শেরপুরে নলকূপ খননে গ্যাসের সন্ধান, আগুনে রান্না করছেন স্থানীয়রা
শেরপুরের নালিতাবাড়িতে নলকূপ খনন করতে গিয়ে পাওয়া গেছে প্রাকৃতিক গ্যাসের অস্তিত্ব। এমন এক বিস্ময়কর ঘটনার সাক্ষী হয়েছেন উপজেলার রুপনারায়নকুড়া ইউনিয়নের গাছগড়া গ্রামের হোটেল শ্রমিক নূর মোহাম্মদ ও তার প্রতিবেশীরা। পানির বদলে গ্যাস বের হতে শুরু করলে এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে চাঞ্চল্য। এখন সেই গ্যাস দিয়েই চলছে রান্নাবান্না ও চায়ের দোকানের চুলা।
শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, নূর মোহাম্মদের বাড়িতে শতাধিক কৌতূহলী মানুষের ভিড়। কেউ ভিডিও করছেন, কেউ আবার গ্যাসের আগুন নিজের চোখে দেখতে চান। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ১৪ অক্টোবর সকালে মিস্ত্রি এসে নলকূপের বোরিং শুরু করেন।
প্রায় ৫৫ ফুট গভীর পর্যন্ত খননের পর হঠাৎ পানি না উঠে পাইপ দিয়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে বের হতে থাকে গ্যাস। এরপর আরও দুই জায়গায় ৪০ ফুট পর্যন্ত বোরিং করলেও একইভাবে গ্যাস পাওয়া যায়।
বাড়ির মালিক নূর মোহাম্মদ বলেন, “প্রথমে ভেবেছিলাম মেশিনে সমস্যা হয়েছে। কিন্তু একটু পর দেখি, বুদবুদ করে গ্যাস উঠছে। মজার বিষয় হলো, আগুন ধরালে সেটা টিকে থাকে। আমরা ভয় পেয়েছিলাম, পরে স্থানীয়রা চেষ্টা করে দেখেন রান্না করা সম্ভব কি না। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, এখন সেই গ্যাসেই রান্না হচ্ছে আমাদের বাড়ি ও প্রতিবেশীদের।”
তবে বিষয়টি নিয়ে দুশ্চিন্তাও প্রকাশ করেছেন তিনি। “গ্যাস তো ঝুঁকিপূর্ণ জিনিস। কখন কি হয় কে জানে! সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত ব্যবস্থা নিলে ভালো হয়,” যোগ করেন নূর মোহাম্মদ।
স্থানীয় যুবক আকাশ মিয়া বলেন, “গ্যাস একটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় সম্পদ। পাশের জামালপুরেও সম্প্রতি গ্যাসের খনি আবিষ্কৃত হয়েছে। এখানেও হয়তো বড় ধরনের গ্যাসক্ষেত্র থাকতে পারে। সরকারের অনুসন্ধান দল এলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে।”
রুপনারায়নকুড়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ হযরত বলেন, “গ্যাস বের হওয়ার খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে গিয়ে সত্যতা পাই এবং ভিডিও ধারণ করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে পাঠাই। বর্তমানে আমরা কিছুটা আতঙ্কে আছি। কারণ এই আগুন কখন বিপদ ডেকে আনে বলা যায় না।”
এ বিষয়ে নালিতাবাড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ফারজানা আক্তার ববি বলেন, “বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। ভূতাত্ত্বিক জরিপের মাধ্যমে শিগগিরই বিষয়টি যাচাই করা হবে। স্থানীয়দেরও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।”
স্থানীয়দের দাবি, বিষয়টি যদি সরকারের নজরে আসে এবং অনুসন্ধান চালানো হয়, তবে নালিতাবাড়ি হতে পারে দেশের আরেকটি সম্ভাবনাময় গ্যাসক্ষেত্র। এখন দেখার বিষয়—এই হঠাৎ গ্যাস পাওয়া ঘটনা গবেষণার পর কী নতুন বার্তা দেয় দেশের জ্বালানি খাতে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন




