শেরপুরে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ভাঙনে বিলীন হচ্ছে বসতভিটা
যমুনার শাখা নদী দশানী ও ব্রহ্মপুত্র নদের শাখা শেরপুরের সদর উপজেলার কামারেরচর ইউনিয়নের ৬নং চর এলাকায় একত্রিত হয়েছে। প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ভারি বর্ষণে শেরপুরের এ দুই নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এবছর ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে বাড়ি-ঘর, আবাদি জমি, রাস্তাঘাট ও স্কুল মাদ্রাসা।
গত দুই বছরে দশানী নদীর ভাঙনে ৬নং চর গ্রামের অনেক পরিবারের বসতভিটা, সড়ক, কবরস্থানসহ আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।
একই অবস্থা ৭নং চরের বাসিন্দাদেরও। অনেকের জায়গা-জমি নদীতে বিলীন হওয়ায় যেমন আবাদ ফসল হারিয়েছেন, তেমনি ভিটে মাটি ভাঙনে মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু নেই। তাই তারা আতঙ্কে রয়েছেন। গত বছর ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড কিছু জিও ব্যাগ ফেলেই দায় এড়ানোর চেষ্টা করেছে, অভিযোগ স্থানীয়দের। স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়েও মুক্তি মেলেনি ভাঙন থেকে। স্থানীয়দের দাবি, পাইলিং করে তৈরি করা হোক স্থায়ী সমাধান।
সম্প্রতি সরেজমিনে ৬নং এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মৌসুমের শুরুতেই ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে গত কয়েক দিনেই প্রায় দেড়শ মিটার এলাকা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। সেই সাথে নদীর গর্ভে বিলীন হয়েছে অন্তত ত্রিশ থেকে চল্লিশটি বাড়ি। শত শত একর আবাদি জমির সাথে নদীর পেটে গেছে সবজির বাগান ও ধানের বীজতলা। ভাঙনের মুখে পড়েছে ৬নং চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সুসজ্জিত মসজিদ ও দুটি মাদরাসা, পোস্ট অফিস, গ্রামের রাস্তা ও কবরস্থান। আতঙ্কের মধ্যে দিনাতিপাত করছে মানুষ। অনেকেই শঙ্কায় আছেন, কখন তাদের বাড়িঘর ও জমি নদীগর্ভে চলে যায়।
ভোগান্তির একই চিত্র ৭নং চরে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শুরু হয়েছে ভাঙন। বিলীনের হুমকিতে রয়েছে স্থানীয় বাজারটি। যেখানে চরের কয়েক পাড়ার মানুষ তাদের ফসল ও অন্যান্য পণ্য বেচাবিক্রি করে। এখানকার অধিকাংশ নদীতীরবর্তী মানুষের বাড়ি ৫ থেকে ৭বার জায়গা পরিবর্তন করেও মিলছে না প্রতিকার।
৬ ও ৭নং চরের মানুষের দাবি একটাই, স্থায়ী ভাবে সমাধান না করে শুধু লোক দেখানো সমাধান দিয়ে তাদের কোনো কাজে আসছে না।
ভাঙনের খবর পেয়ে ঢাকা থেকে চলে আসেন শেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ছানুয়ার হোসেন ছানু। ভাঙন পরিদর্শন করে তিনি জানান, এ এলাকায় নদী ভাঙন ঠেকাতে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে কথা বলে শক্ত বাঁধের ব্যবস্থা করে দিবো।
এদিকে পাহাড়ি ঢলে শেরপুর জেলার চারটি নদী মহারশি, সোমেশ্বরী, ভোগাই ও চেল্লাখালি নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ার পর আশেপাশের এলাকা প্লাবিত হয় এবং ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। স্থানীয়দের দাবি পাহাড়ি ঢলে আসা পানি যেন তাদের ক্ষতি করতে না পারে সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
এসব ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন শেরপুর-৩ আসনের এমপি এ.ডি.এম শহিদুল ইসলাম।
তিনি জানান, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে কথা বলে এসব এলাকায় একটা ব্যবস্থা নিবো।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন