শিশুদের ফেসবুক আসক্তি কাটাতে যা করবেন
সামাজিক যোগাযোগের জনপ্রিয় মাধ্যম ফেসবুক। দূরত্ব যত বেশিই হোক ফেসবুক যোগাযোগ করা যায় মূহূর্তে। শেয়ার করা যায় ছবি ভিডিও কল, ভয়েস কলসহ আরো অনেক কিছু। এখন কমবেশি সব বয়েসী ছেলেমেয়েদের হাতে এসে গেছে স্মার্টফোন। সেখানে ইন্টারনেটের মাধ্যমে তারা নিজেদের অজান্তেই খারাপ দিকগুলোর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ছে। জড়িয়ে পড়ছে আসক্তিতে।
ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ মানব কল্যাণে ফেসবুকে তৈরি করলেও এই যোগাযোগ মাধ্যম এখন শিশুদের জন্য হুমকির কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। অহরহ ঘটছে অপ্রত্যাশিত অনেক ঘটনা। শিশুরা এই ফেসবুক থেকে ভাল কিছুর চেয়ে খাবার বিষয়গুলোকে দিকে আকৃষ্ট হচ্ছে বেশি। মূহূর্তে ঢুকে যাচ্ছে বিভিন্ন পর্নগ্রাফি সাইটে। তারা নিজের অজান্তেই পরিচিত হচ্ছে ক্ষতিকারক অনেক বিষয়ের সাথে। ফেসবুক এখন শিশুদের আসক্তিতে পরিণত হয়েছে।
শিশুদের ফেসবুকের আসক্তি নিয়ে বিশিষ্ট মনোবিজ্ঞানী মুহিত কামাল যুগান্তারের সাথে বিভিন্ন বিষয় আলোচনা করেছেন। ফেসবুক থেকে শিশুদের আসক্তি কমাতে অভিভাবককে সচেতন হওয়ার প্রতি তাগিদ দিয়েছেন তিনি। মনোবিজ্ঞানী মুহিত কামাল যুগান্তরকে বলেন, শিশুদের ফেসবুকের আসক্তি কমাতে সবচেয়ে বেশি প্রযোজন পরিবারের সহযোগিতা। প্রতিটি অভিভাবককে তার সন্তানদের সময় দিতে হবে। আপনি যতই ব্যস্ত থাকুন সন্তানদের জন্য হাতে সময় রাখুন।
তিনি বলেন, তাকে পত্রিকা পড়ানো, বই পড়ানো, ঐতিহাসিক স্থান ঘুরে দেখানো, টিভিতে খবর দেখানো, গল্প করা, মোবাইল শিশুদের নাগালের বাইরে রাখা, এক কথায় সন্তানদের বন্ধু হোন। দেখবেন সহজেই কাটবে শিশুদের ফেসবুকের নেশা। এছাড়া তিনি স্কুলের শিক্ষকদের ভূমিকার কথাও বলেছেন।
বিশিষ্ট মনোবিজ্ঞানী মুহিত কামাল কামালের পরামর্শ থেকে নিচে অভিভাবকদের জন্য কিছু পরামর্শ তুলে ধরা হলো –
১. শিশুদের সময় দিন
শিশুদের ফেসবুকের আসক্তি কমাতে অভিভাবকেরা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। সন্তানকে অবশ্যই সময় দিতে হবে। সন্তান কখন কি করছে, কোথায় যাচ্ছে, কার সাথে চলছে সে বিষয়ে খোঁজ নিতে হবে। সপ্তাহে অন্তত একদিন তাকে বাইরে বেড়াতে নিয়ে যান।
২. স্কুলে সচেতনতামূলক কর্মশালা
ফেসবুকের আসক্তি কমাতে স্কুলে স্কুলে সচেতনতা-প্রচার শুরু করলে এখনকার তরুণ প্রজন্মকে ওই কু-প্রভাব থেকে রক্ষা করা যাবে। স্কুলগুলোতে কর্মশালার আয়োজন করা যেতে পারে। কর্মশালায় ইন্টারনেট ও সোশাল মিডিয়ার কুফল নিয়ে আলোচনা, পাঠচক্র করা যেতে পারে।
৩. খেলাধুলা
মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, ইন্টারনেটের কুফল থেকে সন্তানদের বাঁচাতে বিকল্প হিসেবে খেলাধুলা বা পরিবারের সদস্যদের সময় দেওয়া একান্ত প্রয়োজন। প্রতিদিন বিকেলে পড়া শেষে তাকে খেলাধুলার সময় দিতে হবে।
৪. শিশুদের বন্ধু হোন
শিশুদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলুন। সব কিছু খোলামেলা আলোচনা করুন। তাহলে অনেক সমস্যাই সমাধান হয়ে যাবে।
৬. শিশুদের বই উপহার দিন
শিশুদের জন্মদিন কিংবা বিশেষ দিনে শিশুদের বই উপহার দিন। তাকে আস্তে আস্তে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। বই পড়লে এক তো জ্ঞান বাড়বে অন্যদিকে ফেসবুকের আসক্তি কমবে।
৫. নাগালের বাইরে রাখুন মোবাইল
সম্ভব হলে শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন মোবাইল। শিশুদের হাতে মোবাইল না দেয়া গেলেই ভাল।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন