শূন্যতা রেখে গেলেন লতা দিদি: মোদী
সুরসম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকরের মৃত্যুতে উপমহাদেশের সংগীতাঙ্গণে শোকের ছায়া নেমেছে। ভারতে দুদিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
কিংবদন্তিতুল্য সংগীতশিল্পীর মৃত্যুর খবরে তাৎক্ষণিক টুইট করেন নরেন্দ্র মোদী। পরে তিনি আরও দুটি টুইট করে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশের পাশাপাশি লতা মঙ্গেশকরের অবদান শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।
প্রথম টুইটে নরেন্দ্র মোদী লেখেন, ‘দুঃখ প্রকাশের ভাষা নেই। দয়ালু এবং যত্নশীল লতা দিদি আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। তিনি এক মহাশূন্যতা রেখে গেলেন, যা পূরণ করা সম্ভব নয়। ভবিষ্যত প্রজন্ম তাকে ভারতীয় সংস্কৃতির একজন অকুতোভয় হিসেবে মনে রাখবে। সুরেলা কণ্ঠ দিয়ে মানুষকে মন্ত্রমুগ্ধ করার এক অতুলনীয় ক্ষমতা ছিল তার।’
I consider it my honour that I have always received immense affection from Lata Didi. My interactions with her will remain unforgettable. I grieve with my fellow Indians on the passing away of Lata Didi. Spoke to her family and expressed condolences. Om Shanti.
— Narendra Modi (@narendramodi) February 6, 2022
কিছুক্ষণ পরই নরেন্দ্র মোদী আরেকটি টুইটে লেখেন, ‘লতা দিদির গান অসংখ্য আবেগকে প্রকাশ করেছে। তিনি কয়েক দশক ধরে ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতের পরিবর্তন ঘনিষ্ঠভাবে প্রত্যক্ষ করেছেন। চলচ্চিত্রের বাইরে, তিনি সর্বদা ভারতের উন্নয়ন ও অগ্রগতি সম্পর্কে উত্সাহী ছিলেন। তিনি সবসময় শক্তিশালী ও উন্নত ভারত দেখতে চেয়েছিলেন।’
Lata Didi’s songs brought out a variety of emotions. She closely witnessed the transitions of the Indian film world for decades. Beyond films, she was always passionate about India’s growth. She always wanted to see a strong and developed India. pic.twitter.com/N0chZbBcX6
— Narendra Modi (@narendramodi) February 6, 2022
পরে আরও একটি টুইট করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। মোদী লেখেন, ‘আমি লতা দিদির কাছ থেকে সবসময় অগাধ স্নেহ পেয়েছি, এটাকে আমি সম্মান বলে মনে করি। তার সঙ্গে আমার যোগাযোগ ও সম্পর্ক অবিস্মরণীয় থাকবে। লতা দিদির প্রয়াণে সব ভারতীয়দের সঙ্গে আমিও শোকাহত। তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি এবং সমবেদনা জানিয়েছি। ওম শান্তি!’
রোববার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন লতা মঙ্গেশকর। ৯২ বছর বয়সী এ সংগীতশিল্পী প্রায় চার সপ্তাহ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ১১ জানুয়ারি লতা মঙ্গেশকরকে মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। নিউমোনিয়াতে আক্রান্ত ছিলেন তিনি। প্রথম থেকেই তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছিল। ৩০ জানুয়ারি শিল্পীর কোভিড নেগেটিভ রিপোর্ট আসে। কিন্তু বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যার কারণে শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর কাছে হার মানলেন তিনি।
শারীরিক অবস্থার অবনতি নিয়ে এর আগেও একাধিকবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন লতা মঙ্গেশকর। কিন্তু কোটি কোটি ভক্ত-শ্রোতা আর অনুরাগীদের আশার প্রদীপ জ্বালিয়ে রেখে প্রত্যেকবারই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেন তিনি।
ভারতীয় সংগীতের কিংবদন্তি লতা মঙ্গেশকরের জন্ম ১৯২৯ সালে ভারতের ইন্দোরে এক মারাঠি পরিবারে। বাবার হাত ধরে অভিনয় ও গানের জগতে এলেও মাত্র ১৩ বছর বয়সেই বাবাকে হারান তিনি।
১৯৪২ সালে একটি মারাঠি ছবির গান রেকর্ডের মধ্য দিয়ে তার ক্যারিয়ার শুরু। এরপর আর পেছন ফিরতে হয়নি তাকে। মুম্বাই যাওয়ার পর ১৯৪৮ সালে ‘মজবুর’ নামের একটি হিন্দি ছবিতে প্রথম কণ্ঠ দেন তিনি।
১৯৭৪ সালে সবচেয়ে বেশি গান রেকর্ড করার নিরিখে ‘গিনেস বুক’-এ নাম উঠেছিল লতা মঙ্গেশকরের। ১৯৪৮ থেকে ১৯৭৪ সালের মধ্যে ২৫ হাজারের বেশি গান রেকর্ড করার অনন্য নজির গড়েন প্রায় ৩৬টি ভাষায় গান করা এ শিল্পী।
২০০১ সালে তাকে ভারতের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ভারতরত্ন সম্মানে ভূষিত করা হয়। ১৯৮৯ সালে পান দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন