শ্রমিকরা আটকে দিল গাড়ি, বাবার কোলেই সন্তানের মৃত্যু

দুই দিন বয়সী নবজাতক শিশুকে হাসপাতালে নিতে না পারায় বাবার কোলেই মারা গেছে। ঘটনাটি দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার পাথারিয়া ইউনিয়নের গনিগঞ্জ গ্রামে। শিশুটির বাবার নাম মইনুল ইসলাম।

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মইনুল ইসলামের স্ত্রী শেলিনা বেগম গত রোববার দিবাগত রাতে নিজ বাড়িতেই পুত্রসন্তান প্রসব করেন। কিন্তু সোমবার সকালে ঠান্ডাজনিত কারণে ওই নবজাতক অসুস্থ হয়ে পড়লে শিশুটির বাবা সন্তানকে নিয়ে গনিগঞ্জ বাজারে যান। সেখানে স্থানীয় পল্লীচিকিৎসক তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। এ খবরে তিনি সন্তানসহ স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ীদের নিয়ে শ্রমিক নেতাদের কাছে যান। এ সময় সন্তানের অসুস্থতার কথা জানালে শ্রমিকরা জানান মরে গেলেও গাড়ি যেতে দেয়া হবে না এবং শ্রমিকরা তার রাস্তা অবরোধ করে রাখেন। একপর্যায়ে দুপুর ১২টার দিকে সেখানেই বাবার কোলে নবজাতকের মৃত্যু হয়।

এ ব্যাপারে মইনুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, গাড়ি নিয়ে আমার বাচ্চাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারলে তার মৃত্যু হতো না। অনেক অনুরোধ করলাম কিন্তু শ্রমিকদের মন গলেনি।

বাজারের ব্যবসায়ী নাজিম উদ্দিন বলেন, ‌আমরা সকাল থেকে শ্রমিকদের হাতে পায়ে ধরে বলেছি, কিন্তু তারা আমাদের কথা শোনেনি। বাবার কোলে সন্তানের মৃত্যু আমরা কোনোভাবেই মানতে পারছি না। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’

এ ব্যাপারে স্থানীয় ওয়ার্ড সদস্য কয়ছর আহমদ বলেন, এ নৈরাজ্য কোনোভাবেই মানা যায় না। এদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দিতে হবে। না হয় জনগণ এর বিচার করবে।

এ ঘটনায় দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানা পুলিশের ওসি ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী জানান, যানবাহন না পাওয়ায় নবজাতকের সড়কেই মৃত্যু হয়। এ ব্যাপারে কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।