সড়কে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার, উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং

ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার মইলাকান্দা ইউনিয়নের শ্যামগঞ্জ বাজার থেকে নওপাই সড়ক নির্মাণ ও মেরামতে পচা ইটের সুরকি, নিম্নমানের পাথর, বিটুমিন ব্যবহার ব্যবহারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ধুলোবালির উপরে সড়ক নির্মাণের পরপরেই উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং। নিম্নমানের ও অতিরিক্ত গরমে বিটুমিন ব্যবহারের কারণে একাধিক স্থানে কার্পেটিংয়ে নুড়ি পাথর খসে পরছে।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা প্রকৌশলী মো. আমিনুল ইসলাম জানান, রাস্তাটি করতে গিয়ে অনেক প্যারা সহ্য করতে হয়েছে। যেখানেই অনিয়মের অভিযোগ এসেছে, সেখানেই গিয়েছি। চেষ্টা করেছি গুণগত মান বজায় রেখে কাজ করেছি। কাজটি শেষ হলেও আরও এক বছর রাস্তাটি আমরা দেখবো। তারপরে ঠিকাদার ফাইনাল বিল পাবেন। কোথাও অনিয়ম হলে সে বিষয়েও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ২ কিলোমিটারের মধ্যে এক কিলোমিটার নতুন আর বাকী অংশটা মেরামতের কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। এ কাজটি দায়িত্ব পায় মাহিন এন্টারপ্রাইজ। প্রাক্কলিত ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৬০লাখ টাকা। এ বছরের জুন মাসে কাজটির মেয়াদ শেষ হয়।
এরপরে প্রকৌশল বিভাগ ঠিকাদারকে তাগিদ দিয়ে কাজটি শেষ করা হয়েছে।
নওপাই গ্রামের আব্দুর বারেক জানান, এ সড়কে ইটের এক নাম্বার সুরকির স্থানে রাবিশের মতো পঁচা সুরকী ব্যবহার করা হয়েছে। কোনো স্থানে তেল দিয়েছে (বিটুমিন) আবার কোনো স্থানে তেল ছাড়াই কাজ করেছে।
একই গ্রামের নবী হোসেনের পুত্র মোশারফ হোসেন বলেন, এই পাথরগুলো মনে হয় কোনোভাবে কালো রঙ করে রাস্তায় ফেলে দেয়া হয়েছে। রোলার দিয়ে সময় করার সময় দেখেন একটু বিটুমিন পর্যন্ত চাক্কায়ও লাগে না। তেলের (বিটুমিন) টাকা বড়কর্তারা নিয়ে গেছে, তাই রাস্তা পাথরগুলো মাঝে ফাঁকা ফাঁকা। বর্ষাকালে এ ফাঁকা স্থানে পানি জমেই আবার নষ্ট হয়ে যাবে।
ডেঙা গ্রামের নাছিমা খাতুন বলেন, এই রাস্তাটা করছে, কস (বিটুমিন) নেই। পাথর ঝরঝরা এখন উঠে পরছে। মইলাকান্দা পশ্চিমপাড়ার রফিকুল ইসলাম বলেন, রাস্তা তো কোনোভাবে করে গেলেই শেষ। এই যে দেখলেন রাস্তাটা, নুড়ি পাথর উঠে যাচ্ছে।
একই গ্রামের নাছিমা খাতুন বলেন, কালা কালা তেল এদিকে দেয় নাই। ওই যে স্কুলটা দেখছে তারপরে আবার তেল দিয়েছে।
এ দিকে শ্যামগঞ্জ রেলওয়ে মাঠে রক্ষিত পাথর, নুড়িপাথরগুলোও নিম্নমানের ও মৃত পাথর দিয়ে কাজ হচ্ছে বলে জানান শ্যামগঞ্জের জয়নাল আবেদিন। তিনি বলেন, এই পাথরগুলো সাদা এবং ওজনেও কম। বিটুমিনও নিম্নমানের যে কারণে রাস্তা মেরামত ও নির্মাণের পরপরে দ্রুত ভেঙে যাচ্ছে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিক্ষুব্দ এলাকাবাসী উঠে ফেলা কার্পেটিংয়ের স্থানে আবারও মেরামত করা হয়েছে। মইলাকান্দায় কার্পেটিং করার হচ্ছে সেখানে বিটুমিন দেয়া নেই। ধুলোবালির আস্তরণের উপরে হ্যান্ডট্রলি (স্থানীয়ভাবে তৈরি পরিবহনের গাড়ি) মাল ফেলে সেখানে চলছে কার্পেটিং।
পাথর আর বিটুমিন মিশ্রণের স্থানে দেখা যায়, নুড়িপাথরে বালু ও ময়লা আবর্জনা মিশ্রিত। বিটুমিনের (পিচ) ড্রামে কোনো কোম্পানীর নাম লিখে নেই। এ সড়কে ব্যবহৃত পাথর গীতিকার মনিরুজ্জামান মনির আর সুরকার এন্ডু কিশোর এর সেই বিখ্যাত গান ‘পাথরে ফুল ফুটাবো’ তার বাস্তবচিত্র খোঁজে পাওয়া যায়।
পাথরের মাঝে মিশ্রিত ধুলোবালিতে ঘাস আর রঙিন আগাছা জন্ম নিয়েছে। এ প্রসঙ্গে উপসহকারী প্রকৌশলী তৌফিকুল ইসলাম জানান, বড় পাথরের সাথে নুড়ি পাথর, ভাঙা পাথর ও বালি মিশ্রণেই এ কাজ করা হয়।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন



















