‘সংকটের মধ্যেই সমাধানের পথ খুঁজে উৎপাদন অব্যাহত রাখতে হবে’
পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই সরকার ৫ আগস্ট মধ্যরাতে সকল প্রকার জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়েছে। প্রতি লিটার ডিজেলের দাম বেড়েছে ৩৪, কেরোসিনে ৩৪, অকটেনে ৪৬, পেট্রলে ৪৪ টাকা। এখন একজন ক্রেতাকে প্রতি লিটার ডিজেল ১১৪ টাকায়, কেরোসিন ১১৪ টাকায়, অকটেন ১৩৫ ও পেট্রল ১৩০ টাকায় কিনতে হচ্ছে।
এদিকে জ্বালানি সংকট অর্থনীতিতে আরও সংকট তৈরি করবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন অর্থনীতিবিদরা। তাদের মতে, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য কমে আসা সত্ত্বেও দেশে বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত জনগণের ওপর প্রভাব পড়বে। নিম্নআয়ের মানুষের জীবনযাত্রায় দুর্ভোগ নেমে আসবে। সার্বিকভাবে অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
সংকট সমাধানে পরামর্শও দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, এনার্জি মিক্স, জ্বালানি ব্যবহারে অপচয় হ্রাস ও কস্ট অ্যান্ড এনার্জি এফিশিয়েন্ট বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থাপনা জরুরি। একইসঙ্গে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ব্যবহারে কৃচ্ছতা সাধনে কঠোর তদারকির পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে স্থানীয় বাজারমূল্য হ্রাসের কথা বলেন তারা।
এ বিষয়ে কথা হয় দেশের পোশাক শিল্প উদ্যোক্তা, তৈরি পোশাক শিল্প মালিক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) পরিচালক এবং ডেনিম এক্সপার্ট লিমিটেডের পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল-এর সঙ্গে। মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, জ্বালানি সংকট এটি বৈশ্বিক সমস্যা। বিশ্বে এ সংকট দূর হলে আমাদের দেশেও এর প্রভাব পড়বে, দাম কমে আসবে। আজ দাম কমেছে সে জ্বালানি দেশের বাজারে এলে দাম কমে আসবে। তখন আমাদের সংকটও দূর হবে। তবে সংকটের মধ্যেই আমাদের সমাধানের পথ খুঁজে উৎপাদন অব্যাহত রাখতে হবে।
জ্বালানি সংকটে শিল্পে এর প্রভাব কেমন হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, লোডশেডিং আমাদের শিল্পের জন্য ক্ষতিকর। এর মাঝে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। বলা যায়, বহুমাত্রিক সমস্যায় রয়েছে শিল্প। তবে সব সংকটই সাময়িক, দীর্ঘায়ু হবে না। সংকট সমাধানে আমাদের আরও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। বিশেষ করে শিল্পকে লোডশেডিংয়ের বাইরে রাখতে হবে। আমাদের উৎপাদন অব্যাহত থাকলে রপ্তানি বাড়বে যা সংকট কাটাতে কার্যকরি। তাছাড়াও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি শিল্পখাতে আমাদের পণ্য উৎপাদন ও পণ্য পরিবহন খরচ বেড়ে যাবে। যার ফলে ব্যবসা বাণিজ্যে ব্যয় বাড়বে, পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি পেতে পারে। এর ফলে বৈশ্বিক বাণিজ্য প্রতিযোগিতায় পড়বে বাংলাদেশ।
সমাধানে আপনাদের পরামর্শ কী থাকবে- এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে একটি নীতিমালা প্রণয়ন প্রয়োজন। একইসঙ্গে স্থানীয়ভাবে গ্যাস উত্তোলনের বিকল্প নেই। জ্বালানি ব্যবহারে অপচয় কমাতে হবে। জ্বালানির আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে দ্রুতই স্থানীয় বাজারে সমন্বয় করতে হবে।
সেপ্টেম্বর থেকে শিল্পে সাপ্তাহিক বন্ধের দিন এলাকাভিত্তিক হবে- এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে রুবেল বলেন, সেপ্টেম্বর থেকে লোডশেডিং অর্ধেকে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা করেছে সরকার। এজন্য লোডশেডিং সমন্বয়ে এলাকাভেদে সপ্তাহে একেক দিন একেক এলাকায় শিল্পকারখানা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এলাকাভেদে ছুটি যেদিনই হোক, সেটি হবে সপ্তাহে একদিন। তবে আমরাতো এমনিতেই একদিন ছুটি দেই কারখানায়, সেখানে শুক্রবারের পরিবর্তে অন্য একদিন হবে। কারখানাতো একেবারেই বন্ধ হচ্ছে না। উৎপাদন আগের মতোই হবে, শিপমেন্টও হবে যথাসময়ে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন