সংলাপে বিশেষ কোনো সমাধান পাইনি : ড. কামাল

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগের সঙ্গে ঐক্যফ্রন্টের সংলাপে বিশেষ কোনো সমাধান পান নাই বলে জানিয়েছেন ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন। বলেছেন, ‘আজকের সংলাপে বিশেষ সমাধান আমরা পাই নাই। তবে (প্রধানমন্ত্রী) একটা ব্যাপারে ভালো কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, আমাদের সভা সমাবেশে কোনো ধরনের বাধা দেবেন না।’

বৃহস্পতিবার সংলাপ শেষে বেরিয়ে আসার পর রাত সাড়ে এগারটার দিকে বেইলি রোডের নিজ বাসায় সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন ড. কামাল।

এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা থেকে রাত ১০টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত সংলাপ হয় দুই পক্ষে। এক পক্ষে আওয়ামী লীগের ১৬ এবং ১৪ দলের চার শরিককে নিয়ে নেতৃত্বে ছিলেন শেখ হাসিনা। টেবিলের অপর দিকে বিএনপি ও গণফোরামের ছয়, জেএসডির তিন, নাগরিক ঐক্য এবং জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার দুই জন করে এবং জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে নিয়ে নেতৃত্বে ছিলেন ড. কামাল হোসেন।

ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘আমরা আমাদের সাত দফা তার কাছে পেশ করেছি। আমরা গেছিলাম আজকে গণভবনে, সেখানে প্রধানমন্ত্রীর সাথে আমাদের সংলাপ ছিল। আমরা ওখানে তিন ঘণ্টা ছিলাম। সাড়ে সাতটা থেকে সাড়ে দশটা পর‌্যন্ত। আমাদের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ তাদের মতো করে অভিযোগগুলি তুলে ধরেছেন। তাদের অভিযোগের কথা, নানান কথা সরকারের কাছে তুলে ধরেছেন।’

কামাল হোসেন বলেন, ‘সবার কথা শোনার পরে আমাদের প্রধানমন্ত্রী বেশ লম্বা বক্তৃতা দিয়েছেন। তবে ওখানে বিশেষ সমাধান আমরা পাই নাই। একটা ব্যাপারে সভা সমাবেশের ব্যাপারে একটা ভালো কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন কোনো ধরনের বাধা দিবেন না। সামগ্রিকভাবে আমরা আমাদের কথাগুলি বলে এসেছি, ওনি (প্রধানমন্ত্রী) ওনার কথা বলেছেন।

সংবাদ ব্রিফিংয়ে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সুব্রত চৌধুরী। বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে আজকে যে সংলাপ হয়েছে। আমরা মনে করি এটা দীর্ঘ সময় ধরে হয়েছে, প্রায় সাড়ে তিন ঘন্টা। শুরুতে ড কামাল হোসেন সূচনা বক্তব্য রেখেছেন।

সুব্রত চৌধুরী বলেন, এর পরে আমাদের অন্যতম শীর্ষ নেতা বিএনপির মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ৭ দফা দাবি উত্থাপন করেছেন। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যান্য নেতারাও আমাদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রেখেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন ঢাকাসহ সারা দেশে সভা সমাবেশ ও রাজনৈতিক কর্মসূচির ওপর কোনো বাধা নিষেধ থাকবে না। রাজনৈতিক দল সমূহ যে যেখানে সভা করতে চায় করতে পারবে। এ বিষয়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে তিনি ইতিমধ্যে নির্দেশনা দিয়েছেন।

সুব্রত চৌধুরী বলেন, রাজনৈতিক মামলা সম্পর্কে তিনি বলেছেন রাজনৈতিক নেতারা যে গণগ্রেফতার হচ্ছে সেই মামলাগুলির তালিকা দেন। আমরা অবশ্যেই সেগুলো বিবেচনা করব এবং যাতে হয়রানি না হয় সেগুলো বিবেচনা করব। উত্থাপিত দাবি দাওয়া নিয়ে ভবিষ্যতে আলোচনা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির ব্যাপারে কি হয়েছে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এ ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। তিনি সুনির্দিষ্টভাবে কোনো কিছু বলেননি। তিনি বলেছেন এ বিষয়গুলি নিয়ে ভবিষ্যতে আলোচনা হতে পারে।

প্রধানমন্ত্রীর এই কথায় আপনারা কি সন্তুষ্ট? এমন প্রশ্নে মির্জা ফখরুল বলেন, আমি আগেই বলেছি, এই বিষয়ে আমি সন্তুষ্ট নই।

সংলাপে কোনো সমাধান ছাড়া তফসিল দেয়া যাবে না এমন কথা ছিল, এ বিষয়ে কি আলাপ হয়েছে? এমন প্রশ্নে ফখরুল বলেন, আমরা তফসিলের বিষয়ে বলেছি, তিনি বলেছেন এটি তার এখতিয়ার নয়। তফসিল দেয়ার এখতিয়ার নির্বাচন কমিশনের। আমরা বলেছিলাম সেটা, ওনি বলেছেন এটা নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে।

সে ক্ষেত্রে আপনারা পরবর্তী পদক্ষেপ কি হবে? এমন প্রশ্নে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের ঐক্যফ্রন্টের যে কর্মসূচি আছে সে কর্মসূচি চলবে।

আ স ম রব বলেন, আমরা সাত দফা কর্মসূচি দিয়েছি। মানা না মানার দায়িত্ব হলো সরকারের। আমাদের কথা হলো আমরা কর্মসূচি দিয়েছি। এ নিয়ে আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।

সংবাদ ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মোস্তফা মহসিন মন্টু, আ ব ম মোস্তফা আমিন প্রমুখ।