তীব্র শীতে স্থবির সারাদেশ, দুর্ভোগে নিম্ন আয়ের মানুষেরা

সপ্তাহব্যাপী চলা শৈত্য প্রবাহে দেশের ইতিহাসে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমে এসেছে। উত্তরের জনপদগুলোতে অবস্থা বেশি শোচনীয়। প্রতিনিয়তই ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে হাসপাতালগুলোতে। প্রচণ্ড শীতে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষেরা।

বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা গতকাল সোমবার রেকর্ড করা হয়েছে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়। সোমবার সকালে সেখানে তাপমাত্রা ২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, এ অবস্থা চলবে ১০ তারিখ পর্যন্ত তারপর স্বাভাবিক হয়ে আসবে তাপমাত্রা।

পঞ্চগড়ে শৈত্যপ্রবাহ ও তীব্র শীতে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। শীতবস্ত্রের অভাবে ও কাজের সুযোগ কমে যাওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে। কয়েকদিনে উত্তরে হিমেল হাওয়া ও ঘনকুয়াশার কারণে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। সন্ধ্যার পর থেকে শীতের তীব্রতা থাকায় মানুষজন দ্রুতই ঘরে ফিরে যাচ্ছে। দুর্ঘটনা এড়াতে যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে।

শীতে বগুড়ায় জনজীবন প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। নিম্ন আয়ের মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে সবচে বেশি। বৃদ্ধ ও শিশুরা শীত জনিত করণে রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। জেলায় ২৪ ঘন্টায় ৪০ জন ডায়রিয়ায় এবং ৬ জন শিশু ও বৃদ্ধ শ্বাসকষ্টজনিত রোগে হাসপতালে ভর্তি হয়েছে।

তীব্র শীতে কুড়িগ্রামেও জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। দরিদ্র অভাবি ও ছিন্নমূল মানুষের একমাত্র ভরসা আগুনের কুন্ডুলী জ্বালিয়ে রাতের বেশির ভাগ সময় উষ্ণতা পাবার চেষ্টা করছে।

দরিদ্র কৃষিজীবি মানুষজন আরো বিপাকে পড়েছে তাদের গবাদি পশু নিয়ে। গবাদি পশু রক্ষায় তারা এখন গবাদি পশুর সাথে একই ঘরে রাত পার করছেন। অনেকে শীতজনিত রোগে হাসপাতালে বেড না পেয়ে আশ্রয় হয়েছে খোলা বারান্দার মেঝেতে।

দিনাজপুরেও হাড় কাঁপানো শীতে জনজীবন স্থবির হয়ে আছে। সন্ধ্যা নামার সাথে প্রায় ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে শহর। প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হচ্ছে না মানুষ। তীব্র শৈত্য প্রবাহ ও শীতে কাহিল হয়ে হতদরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষ রাতেও খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত থেকে বাঁচার চেষ্টা করছে।

এক সপ্তাহের শীতে জেলার ৪ উপজেলার প্রায় ১৫ লাখ মানুষ কাবু হয়ে পড়েছে। ৫ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে তাপমাত্রা উঠানামা করছে। ইতিমধ্যে দুই দিন দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গা জেলায়। বাড়ছে শীত জনিত রোগ।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে প্রতিদিন বাড়ছে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া আক্রান্ত রোগির সংখ্যা। শিশু ওয়ার্ডে ১৫ আসনের বিপরীতে প্রতিদিন ৩৫-৪০ জন ভর্তি হচ্ছে। তবে চলতি মৌসুমে শীত জনিত রোগে কেউ মারা যায়নি।