সচিবালয়ের অগ্নিকান্ড একটি গভীর ষড়যন্ত্র: সারজিস আলম
সচিবালয়ের অগ্নিকান্ডের ঘটনা ষড়যন্ত্র মূলক বলে ছাত্র আন্দোলনের অনত্যম সমন্বয়ক মো. সারজিস আলম বলেছেন, সচিবালয়ের এক রুমে ও আরেক রুমে আগুন মধ্যবর্তি রুমের পার্থক্য প্রায় ১০০ মিটার। এটা কিভাবে সম্ভব। আগুন একটা নির্দিষ্ট এলাকা থেকে ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়বে। এটাই হওয়ার ছিল। কিন্তু এমন দুটি রুমে আগুন লেগেছে যে দুটা রুমে অভ্যুহুথানের সহযোদ্ধাদের। যারা এখন বর্তমান সরকারের প্রতিনিধিত্ব করছেন। উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও নাহিদ ইসলামের রুম।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) বিকালে ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাব হলরুমে জাতীয় নাগরিক কমিটির ‘ঠাকুরগাঁও রাইজিং’ প্রোগ্রামে এসে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
সারজিস আলম বলেন, আমরা মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে ও দেখতে পেরেছি সেখানে একটি কুকুরের মৃতদেহ পাওয়া গেছে। সচিবালয়ের ভিতরে কিভাবে একটি কুকুর পাওয়া যেতে পারে। এখানে আরও কোনো চক্রান্ত আছে কিনা। ষড়যন্ত্র আছে এটা আমরা নিশ্চিত। কিভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করার পায়তারা চলছে। সেটিও আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে পর্যবেক্ষণ ও প্রতিহত করতে হবে।
সচিবালয়ের বড় আমলারা খুনি হাসিনাকে চেয়ারে বসিয়ে রেখেছিল উল্লেখ করে সারজিস বলেন, আমলাদের একটা বড় অংশ বিগত ১৬ বছরের সকল অন্যায় অপকর্মকে বৈধতা দিয়েছে। এদেরে একটা বড় অংশ দেশের সরকারি অফিস গুলোতে খুনি হাসিনার পারিবারিকতন্ত্র চালিয়েছে। রেফারেন্স, স্বজনপ্রিতির ভিত্তিতে, দলিয়করণ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের ফলে প্রত্যেকটা সরকারি অফিস দলিয়করণ হয়েগিয়েছিল।
বিপ্লবীরা এতদিন ধরে আমলাতন্ত্রে ও সরকারি যারা আছে তারা তাদের জায়গা থেকে সুশিলতা দেখিয়েছে। এগুলো বিপ্লবের পরবর্তী সময়ে দেখা যে কোনোদিন প্রাসঙ্গিক হতে পারেনা তার প্রমাণ হচ্ছে গতকালের সবিচালয়ের আগুন।
খুনি হাসিনার পক্ষে কিছু আমলা সচিবালয়ে এখনো অফিস করে। তাহলে সচিবালয় কিভাবে নিরাপদ থাকবে। অন্তর্বতীকালিন সরকারের উচিত হবে গণঅভ্যুহুানের স্প্রিড ধারণ করে পদক্ষেপ গ্রহণ করা বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
চাঁদাবাজির বিষয়ে তিনি বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ে বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজি শুরু হয়ে গিয়েছে। মামলা দিয়ে ও বড় বড় ব্যবসায়িদের রাতের বেলা বাসায় ডেকে নিয়ে টাকার পরিমান নির্ধারণ করা সহ বিভিন্নভাবে মানুষের কাছে টাকা আদায় করা হচ্ছে। এগুলোর জন্য এতো মানুষ জীবন দেয়নি। অভ্যুত্থানের পরে যদি পরিস্থিতি করুণ অবস্থার দিকে যায় তাহলে নতুন করে অভ্যুত্থানের জন্য আর কেউ রাস্তায় নামবে না। ছাত্রদের ইমোশন নিয়ে এখন খেলা হচ্ছে।
এখানেও কোন শ্রদ্ধেয় রাজনীতিবিদ আছেন কিন্তু কেউ যদি কারও নাম ভাঙ্গিয়ে কোনো অপকর্মের সাথে জড়িত হয় ও সেটা প্রতিহত না হলে আমরা তাকেও দায়ি করবো। তাই সকলের সাহস থাকতে হবে যেটি আমরা গত ৩ ও ৪ আগস্ট দেখিয়েছি। আমরা সকলে একসাথে কাজ করলে কেউ আমাদের ঠেকাতে পারবে না।
জাতীয় নাগরিক কমিটি নিয়ে তিনি বলেন, এটি কোন রাজনৈতিক দল নয়, এটি একটি রাজনৈতিক শক্তি। সকলে অনুভব করে নতুন কিছু দরকার। বাংলাদেশের লিডারশীপ গুলোকে ধ্বংস করা হয়েছে। আগামীতে ডিমান্ড অনুযায়ী দক্ষ নেতৃত্ব তৈরীর প্লাটফরম হিসেবে কাজ করবে নাগরিক কমিটি।
নির্বাচনের বিষয়ে সারজিস আলম বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের আগে যদি বলা যেত দুই-তিন বছর সংস্কারের জন্য সময় দিতে হবে তাহলে শুধু রাজনৈতিক দল না একজন সাধারন মানুষকেও দ্বিমত পাওয়া যেতনা । আবার নির্বাচনের সময়কে দীর্ঘ করে দেশের নাজুক পরিস্থিতিতে নিয়ে যাওয়া যাবেনা । গণঅভ্যুত্থানের এখনো ৫ মাস পার হয়নি। তাদেরকে স্ট্যান্ডার্ড সংস্কারের সময় ও সুযোগ দিতে হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন