সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে যে সিদ্ধান্ত
আপাতত সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেই বলেন মন্তব্য করেছেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।
সোমবার (৬ মে) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে দুটি সম্পূরক প্রশ্নের উত্তরে জনপ্রশাসনমন্ত্রী এসব কথা জানান।
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম ও সংরক্ষিত আসনে আওয়ামী লীগের সদস্য ফরিদা ইয়াসমিন এ সংক্রান্ত প্রশ্ন করেন।
রফিকুল ইসলাম তার প্রশ্নে বলেন, সরকারি চাকরিতে যোগদানের যে বয়সসীমা রয়েছে, তা অনেক আগে নির্ধারণ করা হয়েছিল। ইতোমধ্যে আমাদের দেশের মানুষের আয়ুষ্কাল ৬২ বছর থেকে ৭২ বছরে পৌঁছেছে। এখন এটি অত্যন্ত যৌক্তিক, সরকারি চাকরিতে যোগদানের বয়সসীমা শিথিল করে অন্তত ৩৫ বছরের কাছে নিয়ে যান।
তিনি বলেন, বয়সসীমা বাড়ালে কর্মসংস্থানের অভাবে আমাদের হতাশাগ্রস্ত তরুণ ও যুবসমাজ প্রতিযোগিতায় এসে সরকারি চাকরিতে ঢুকতে পারবে। আমি সরকারকে অনুরোধ করব, বয়সসীমা শিথিল করার সময় এসেছে। সরকারি চাকরিতে যোগ দেওয়ার সুযোগ সৃষ্টির সময় হয়েছে। আমাদের ‘না’ মনোভাব থেকে বেরিয়ে এসে ‘হ্যাঁ’-তে আসতে হবে।
এ প্রশ্নের উত্তরে জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, গত ১৫ বছরে সরকার অনেক যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে। চাকরির বয়স ছিল ২৭ বছর, সেখান থেকে বৃদ্ধি করে ৩০ বছরে উন্নীত করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের জন্য ৩২ বছর করা হয়েছে। চাকরি থেকে অবসরের বয়স ৫৭ বছর থেকে বাড়িয়ে ৫৯ বছর করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা সবসময় যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে জনবল কাঠামো ও নিয়োগ প্রক্রিয়ার আধুনিকায়ন করে থাকি। যুগের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে আমরা পরিবর্তনও করে থাকি। চাকরিতে প্রবেশ ও বেরিয়ে যাওয়ার (অবসর) বয়সটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সরকারি চাকরিতে এখন বেশ আকর্ষণ তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবীরা ক্যাডার সার্ভিসে যোগ দিচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, সরকারি চাকরির পরিবেশ থেকে শুরু করে বেতন কাঠামো, নতুন প্রজন্মের কাছে বড় আকর্ষণ তৈরি করেছে। সরকারের কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ততা একটি সম্মানের বিষয়। আবার চাকরির নিরাপত্তা থেকে শুরু করে বেতন কাঠামোও অত্যন্ত সুন্দর হয়েছে, কাজের পরিবেশও সুন্দর হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, এটি (চাকরির বয়সসীমা বাড়ানো) নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয়। আমরা সবসময় বলে আসি, ফ্রেশ গ্রাজুয়েটদের রিক্রুট করতে চাই। এটি সরকারের একটি পলিসি। ২২-২৩ বছর বয়স থেকেই শিক্ষার্থীরা বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে থাকেন। তারা ৬-৭ বছর সময় পান। তারা যোগদানের যথেষ্ট সময় পাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি সংসদে জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমরা সব সময় যুগের প্রয়োজনে, নতুন যা করলে ভালো হবে, তা চিন্তা করে থাকি। তবে মনে করি, এটি নীতিগত সিদ্ধান্ত- চাকরির বয়স আগামীতে বাড়াব কি বাড়াব না। বাড়ালে ভালো হবে কি না, তা আমাদের নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয়। এ নিয়ে ভবিষ্যতে আরও আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারব।
ফরিদা ইয়াসমিন তার প্রশ্নে বলেন, চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ বছর করার জন্য শিক্ষামন্ত্রী একটি ডিও লেটার দিয়েছেন। এ নিয়ে সরকারের কোনো পরিকল্পনা আছে?
জনপ্রশাসনমন্ত্রী বলেন, শিক্ষামন্ত্রীর কাছ থেকে এ ধরনের একটি পত্র আমরা ইতোমধ্যে পেয়েছি। আগেই বলেছি এটি নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয়। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আরও আলাপ-আলোচনা করব। তবে আপাতত চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর ক্ষেত্রে আমাদের সিদ্ধান্ত নেই। এটি নিয়ে আরও আলোচনা-পর্যালোচনা করে ভবিষ্যতে দেখবো।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন