শুল্ক বাড়ায় বেনাপোল দিয়ে চাল আমদানি প্রায় বন্ধ
নতুন বাজেটে আমদানি শুল্ক বাড়ার পর বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে নতুন করে চাল আমদানি প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। বেনাপোল বন্দর ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপ করে এ তথ্য জানা গেছে।
এবারের বাজেটে চাল আমদানির ওপর শতকরা ২৮ ভাগ শুল্ক আরোপ করা হয়, যা আগে ছিল ২ শতাংশ।
ব্যবসায়ীরা জানান, এখন পুরনো কিছু এলসির চাল আমদানি হলেও নতুন করে কোনো এলসি খুলছেন না তারা। আগে বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ২০০ থেকে ৩০০ ট্রাক চাল আমদানি হলেও বর্তমানে সেটি কমে দাঁড়িয়েছে ২০-৩০টিতে।
দেশের প্রধান স্থলবন্দর বেনাপোল দিয়ে ভারত থেকে যেসব পণ্য আমদানি হয় তার মধ্যে চাল অন্যতম। ইতিপূর্বে প্রধান খাদ্য হিসেবে চাল আমদানির ÿেত্রে নামমাত্র শুল্ক করাদি নেয়া হতো। এ জন্য ব্যবসায়ীরা চাল আমদানিতে উৎসাহিত হতেন।
গত বছরও শুল্ক বাড়ানোর পর চাল আমদানি কমে গেলে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছিল বাজারে। পরে শুল্ক কমিয়ে ২ শতাংশ করা হলে চালের বাজার কিছুটা স্থিতিশীল হয়।
এবারের বাজেটে ওই ২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে শ,ুল্ক আরোপ করা হয় ২৮ শতাংশ। অর্থাৎ প্রতি কেজি চালে আগে যেখানে শুল্ক ছিল ৭০ পয়সা, এবারের বাজেটে তা হয়েছে ৯ টাকা ৩৫ পয়সা। ১ জুলাই থেকে এই বাড়তি শুল্ক কার্যকর হবে। ফলে চাল আমদানি কমিয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
বেনাপোল কাস্টম সূত্র জানায়, বর্তমানে ভারত থেকে প্রতি টন চাল ৩৯০ মার্কিন ডলারে আমদানি হয়। আগে ১০০ টন চালের শুল্ক ছিল ৭৭ হাজার টাকা। বতর্মানে তা বেড়ে ৯ লাখ ৫৬ হাজার টাক হয়েছে। আমদানি কমে যাওয়ায় ভারতে চালের দামও কমে গেছে।
বেনাপোল কাস্টমস হাউসের ডেপুটি কমিশনার জাকির হোসেন জানান, আগে বেনাপোল বন্দর দিয়ে মাসে ৫৫-৫৬ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানি হতো। গত ১৭ দিনে চাল আমদানি হয়েছে মাত্র সাড়ে ৫ হাজার মেট্রিক টন।
চাল আমদানিকারক মিজানুর রহমান জানান, বাড়তি শুল্ক কর আরোপের কারণে আমদানিকারকরা নতুন করে এলসি খুলছেন না। বাজেটের আগে যেসব এলসি খোলা ছিল শুধু তাদেরই পুরতান এলসিরি চাল বন্দরে প্রবেশ করছে। তাও আবার মোটা অঙ্কের লোকসান গুনে শুল্ক করাদি পরিশোধ করে বন্দর থেকে খালাস নিতে হচ্ছে চাল।
ওই ব্যবসায়ীর ভাষ্য, ভারতের বর্ধমানে বহু আমদানিকারকের গুদামে হাজার হাজার টন চাল গুদামজাত করা আছে। শুল্ক কর বাড়ার কারণে গুদাম থেকে সেসব চাল খোলাবাজারে বিক্রির পরিকল্পনা করছেন।
চালের শুল্ক সরকার কমাবে- এই আশায় অনেক আমদানিকারক বন্দরে আসা চাল খালাস করছেন না বলে জানান বেনাপোল আমদানি রফতানিকারক সমিতির সহ-সভাপতি আমিনুল হক। তিনি বলেন, ‘ফলে বেনাপোল বন্দরে কয়েক হাজার টন চাল পড়ে আছে বাজেট ঘোষণার পর থেকে।’
চাল আমদানি ও রাজস্ব আহরণের কথা বিবেচনা করে সরকার বর্ধিত শুল্ক প্রত্যাহার করবে বলে আশা করেন ব্যবসায়ীরা।
বেনাপোল বন্দরের পরিচালক আমিনুল ইসলাম জানান, চালের ওপর শুল্ক কর বৃদ্ধি করায় বন্দরে চাল আমদানি কমে গেছে। ফাঁকা পড়ে আছে বন্দরের ট্রান্সশিপমেন্ট ইয়ার্ড ও। আগে যেখানে প্রতিদিন দু-তিন শ ট্রাক চাল আমদানি হতো বর্তমানে ২০ থেকে ৩০ ট্রাক আমদানি হচ্ছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন