শিশুর কান পরিষ্কার করবেন?
আপনার ছোট্ট শিশুটির কানে খোল বা ময়লা হয়েছে। কানে খোল জমাটা কোনো জটিল সমস্যা নয়, কিন্তু তারপরও শিশুর হালকা অসুস্থতাকে বাবা মা অনেক গুরুত্ব দিয়ে দেখেন। কারণ এ থেকে কানে ব্যথা বা স্বাস্থ্যের অন্য কোনও সমস্যা দেখা দিতে পারে বলে আশংকা থাকে তাদের!
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, কানের ময়লা মোমের মতো পদার্থ যা মানুষের কান থেকে নিঃসৃত হয়, এবং যা সেরুমেন (কানের ময়লা) হিসাবে পরিচিত।
সেরুমেনাস গ্রন্থি কানের খোল নিঃসৃত করে যা একটি প্রাকৃতিক বাধার ন্যায় মৌলিক পদার্থ থেকে আপনার কানকে রক্ষা করে। এই হলুদ পদার্থ কানের খাল ও ত্বককে রক্ষা করতে সহায়তা করে। এটি একটি কান পরিষ্কারের উপাদান হিসাবে কাজ করে যা কানের খোলকে পিচ্ছিল রাখতে সাহায্য করে।
তবে তার আগে জানা দরকার কখন কানের এ ময়লা সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়?
কানের ময়লা বা খোল একটি সমস্যা হতে পারে তখনি যখন এটি দ্রুতহারে এবং বেশি পরিমাণে হতে থাকে। তখনই শিশুর কান বন্ধ, ক্ষীণ শ্রবণশক্তি, ব্যথা, চুলকানির সমস্যা দেখা দেয়।
তাই এসময় শিশুর কান পরিষ্কার করার প্রয়োজন পড়ে। তবে শিশুদের কানের খোল পরিষ্কার করার আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়াটা অত্যন্ত জরুরি।
তাহলে আসুন শিশুর কানের ময়লা নিয়ে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের কয়েকটি পরামর্শ জেনে নিই-
* প্রথমত মনে রাখতে হবে পরিষ্কারের জন্য কোনো কিছু সন্তানের কানের মধ্যে ঢোকাবেন না। কারণ শিশুটি সহযোগিতা না করলে কানের পর্দার মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।
* দোকানে কিছু ড্রপ পাওয়া যায় যা কানের ময়লা বা খোলকে গলিয়ে দিতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওই ড্রপগুলো ব্যবহার করতে পারেন।
* ক্ষতিগ্রস্ত কানটি উপরে করে শিশুটিকে পাশ ফিরে শুতে বলুন, সে অনেকটা আরাম পাবে।
* আপনার সন্তানের কান নিয়ে কখনই পরীক্ষা করবেন না। চিকিৎসকরা সাধারণত সোডিবাইকার্বের দ্রবণ দিয়ে কান পরিষ্কার করে থাকেন। এ দ্রবণ কানের ময়লাকে গলিয়ে কান থেকে বের করে দেয়। এ ওষুধে কান পরিষ্কার হতে ৪-৫ দিন সময় লাগে।
* কান পরিষ্কার হয়ে যাওয়ার পর আর কখনও শিশুর কান পরিষ্কার করতে যাওয়া ঠিক হবে না। তাতে ঘটনার পুনরাবৃত্তিই ঘটবে। তবে শিশুর কানে ময়লা জমেছে মনে করলে অলিভ অয়েল ৪-৫ ফোঁটা করে দৈনিক তিনবার একাধারে ১০ দিন দিতে পারেন। এত কান পরিষ্কার থাকবে।
* অনেক অনিরাপদ ঘরোয়া প্রতিকার কানের ময়লা বা খোল সরানোর পদ্ধতি আজকাল ব্যবহার করা হয়। এ ধরনের পরীক্ষার থেকে দূরে থাকুন কারণ এর থেকে সংক্রমণ এবং কানের পর্দার ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। এতে সমস্যা আরও গুরুতর এবং জটিল হবে।
* কটন বাড দিয়ে কান খুঁচানো কানের পর্দার ক্ষতি করতে পারে। এটা ব্যবহার তখনই হতে পারে যখন কানের খোল, ড্রপের সাহায্যে নরম করে নেয়া হবে। এ প্রক্রিয়ায় খোল বের করে আনা সহজ হবে।
এছাড়া কানের খোল নিয়ে বিব্রত হওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই কারণ এটি সম্পূর্ণরূপে স্বাভাবিক জিনিস। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, বেশি পরিমাণে কানের খোল প্রতিরোধ আপনার হাতে নেই। তবে কান পরিষ্কার রেখে আপনি সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে পারেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন