শৈত্যপ্রবাহ কাটতে পারে দু-তিন দিন পর

সারাদেশেই শীত জেঁকে বসেছে মাঘের মাঝামাঝি এসে। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে শীতের দাপটে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। শীতের তীব্রতা অনুভূত হচ্ছে ঢাকায়ও।

শনিবার (২৯ জানুয়ারি) মাঘ মাসের ১৫ তারিখ। শুক্রবার দেশের বিস্তৃর্ণ অঞ্চলজুড়ে শুরু হয় মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। শনিবার তা আরও নতুন নতুন অঞ্চলে বিস্তৃত হয়েছে।

দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলজুড়েই এখন বইছে শৈত্যপ্রবাহ। তবে আপাতত আর শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি ও শৈত্যপ্রবাহ বিস্তৃত হওয়ার আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।

আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, আগামী দু-তিনদিনের মধ্যে শৈত্যপ্রবাহ কেটে যেতে পারে। একই সঙ্গে ফেব্রুয়ারির শুরুতে অর্থাৎ মাঘ মাসের শেষ সপ্তাহে বৃষ্টির দেখাও মিলতে পারে।

শুক্রবার রংপুর ও রাজশাহী বিভাগসহ গোপালগঞ্জ, ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, যশোর ও কুষ্টিয়া জেলায় মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়।

শনিবার রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগসহ গোপালগঞ্জ, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, ফেনী, যশোর, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা এবং বরিশাল জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। নতুন নতুন অঞ্চলে বিস্তৃত হয়েছে শৈত্যপ্রবাহ।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, ৬ থেকে ৮ ডিগ্রির মধ্যে থাকলে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বলে। আর তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেলে তাকে বলে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ।

শৈত্যপ্রবাহ শুরু হওয়ার দিনই (শুক্রবার) দেশের উত্তরের জেলার কুড়িগ্রামের রাজারহাটে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নামে ৬ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এটাই ছিল চলতি শীত মৌসুমে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।

তবে শনিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কিছুটা বেড়েছে। সকালে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে তেঁতুলিয়া ও রাজারহাটে। এ দুটি স্থানে তাপমাত্রা ছিল ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ওইদিন সকালে ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ দশমিক ৬ ডিগ্রি, যা শুক্রবার ছিলো ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

সহকারী আবহাওয়াবিদ আফরোজা সুলতানা বলেন, ‘আপাতত তাপমাত্রা আর কমার সম্ভাবনা নেই, তাই শৈত্যপ্রবাহ হয়তো তীব্র আকার ধারণ করবে না। শৈত্যপ্রবাহ নতুন অঞ্চলেও আপাতত আর বিস্তৃতি লাভ করবে না। কাল থেকেই হয়তো তাপমাত্রা আবার বাড়তে শুরু করবে।’

তিনি বলেন, ‘আগামী দু-তিনদিনের মধ্যে হয়তো শৈত্যপ্রবাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। হয়তো দু-একটি স্টেশনে শৈত্যপ্রবাহ থাকতে পারে।’ ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতে ফের বৃষ্টির দেখা মিলতে পারে বলেও জানান আফরোজা সুলতানা।

শনিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং দেশের অন্যত্র কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।

এসময়ে সারাদেশে রাতের এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলেও পূর্বাভাসে জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ। উপ-মহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে বলেও জনিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।