনুষ্ঠান শুরু হয়। জাতীয় সংগীত এবং কোরআন তেলওয়াতের মধ্য দিয়ে শপথ শুরু হয়। শপথ নেয়ার পর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইমরান খান এবং তার স্ত্রী বুশরা ইমরানকে উপস্থিত অতিথিরা অভিবাদন জানান। তাদের বিয়ের পর এই প্রথম দু’জন একসঙ্গে প্রকাশ্যে এলেন।
ইমরানের শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী নাসিরুল মুলক, জাতীয় পরিষদের স্পিকার আসাদ কায়সার, সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া, বিমান বাহিনীর প্রধান মার্শাল মুজাহিদ আনওয়ার খান এবং নৌবাহিনীর প্রধান জাফর মাহমুদ আব্বাসি।
এছাড়া পিটিআইয়ের নেতাকর্মীরা, পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার এবং ধারাভাষ্যকার রমিজ রেজা, পাঞ্জাব পরিষদের নতুন নির্বাচিত স্পিকার চৌধুরী পারভেজ এলাহি, গায়ক সালমান আহমেদ, আবরারুল হক, অভিনেতা জাভেইদ শেইখ এবং জাতীয় পরিষদের সাবেক স্পিকার ড. ফেহমিদা মির্জাও শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অতিথিদের তাদের সঙ্গে এনআইসি কার্ড বা স্বীকৃতিপত্র বহনের জন্য বলা হয়। তবে কোন ধরনের হ্যান্ডব্যাগ, পার্স, মোবাইল এবং ইলেক্ট্রিক জিনিসপত্র বহন না করার পরামর্শ দেয়া হয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌঁড়ে ইমরানের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন শেহবাজ শরিফ। তাকে বড় ব্যবধানে পরাজিত করেছেন ইমরান। শেহবাজ শরীফ ৯৬ টি ভোট পেয়েছেন। নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে ভোট দেন। জাতীয় পরিষদে ভোটাভুটি শুরুর আগে ইমরান ও শাহবাজ শরিফ করমর্দন করেন। ভোটাভুটির প্রক্রিয়া শুরুর ঘোষণা দেন জাতীয় পরিষদের নতুন স্পিকার আসাদ কায়সার।
দেশে পরিবর্তনের ডাক দিয়ে নির্বাচনে অংশ নেন ইমরান খান। দেশে জীবনযাত্রার মান পরিবর্তন এবং দুর্নীতি দমনের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। এক বিবৃতিতে ইমরান খান বলেন, যারা দেশকে লুটপাট করছে আমি প্রতিজ্ঞা করছি তাদের শাস্তির আওতায় আনা হবে।
শপথ অনুষ্ঠানে নিজের সমসাময়িক ভারতের তিন ক্রিকেটার নভজাত সিং সিধু, সুনীল গাভাস্কার এবং কপিল দেবকে আমন্ত্রণ জানান ইমরান খান। তবে শুধুমাত্র নভজাত সিং সিধুই ওই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পাকিস্তানে এসেছেন।
দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতা গ্রহণ করতে ইমরানকে প্রায় ২২ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। ১৯৯৬ সালে তিনি ক্রিকেট থেকে অবসর নেন। এর মাত্র চার বছর আগে অর্থাৎ ১৯৯২ সালে বিশ্বকাপে জয়ী হয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে খ্যাতি অর্জন করেন।
গত মাসে ইমরান খানকে ফোন করে স্বাগত জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সে সময় দু’দেশের মধ্যে শান্তি এবং উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা করেন তারা। এর আগে ভোটে জিতে ভারতের প্রতি বন্ধুত্বপূর্ণ আহ্বান জানান ইমরান। তিনি বলেন, আপনারা এক কদম এগিয়ে এলে আমরা দুই কদম এগিয়ে যাব।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন