শেরপুরে ২ সহোদর বোন চান্স পেল একই বিশ্ববিদ্যালয়ে
২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষে একই সাথে একই বিশ্ববিদ্যালয় ও একই বিভাগে ভর্তি হয়ে চমক সৃষ্টি করেছেন শেরপুরের মিম ও মিশু নামের দুই সহোদর বোন।
তারা হলেন শেরপুর সদর উপজেলার মহসিন আলী মাস্টারের দুই কন্যা শাহনাজ পারভিন মিম ও সানজিদা সরাফি মিশু।
জানা গেছে, শেরপুর সদর উপজেলার কামারিয়া ইউনিয়নের রঘুনাথপুর ভীমগঞ্জ গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মহাসিন আলীর তিন কন্যার মধ্যে দুই কন্যা শাহনাজ পারভীন মিম এবং সানজিদা সারাফি মিশু এবার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধা তালিকায় ভর্তি সুযোগ পায়। সেই সাথে দুই বোন বিষয় পছন্দ করে ফলিত রসায়ন বিভাগে ভর্তির হয়েছে। তবে ছোট মেয়ে মিশু খুবই মেধাবী হওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ ৮টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধা তালিকায় নাম আসলেও তার বড় বোন মিম এর জন্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় একই বিষয়ে ভর্তি হন।
মিশু জানায়, সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ ৮ টি বিশ্ববিদ্যালয় ভালো বিষয় পড়ার সুযোগ পেলেও তার বোনের জন্য রাজশাহীতেই ভর্তি হয়েছেন। তিনি আরও বলেন, প্রত্যন্ত গ্রামে থাকার কারণে আমরা শহরের কোন কোচিং সেন্টারে কোচিং করতে পারিনি। প্রাইভেট পড়তে পারিনি। শুধুমাত্র ভার্সিটির প্রস্তুতির জন্য একটি কোচিংয়ে কিছুদিন কোচিং করেছি। ভবিষ্যতে তারা দুই বোন বড় কর্মকর্তা হয়ে বাবার আশা পূরণ করবেন। গত বুধবার (১৯ই জুন) শেরপুর সরকারি কলেজের আয়োজনে ২০২৪ সালের যেসব শিক্ষার্থী কলেজসহ বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির সুযোগ হয়েছে তাদেরকে সংবর্ধনা দেয়া হয়। ওই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এসে মিম ও মিশু এসব কথা জানায়।
এ বিষয়ে মিম ও মিশুর বাবা মহসিন আলী বলেন, আমি জেলার খুব প্রত্যন্ত এলাকার বাসিন্দা। তাই মেয়েদের পড়াশোনায় আধুনিক সুযোগ সুবিধা দিতে পারি নাই। যেটুকুই পেয়েছি তা তাদের মেধা দিয়েই পেয়েছি।
বাড়ির কাছে ভীমগঞ্জ মডেল স্কুলে পড়লেও কলেজে উঠে শেরপুর জেলা শহরে সরকারি কলেজে ভর্তি হয়। তবে বাড়ি থেকে তাদের কলেজ করা খুবই কষ্ট হয়। কারণ বাড়ি থেকে কলেজের দূরত্ব প্রায় ১৫ থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরে। প্রতিদিন তারা বাড়ি থেকেই কলেজের ক্লাস করেছে। তাই তারা কোন প্রাইভেট পড়তে পারেনি। এইচএসসি পাস করার পর শুধু ভার্সিটির ভর্তি কোচিং করেছে মাত্র। মেয়ে দুটো শুরু থেকেই খুবই মেধাবী। বিশেষ করে ছোট মেয়েটা সবচেয়ে বেশি মেধাবী। ক্লাস ওয়ান থেকে এসএসসি পর্যন্ত তাদের রেজাল্ট বরাবরই খুব ভালো করেছে। এসএসসিতে ও এইচএসসিতে তারা দুজনেই জিপিএ-৫ পায়। তাদের সাফল্যে আমি বাবা হিসেবে খুবই গর্বিত এবং এলাকায় তারা বেশ সুনাম অর্জন করেছে।
এব্যাপারে শেরপুর সরকারি কলেজের গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শামছুল হুদা চৌধুরী বলেন, মিম ও মিশু দুই বোনই খুবই মেধাবী ছাত্রী। তারা নিয়মিত কলেজে আসতো। দিনের পড়া দিনেই শেষ করার আপ্রাণ চেষ্টা করতো। তাদের দুইজনের একই বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্সের খবর শুনে আনন্দিত হয়েছি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন