শিশুদের মুখে অমলিন হাসি, দুশ্চিন্তায় বাবা-মা
মুখে ফুটফুটে হাসি দু’জনের। আনমনে বিছানায় শুয়ে থেকে খেলা করে শিশু দু’টি। আবার খেলার ছলে বিছানায় ঘুমিয়ে পড়ে।
অপরিচিত কাউকে দেখলেও তাদের মুখে অমলিন হাসি। দেখে বোঝার উপায় নেই শিশু দু’টির মাথা জোড়া লাগানো। তবে কষ্ট হচ্ছে তা তাদের দেখলেই বোঝা যায়। পাশ ফিরতে পারে না; ওপর হতেও পারে না। দু’জনকে একসঙ্গে কোলে নিতে বাবা-মা’রও ভীষণ কষ্ট হয়।
কথা হচ্ছে পাবনার চাটমোহর উপজেলার আটলংকা গ্রামের দম্পতি রফিকুল ইসলাম-তাসলিমা খাতুনের দুই সন্তান রাবেয়া-রোকাইয়াকে নিয়ে।
জানা যায়, ২০১৬ সালের ১৬ জুন পাবনার একটি ক্লিনিকে সিজারের মাধ্যমে জন্ম হয় এই মাথা জোড়া লাগানো যমজ কন্যা শিশুর। বর্তমানে তাদের বয়স এক বছর। এই দম্পতির সংসারে সাড়ে ৬ বছরের আরও একটি কন্যাসন্তান রয়েছে।
সিজার করার আগের দিন পর্যন্ত বাবা-মা জানতে পারেননি পেটে এমন যমজ শিশু আছে। এমনকি ডিজিটাল আলট্রাসনোগ্রাফিতেও বিষয়টি ধরা পড়েনি।
বাবা-মা’র স্বপ্ন ছিল সুস্থ, স্বাভাবিক শিশু নিয়ে আনন্দে ভরে উঠবে সংসার। কিন্তু মাথা জোড়া থাকায় তাদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে তাদের। দিন যত যাচ্ছে শঙ্কা ততই বাড়ছে। জোড়া মাথার যমজ শিশু সেই আগ্রহের পরিবর্তে পরিবারে নিয়ে এসেছে নিরানন্দ। ঘরে নতুন অতিথি আসলেও স্বজনদের মাঝে নেই আনন্দ। তাদের আশা, অপারেশনের মাধ্যমে জোড়া মাথা আলাদা করা গেলে আনন্দে ভরে উঠবে পরিবার।
রফিকুল ইসলাম ও তাসলিমা খাতুন জানান, ‘মাথা জোড়া হলেও তাদের বর্তমান সময় পর্যন্ত আচরণ স্বাভাবিক। কিন্তু সমস্যা হয় খাওয়ানো, গোসল করানো, কোলে রাখা, উঠাবসা সবকিছুতে অস্বস্তি কাজ করে। এখন কষ্ট করে হলেও তাদের লালন পালন করতে হচ্ছে।’
রাবেয়া-রোকাইয়ার মাথা অপারেশনের মাধ্যমে আলাদা করা গেলে খুব ভালো হতো বলে জানান তারা। তবে এমন ঝুঁকিপূর্ণ ও ব্যয় বহুল অপারেশনে সরকারি ও বেসরকারি সহায়তা চাইলেন ওই দম্পতি।
এ বিষয়ে চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. স ম বায়েজীদ উল ইসলাম জানান, জন্মগত ত্রুটির কারণে জোড়া মাথার যমজ শিশুর জন্ম হয়। পরীক্ষা-নীরিক্ষার পর বোঝা যাবে তাদের মাথা আলাদা করা যাবে কি না।
তিনি বলেন, অপারেশনের মাধ্যমে শিশু দু’টিকে আলাদা করা ব্যয়বহুল ও ঝুঁকিপূর্ণ। ঢাকায় নিয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন