শেরপুরে নিখোঁজের ২০ ঘণ্টা পর দুই শিশুর লাশ উদ্ধার: মৃত্যু নিয়ে রহস্য

শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার বটতলা মৃদা বাড়ি এলাকার একটি মৎস্য খামার থেকে নিখোঁজের ২০ ঘণ্টা পর বিবস্ত্র অবস্থায় দুই শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। নিহতরা হলো তাতিহাটি ইউনিয়নের চককাউরিয়া এলাকার স্বপন মিয়ার মেয়ে স্বপ্না খাতুন (৬) এবং সেলিম মিয়ার মেয়ে সকাল আক্তার (৭)। তারা দুইজনেই স্থানীয় এক নূরানী মাদ্রাসায় পড়তো।

স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার (১৭ জুন) বেলা ১১টার পর থেকে শিশুদের খুঁজে পাচ্ছিলেন না পরিবারের সদস্যরা। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও সন্ধান না পেয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি পোস্ট করে শিশুদের সন্ধান চাওয়া হয় এবং সারারাত মাইকিং করা হয়। রাত ১টায় অন্য এক প্রজেক্টে খোঁজ নেয়া হয়।

বুধবার (১৮ জুন) সকাল ৭টার দিকে বটতলা মৃদা বাড়ি এলাকার একটি মৎস্য খামারে শিশু দুটির লাশ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা। খবর দিলে শ্রীবরদী থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। এ সময় শিশুদের পরনে কোনো পোশাক ছিল না।

জানা গেছে, স্থানীয় শাখাওয়াত হোসেনের জমিতে তৈরি ওই পুকুরটি লিজ নিয়ে মাছ চাষ করছেন মোস্তফা মিয়া নামে এক ব্যক্তি। স্থানীয়রা জানান, শিশু দুটির বাড়ি পুকুরের ঘটনাস্থল থেকে অনেক দূরে। মাসখানেক আগে এই পুকুরেই আরেকটি রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে, যা প্রজেক্টের মালিক ধামাচাপা দেয় বলে অভিযোগ রয়েছে।

এ ছাড়া মরদেহের কাছাকাছি কোনো পোশাকও পাওয়া যায়নি, যা ঘটনাটিকে আরও রহস্যজনক করে তুলেছে। তবে এখন পর্যন্ত শিশুদের পরিবার কোনো লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে থানায় খবর দেই এবং নিজেও ঘটনাস্থলে আসি। আমার কাছে বিষয়টি পানিতে ডুবে মারা যাওয়ার মতোই মনে হচ্ছে।’

শিশু স্বপ্নার বাবা স্বপন মিয়া বলেন, ‘আমি গতকাল ঢাকায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এমন সময় থেকে মেয়েকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে ঢাকা যাইনি। এরপর থেকে খুঁজতে থাকি, মাইকিংও করি। আজ সকালে মেয়ের লাশ পেলাম। কীভাবে কী হয়ে গেল বুঝতে পারছি না!’

শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার জাহিদ বলেন, ‘খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ পাঠানো হয় এবং পরে আমি নিজেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। বাচ্চা দুটির গায়ের পোশাক পাওয়া যায়নি। মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আমরা ঘটনাটিকে গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে।’