সরকারি কর্মসৃজন প্রকল্পের ২০ শ্রমিকের মজুরি চেয়ারম্যানের পকেটে!
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2023/08/GridArt_20230820_220429925-900x450.jpg)
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2025/02/475351977_1256003665483861_2959209934144112011_n.jpg)
বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকার কর্মসৃজন প্রকল্পের মাধ্যমে একগুচ্ছ সমন্বিত প্রয়াস যার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের বিপর্যয়ের সময় এ কর্মসূচির মাধ্যমে দরিদ্র পরিবারকে সহায়তা করে থাকেন। এরই ধারাবাহিকতায় গ্রামীন অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে হতদরিদ্রদের সহায়তা করার লক্ষ্যে কর্মসৃজন প্রকল্পে কাজ করেন।
এ প্রকল্পের মাধ্যমে হতদরিদ্রদের সাহায্য করতে তাদের বিভিন্ন কাজে লাগিয়ে থাকেন। কিন্তু সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার যোগসাজসে ২০ শ্রমিকের বিকাশ নম্বর পরিবর্তন করে সুকৌশলে ২ লক্ষ ৩২ হাজর টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বেলকুচি উপজেলার ভাঙ্গাবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম ভূঁইয়া। ২০ জন শ্রমিক ভাঙ্গাবাড়ি ইউনিয়নের উত্তর বানিয়াগাঁতী আদর্শ গ্রামের বাসিন্দা।
এসব শ্রমিকের টাকা উত্তোলন করার জন্য ভাঙ্গবাড়ি ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য আব্দুর রাজ্জাক খাঁন ২০ জন শ্রমিকের ২৯ দিনের টাকা পরিশোধ করতে বারবার বেলকুচি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে অবগত করেন। কিন্তু উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মজনু মিয়া ইউপি সদস্য আব্দুর রাজ্জাককে বলেন, কর্মসৃজনের সকল শ্রমিকের টাকা পরিশোধ করা হয়েছে, কারও টাকা বাকী নেই।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, বেলকুচি উপজেলার ভাঙ্গাবাড়ি ইউনিয়নের ভাঙ্গাবাড়ি কবরস্থানে মাটি ভরাট ও উত্তর চন্দনগাঁতী চাঁন মাতব্বরের বাড়ি হতে মাসুদের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা নির্মানে ৬০ জন শ্রমিক কাজ করেন। এর মধ্যে উত্তর বানিয়াগাঁতী গ্রামের আব্দুল গফুর খাঁন, সাইদুল ইসলাম, সোহরাব আলী খাঁন, শরিফুল খাঁন, মোশারফ হোসেন, ফিরোজা খাতুন, মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ, রিপা বেগম, মজনু মন্ডল, সাইদুল ইসলাম, মায়া খাতুন, আখিরুল ইসলাম, নুর ইসলাম সরকার, জাহাঙ্গীর আলম, পারভীন বেগম, চাঁন মিয়া, খোদেজা খাতুন ও রফিকুল ইসলাম নিয়মিত কাজ করে ১ম কিস্তির টাকা তাদের স্ব-স্ব বিকাশ এ্যাকাউন্টে দৈনিক ৪’শ টাকা করে ৪০দিনের মোট ১৬ হাজার টাকা গ্রহণ করেন।
কিন্তু ২য় কিস্তির সময় ২৯ দিনের দৈনিক ৪’শ টাকা করে ১১ হাজার ৬’শ টাকা বিকাশ এ্যাকাউন্টে আসেনি।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করে বলেন, ১ম কিস্তির টাকা দেওয়ার সময় যে বিকাশ এ্যাকাউন্ট নম্বর ব্যবহার করা হয়েছিল, সেগুলো আমাদের শ্রমিকের ২০টি বিকাশ এ্যাকাউন্ট ছিল। দ্বিতীয় কিস্তিতে যে বিকাশ এ্যাকাউন্ট ব্যবহার করা হয়েছে, সেই বিকাশ এ্যাকাউন্ট আমাদের নম্বর না।
চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার যোগসাজসে আমাদের বিকাশ এ্যাকাউন্ট নম্বর পরিবর্তন করে ২ লক্ষ ৩২ হাজার টাকার আত্মসাত করেছেন।
৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুর রাজ্জাক খাঁন বলেন, ২০জন শ্রমিক ১ম কিস্তির টাকা প্রত্যেকের বিকাশ এ্যাকাউন্টে ১৬ হাজার টাকা পৌঁছেছে। কিন্তু দ্বিতীয় কিস্তির টাকা ১১ হাজার ৬’শ টাকা তাদের বিকাশ এ্যাকাউন্টে পৌঁছে নাই।
অফিসে গিয়ে খোঁজ নিয়ে দেখতে পাই এই ২০জন শ্রমিকের নাম পরিবর্তন না করে শুধুমাত্র বিকাশ এ্যাকাউন্ট নম্বর পরিবর্তন করে চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম ভূঁইয়ার আত্মীয় স্বজনের বিকাশ এ্যাকাউন্ট নম্বর বসানো হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে বারবার তাগিদ দেওয়া হলে তিনি আমাকে জানান, কর্মসৃজনের টাকা সকল শ্রমিকের বিকাশ এ্যাকাউন্টে চলে গেছে। এ ব্যাপারে আমার কিছুই করার নেই।
এবিষয়ে ভাঙ্গাবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলামকে বারবার ফোন দেওয়া হলে তিনি ফোন রিসিভ করেনি।
বেলকুচি উপজেলা সাবেক প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মজনু মিয়া বলেন, বিকাশ নম্বর পরিবর্তনের এখতিয়ার ইউনিয়ন কমিটির। আমি বিকাশ নম্বর। পরিবর্তন করতে পারি না। হয়তো চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম বিকাশ নম্বর পরিবর্তন করে দিয়ে বিল সাবমিট করেছেন।
বেলকুচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফিয়া সুলতানা কেয়া বলেন, বিকাশ নম্বর কিভাবে পরিবর্তন হলো, এটা পিআইও ভাল বলতে পারবেন। তার সাথে কথা বলেন।
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2024/12/469719549_122234398946008134_2936380767280646127_n.jpg)
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন