শাকিবের আসন কাঁপিয়ে দিয়েছে শুভ?
আরিফিন শুভ— টিভি নাটক, বিজ্ঞাপন, র্যাম্পে রমরমা ক্যারিয়ার সব ছেড়ে-ছুড়ে চলে আসলেন সিনেমা করতে। কিন্তু এ পথ যে বন্ধুর, অনেক কঠিন— তবু তাকে পাড়ি দিতে হবে। নানা সমালোচনা সয়ে পড়ে রইলেন সিনেমা নিয়ে। যার ছবি চলে না বলে যারা এক সময় বিদ্রুপ করতেন, তারাই বলছেন ইন্ডাস্ট্রিতে শুধু শাকিব খান নয়, আরিফিন শুভর উপরও ভরসা করার সময় এসেছে।
‘ঢাকা অ্যাটাক’র ব্যাপক সফলতার পর সবাই বলছেন আরিফিন শুভ ইন্ডাস্ট্রিতে সবচেয়ে বড় জায়গাটা দখল করতে যাচ্ছেন।
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সভাপতি ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ বলেন, ‘‘আরিফিন শুভর এর আগে ‘ছুঁয়ে দিলে মন’, ‘কিস্তিমাত’, ‘মুসাফির’ অনেক ভাল চলেছিল। কিন্তু এরকম একটা হিট দরকার ছিল, যেটা কিনা ইন্ডাস্ট্রিতে তাকে স্থান করে দিবে। তার ছবিও যে সুপারহিট হয় এবং শুধু যে শাকিব খান না তারও উপর ভরসা করা যায় এটা এ ছবিতে প্রমাণিত।’’
নওশাদ বলেন, ‘শাকিব খান তো অনেক বছর রাজত্ব করছে। এই মুহুর্তে বলতে পারি খুব বেশি দেরি নাই এক নম্বর অবস্থানে যাবে শুভ। সেক্ষেত্রে তাকে একটু সতর্কভাবে পথ চলতে হবে।’
তবে তিনি এও বলেন, ‘শুভ কিংবা শাকিব না শুধু ইন্ডাস্ট্রিতে আরও নায়ক-নায়িকা উঠা দরকার, যাদের ছবি আমরা ভরসা করে চালাতে পারি। যাদের ছবি দর্শকরা দেখতে দল বেধে আসবে।’
বুকিং এজেন্ট সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বলেন, “শাকিব খান এখনও বাংলাদেশের সিনেমাতে একচেটিয়া। তবে আরিফিন শুভ যদি ‘ঢাকা অ্যাটাক’র মত এরকম হিট ছবি টানা তিন-চারটা দিতে পারে তাহলে সে শাকিব খানের সাথে শক্ত প্রতিন্দ্বন্দ্বিতা করবে।’’
তিনি বলেন, ‘‘ঈদ ছাড়া গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের কোনো ছবিতে ‘ঢাকা অ্যাটাক’র মতো এত রেকর্ড সেল আর হয়নি। সেক্ষেত্রে আমরা আশা করতেই পারি শুভকে নিয়ে।’’
মফস্বল শহর লক্ষ্মীপুরের হ্যাপি সিনেমা হলের মালিক মাসুম ভূঁইয়া বলেন, “ঢাকা অ্যাটাক’ হিট হওয়ার পেছনে শুভর একক কৃতিত্ব দিব না আমি— পরিচালক, গল্প, মেকিং সব মিলিয়ে ছবিটি সুপারহিট। তবে এ কথা বলতে পারি শুভর ভেতর সম্ভাবনা রয়েছে, সে অনেক দূর যাবে— তার আলাদা একটা দর্শক শ্রেণি তৈরি হয়েছে যারা হলে আসে শুধুই তার ছবি দেখার জন্য। যেটা শুধু এতদিন শাকিব খানের ছিল।’’
২০১০ সালে খিজির হায়াত খানের ‘জাগো’তে অভিনয় করলেও ২০১৩ সালে সাফি উদ্দিন সাফির ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনি’ ও দেবাশীষ বিশ্বাসের ‘ভালোবাসা জিন্দাবাদ’ দিয়ে মূলত শুভর সিনেমার ক্যারিয়ার শুরু। এছাড়া মোস্তফা কামাল রাজের ‘তারকাঁটা’য় শুভর অভিনয় প্রশংসিত হয়।
এ তিনজনের মধ্যে সাফি উদ্দিন সাফি ও মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ কথা বলছেন আরিফিন শুভকে নিয়ে।
সাফি উদ্দিন সাফি বলেন, ‘শুভ দেখতে সুদর্শন, ভাল অভিনয় জানে। এক ছবি দিয়ে হয়ত বলতে পারি না তার উপর পুরোপুরি ভরসা করা যায়। তবে এটা বলা যায় শুভর ক্যারিয়ারে সুসময় আসছে, আর এটা আমাদের ইন্ডাস্ট্রির জন্যও সুখবর।’
মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ শুভকে দেখলেই নায়ক মনে হয় জানিয়ে বলেন, ‘শুভকে যদি তার পছন্দ অনুযায়ী গল্প, চরিত্র দেওয়া যায় তাহলে মন-প্রাণ দিয়ে ওই ছবির জন্য খাটে। সেটা আমি তারকাঁটাতে প্রমাণ পেয়েছি। দীপঙ্কর দীপন দা ঢাকা অ্যাটাকে প্রমাণ পেলেন। তার মানে দাঁড়াচ্ছে তাকে দিয়ে ঠিকমত ছবিটা বানাতে পারলেই ওই ছবি চলবে।’
তিনি বলেন, ‘আজকে ধরেন শুভ এক নম্বর নায়ক। তাকে দিয়ে দশটা ছবি বানালেন, এর মধ্যে পাঁচটায় ফ্লপ— লাভ কী? তার চেয়ে ওই যে বললাম তাকে দিয়ে তার অনুযায়ী চরিত্র, গল্প, পরিচালক দিয়ে ভাল ছবি বানান— আপনাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হবে না, ব্যবসায়িক সফলতা পাবেন-ই।’
যাকে নিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে এত কথা হচ্ছে সেই আরিফিন শুভ কী ভাবছেন? শুভ বলেন, ‘ভরসা করা যায় কিনা এটা তো সম্মানিত পরিচালক, প্রযোজকরা ভাববেন। আমি শুধু এতটুকু বলবো আমার সকল পরিচালক, প্রযোজক, সহশিল্পী, দর্শক, ভক্ত সর্বোপরি ইন্ডাস্ট্রির সকলের প্রতি কৃতজ্ঞ যাদের কারণে আমি আজকের আরিফিন শুভ।’
আরিফিন শুভ বর্তমানে অভিনয় করছেন নায়ক আলমগীর পরিচালিত ‘একটি সিনেমার গল্প’-এ। ছবিটিতে তার বিপরীতে আছেন কলকাতার ঋতুপর্ণা ঘোষ। এবছরই শুভর আরেকটি ছবি মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে— জাকির হোসেন রাজু পরিচালিত ‘ভালো থেকো’। তানহা তাসনিয়া তার বিপরীতে অভিনয় করেছেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন