শুধু বিড়ি নয়, দেশ থেকে সিগারেটও দূর করা হবে : অর্থমন্ত্রী

বিড়ির টাইম হ্যাজ গন, এখন আর বিড়ির প্রয়োজন নাই। বিড়ি শিল্পে নিয়োজিত শ্রমিক অন্য পেশায় স্থানান্তরিত হবে। আগামী তিন বছরের মধ্যে দেশ থেকে বিড়ি বিতাড়ন করা হবে। কারণ বিড়ি মানুষের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে। স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর জিনিষের ব্যবসা চলতে দেওয়া যায় না।

মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে বাংলাদেশ বিড়ি শিল্প মালিক সমিতির একটি প্রতিনিধিদল দেখা করে। এসময় অর্থমন্ত্রী এ কথা বলেন। সমিতির সাধারন সম্পাদক ডা. শেখ মহিউদ্দিন প্রতিনিধিদলের নের্তৃত্ব দেন। এসময় তারা বিড়ি শিল্পের উপর আগের ট্যারিফ মূল্য পুন:নির্ধারন এবং শ্রমিকদের ও সাধারন মানুষের স্বার্থে মূল্যস্তর ও শুল্ক বৃদ্ধি প্রত্যাহার করার দাবি জানান।

সমিতির পক্ষ থেকে বলা হয়, বর্তমানে দেশে বিড়ি শিল্পের উপর যে হারে করারোপ করা হয়েছে তা এ শিল্পকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। শিল্প বন্ধ হয়ে গেলে একদিকে সরকার বিপুল রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হবে অন্যদিকে এ খাতে বিনিয়োগকারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং বিপুল সংখ্যক শ্রমিক বেকার হয়ে পড়বে। এসময় বলা হয়, বর্তমানে প্রতিদিন দেশে ছয় কোটি শলাকা সিগারেট এবং ১৫ থেকে ১৬ কোটি শলাকা বিড়ি বিক্রি হচ্ছে।

বৈঠকে বলা হয়, সিগারেট বিড়ির চেয়ে ক্ষতিকর অথচ বিড়ির উপর যে হারে করারোপ করা হচ্ছে সিগারেটের উপর তা হচ্ছে না। বিড়ি এবং সিগারেট উভয় ধরনের ধুমপানই স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক। তবে বিড়ির চেয়ে সিগারেটে ক্ষতি বেশি। তারা বিড়িতে সুগার কন্টেইন কম বলে দাবি করেন।

বিড়ি মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক ডা. শেখ মহিউদ্দিন বলেন, ‘আসন্ন বাজেটে বেনসন সিগারেটের দাম বাড়ছে না। অথচ সাত টাকার বিড়ির দাম ১৭ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। বিড়ির উপর ২০০ শতাংশ কর আরোপ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এই অসম প্রতিযোগিতা সৃষ্টির মাধ্যমে বিড়ি শিল্পকে ধ্বংস করা হচ্ছে। বিড়ি শিল্প বন্ধ করা হলে সিগারেটও বন্ধ করতে হবে।’

অর্থমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘আপনি আগামী দুই বছরের মধ্যে দেশ থেকে বিড়ি বিতাড়িত করার যে ঘোষণা দিয়েছেন, দেশের একজন অভিভাবক হিসেবে তা দিতে পারেন না। কারণ, এ শিল্পের সঙ্গে অনেক কিছু জড়িয়ে আছে। বিশেষ করে বিড়ি শিল্প মালিকরা প্রায় সবাই কমপক্ষে তিন বছরের জন্য তামাক সংগ্রহ করে রাখে। দুই বছরের মধ্যে বিড়ি শিল্প বন্ধ করা হলে এসব মালিকরা বিপুল আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।’

এ সময় অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সিগারেটে সুগার কন্টেইন কম হওয়ায় সিগারেটের চেয়ে বিড়ি অনেক বেশি ক্ষতিকারক। স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক তামাক ও এ জাতীয় নেশা দেশ থেকে একেবারে বিতারিত করা হবে। এ জন্য যা যা প্রয়োজন সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শুধু বিড়ি নয় দেশ থেকে পর্যায়ক্রমে সিগারেটও দূর করা হবে।’

মুহিত বলেন, ‘বিড়ির উপর আরোপিত কর হার কমানের প্রশ্নই উঠে না। তবে আগামী দুই বছরের মধ্যে বিড়ি তুলে দিতে যে পরিকল্পনা ছিল সেটি আর এক বছর বাড়িয়ে তিন বছর করা যায় কিনা সে বিষয়ে বিবেচনা করা হবে।’