সংখ্যালঘু নেতাদের সঙ্গে বৈঠক বিএনপির

দেশের বিভিন্ন ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপি। বৈষম্যহীন রাষ্ট্র-সমাজ নির্মাণসহ ক্রান্তিলগ্নে সংখ্যালঘুদের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দলটি। একইসঙ্গে গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র বিনির্মাণে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন নেতারা।

শুক্রবার বিকালে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্ট ও হিন্দু মহাজোটের সঙ্গে বৈঠক করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সভায় ঐক্য পরিষদ থেকে ৮ দফা দাবি পেশ করলে ক্ষমতায় গেলে তা পূরণের আশ্বাস দেন বিএনপি মহাসচিব।

মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে কিছু সংখ্যক দুষ্কৃতকারী ও সমাজের শত্রু বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চায়। তারা যতই চেষ্টা করুক না কেন, এই দেশের ধর্মীয় সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে দীর্ঘকালের যে সৌহার্দ্য সম্প্রীতি, তা ইচ্ছা করলেই নষ্ট করতে পারবে না। এবারও প্রমাণিত হয়েছে যে, শত চেষ্টা করেও আমাদের সৌহার্দ্য ও ঐক্য নষ্ট করতে পারেনি। বিএনপি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ও অঙ্গীকারবদ্ধ, বাংলাদেশে একটা রেইনবো রাষ্ট্র নির্মাণ করতে চায়। আমাদের নেতা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সেই কথাই বিশ্বাস করেন। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লবের সঙ্গে সঙ্গে ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখতে তারেক রহমানের ভিডিও বার্তা সেই নির্দেশনা দিয়েছেন। কিছু দিন আগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বক্তব্যে পরিষ্কার করে বলেছেন যে- ‘প্রতিশোধ নয়, প্রতিহিংসা নয় আসুন আমরা প্রেম-ভালোবাসা দিয়ে একটা বৈষম্যহীন রাষ্ট্র সমাজ গড়ে তুলি। সামনের দিকে এগিয়ে যাই’।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, যেই সরকারই ক্ষমতায় আসুক, ওনাদের (সংখ্যালঘু সম্প্রদায়) যে সমস্যাগুলো আছে, সেগুলোতে আমাদের সমস্যা মনে করে অবশ্যই তুলে ধরব। সমাধানের চেষ্টা করব। ১৯৭১ সালে যে চেতনায় বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক একটা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন নিয়ে এই দেশকে স্বাধীন করেছিলাম, ২০২৪ সালে এই বিপ্লবের মধ্য দিয়ে সেই চেতনাকে আবার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আসুন, আমরা সবাই মিলে একটা রাষ্ট্র নির্মাণ করি। জবাবদিহিতা, সব ধর্মের, বর্ণের মানুষের অধিকারগুলো নিশ্চিত করি। এটাই আমাদের সামনের দিনের লক্ষ্য।’

বৈঠক শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাস গুপ্ত, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিজন কান্তি সরকার ও হিন্দু মহাজোটের সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মা।

পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মা বলেন, বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে ৮ দফা দাবি তুলে ধরা হয়েছে। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সেগুলো দেখবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন দলটির মহাসচিব।

অতীতের কথা ভুলে গিয়ে একসঙ্গে সবাই মিলে মানবিক রাষ্ট্র গঠনে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে রানা দাশগুপ্ত বলেন, শান্তি ও স্বস্তি চাই। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিয়ে বসবাস করতে চাই। গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র বিনির্মাণে কাজ করবেন সবাই। বিএনপি মহাসচিব আমাদেরকে বলেছেন- ‘অতীতের কথা ভুলে গিয়ে বর্তমানকে সামনে রেখে ভবিষ্যতের দিকে যেন তাকাই। একটি মানবিক রাষ্ট্র, বৈষম্যবিহীন সমাজ প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করি’। মহাসচিবের এই বক্তব্যকে আমরা আন্তরিকভাবে স্বাগত জানিয়েছি।