‘শোক দিবসের চাঁদা চাইলে খবর দিন, ব্যবস্থা নেব’

শোকের মাস আগস্ট উপলক্ষে কেউ যেন চাঁদাবাজি না করতে পারে সে ব্যাপারে নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বলেছেন, শোক দিবসের নামে কেউ চাঁদা চাইলে তা দলের ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর কার্যালয়ে জানাতে। দল অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।

মঙ্গলবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪২তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু সমাজকল্যাণ পরিষদ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ওবায়দুল কাদের এতে প্রধান অতিথি ছিলেন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নির্মমভাবে হত্যা করা হয় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের। এ উপলক্ষে প্রতি বছর ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস পালিত হয়। আগস্ট মাস পুরোটাজুড়েই থাকে শোকের আবহ। তবে দলের সুযোগসন্ধানী কিছু নেতা এই উপলক্ষে চাঁদাবাজি করে থাকেন বলে বরাবরই অভিযোগ ওঠে।

সুযোগসন্ধানী সেই নেতাদের প্রসঙ্গ টেনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘শোক দিবসের নামে কেউ যেন চাঁদাবাজি না করে। বঙ্গবন্ধুর শোক দিবস পালন করতে টাকা লাগে না। যারা চাঁদাবাজি করে তারা বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসে না, তারা তাদের স্বার্থসিদ্ধিকে ভালোবাসে, তারা নিজেদেরকে ভালবাসে।’

কাদের বলেন, ‘কেউ শোক দিবসের নামে কারো কাছে চাঁদা চাইলে ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে খবর দেবেন। আমরা তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেব।’

বঙ্গবন্ধুকে ব্যবহার করে বর্তমানে বিলবোর্ড ও ব্যানারে আত্মপ্রচারণা চালানো হচ্ছে অভিযোগ করে কাদের বলেন, ‘শোকের মাস এলে বড় বড় বিলবোর্ড, ব্যানার দেখা যায়। বিলবোর্ডেও যে প্রদর্শন হয় সেখানে বঙ্গবন্ধুর ছবি দিয়ে ৫০/৬০টি ছবি দেয়া হয়। নিজেকে প্রচারের জন্য নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধুকে ব্যবহার করছেন। যেখানে বঙ্গবন্ধু হলেন উপলক্ষ মাত্র, তাদের স্বার্থসিদ্ধিই প্রধান লক্ষ্য।’

বিএনপির উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আপনারা ১৫ আগস্ট খালেদা জিয়ার ভুয়া জন্মদিন পালন করা থেকে বিরত থাকুন এবং জন্মদিন পালন করবেন না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে জনগণের কাছে ক্ষমা চান। তবেই সংলাপের পরিবেশ সৃষ্টি হবে।’

বিএনপিকে হিটলারের প্রেতাত্মা উল্লেখ করে কাদের বলেন, ‘বিএনপি আওয়ামী লীগকে বলে আওয়ামী লীগ নাকি হিটলারের অনুসারী। অথচ বিএনপি তাদের ক্ষমতায় থাকাকালে পাঁচ বছরে আওয়ামী লীগের ২১ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। এসব খুনির সঙ্গে কোনো সংলাপ হতে পারে না।’

মন্ত্রী বলেন, ‘আগামী নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনের অধীনেই হবে। এখানে সরকার কোনো হস্তক্ষেপ করতে পারবে না । কিন্তু বিএনপি চায় এমন নির্বাচন কমিশন যারা তাদের ৩০০ সিটে জিতিয়ে দেবে।’

বঙ্গবন্ধু সমাজকল্যাণ পরিষদের সভাপতি ড. মো. শামছুল হক ভূঁইয়া এমপির সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, পরিষদের সাধারণ সম্পাদক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সদস্য এস এম বাহালুল মজনুন চুন্নু, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসাইন প্রমুখ।