শেরপুরের শ্রীবরদীতে ইউটিউব দেখে কাঁচা মরিচ চাষে লাভবান কৃষক রুহুল আমিন

ইউটিউবে মালচিং পদ্ধতিতে কাঁচা মরিচ চাষের ভিডিও দেখে নিজের ২০ শতাংশ জমিতে মরিচ চাষ করে লাভবান শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার কাকিলাকুড়া ইউনিয়নের দিগদারি গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে রুহুল আমিন। মাত্র ৪০ হাজার টাকা খরচ করে এখন প্রথম বারেই আয় ১লাখ ৮০ হাজার। ক’দিন পরে আরও ১ লাখ টাকার কাঁচা মরিচ উঠাবে, বলেছেন কৃষক রুহুল আমিন। আবার নতুন করে ৫ শতাংশ জমিতে মালচিং পদ্ধতিতেই চারা রোপণ করেছেন। নাগা ফায়ার ও ওয়ান প্লাস নামের দুই জাতের কাঁচা মরিচ চাষ করেন তিনি। এই দুই জাতের মরিচের চারা নিয়ে আসেন জেলার বাইরে বগুরা থেকে।

দীর্ঘ সময় ফলন এবং বাজারে কাঁচা মরিচের সারাবছর চাহিদা থাকায় মালচিং পদ্ধতি বেশ জনপ্রিয়। এ পদ্ধতিতে কাঁচা মরিচ চাষ উপজেলায় প্রথম দেখা গেছে দিগদারি গ্রামেই। এভাবে কাঁচা মরিচ চাষ করে জেলার চাহিদা মিটিয়ে অন্যান্য জেলায়ও সরবরাহ করা যেতে পারে বলেছেন স্থানীয় কৃষকরা।

এ পদ্ধতিতে কাঁচা মরিচ চাষে বেশি লাভজনক হওয়ায় নতুন করে চাষ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন স্থানীয় কৃষকরা। এমন উদ্যোগে সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষি বিভাগ।

এব্যাপারে কৃষক রুহুল আমিন জানান, আমি প্রথম মোবাইলে ইউটিউব এ ভিডিও দেখি। সেখানে মালচিং পদ্ধতিতে কাঁচা মরিচ চাষের ভিডিও দেখে আমারও কাঁচা মরিচ চাষ করার ইচ্ছা জাগে। প্রথম ৪০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়। এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৮০ হাজার টাকার মতো কাঁচা মরিচ বিক্রি করেছি। সামনে আরও লাখ খানেকের মতো বিক্রি করতে পারবো।

জানা গেছে, মালচিং পদ্ধতিতে শুরুতে একসঙ্গে কিছুটা খরচ বেশি হলেও পরে খরচ অনেক কমে যায়। এছাড়া এ পদ্ধতিতে আগাছা হয় না বলে তা পরিষ্কারের কোনো ঝামেলা নেই। দফায় দফায় সার দেওয়ারও ঝামেলা নেই। আর গাছ দীর্ঘজীবী হওয়ায় উৎপাদন হয় দীর্ঘসময় ধরে। ফলে অতিরিক্ত উৎপাদিত ফসল বাজারজাত করে আশানুরূপ লাভবান হন কৃষক।

এ পদ্ধতিতে জমি তৈরির জন্য মাঝখানে দুই পাশ থেকে কেটে দেড় ফুট চওড়া করে ও ৮-১২ ইঞ্চি পরিমাণ উঁচু করে মাটির সঙ্গে সার মিশিয়ে বেড তৈরি করা হয়। তৈরি বেডগুলো মালচিং পেপার দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। প্লাস্টিকের মালচিং পেপারের কালো রঙের দিকটা থাকে নিচের দিকে আর রুপালি রঙের দিকটা থাকে ওপরের দিকে অর্থাৎ সূর্যের দিকে। এ পদ্ধতিতে সূর্যের আলো ও তাপ নিয়ন্ত্রণে রেখে মাটিকে রাখে ফসলের উপযোগী। পরে মালচিং পেপারের দুই পাশে নির্দিষ্ট দূরত্বে গোল গোল করে কেটে নেওয়া হয়। এরপর কেটে নেওয়া জায়গায় রোপণ করা হয় বীজ বা চারা। এরপর তিন ফুট উঁচুতে বাঁশ ও সুতা দিয়ে তৈরি করা হয় মাচা।