সরকারের দিন ফুরিয়ে এসেছে : গয়েশ্বর
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বরচন্দ্র রায় বলেছেন, সরকারের অস্বাভাবিক আচরণ দেখে মনে হচ্ছে, তাদের দিন ফুরিয়ে এসেছে। সরকার আদালত ব্যবস্থাকে মুজিবীকরণ করতে চায়।
তিনি মনে করেন, দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত করতে গেলে জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল সরকার দরকার। জনগণের সরকার থাকলে দেশে আইনের শাসন যথাযথভাবে হতো।
মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ‘সুশাসন ও নাগরিক অধিকার’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরাম নামের একটি সংগঠন এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
গয়েশ্বর বলেন, আইনের শাসন নিশ্চিত করে স্বাধীন বিচার বিভাগ। স্বাধীন বিচার বিভাগ এবং প্রশাসন একে অপরের পরিপূরক হিসেবে নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করার ভূমিকা পালন করে। কিন্তু সরকার সেই বিচার বিভাগকেও মুজিবীকরণ করতে চায়।
তিনি বলেন, যেখানে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা থাকে না, সেখানে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলো আইনের শাসনের তোয়াক্কা করে না। এজন্যই খুন, গুম আর জঙ্গিবাদের নাটকের মধ্য দিয়ে দেশ চলছে।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি আলহাজ একেএম মোয়াজ্জেম হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিমউদ্দিন নাজিম মাস্টার, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহ-সভাপতি ফরিদ উদ্দীন আহমেদ প্রমুখ।
গয়েশ্বরচন্দ্র রায় বলেন, আজকে আদালতের পাশ দিয়ে আসার সময় লক্ষ্য করলাম রাস্তার দুই পাশে বড় বড় ফেস্টুন টানানো আর সেখানে লেখা আছে মাদার অব হিউম্যানিটি। মনে হলো এ শব্দটা যার বেলায় অবতারণা করেছেন, তারা জনগণের সঙ্গে মশকরা করেছেন।
দেশি এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা প্রতি বছর রিপোর্ট ছাপে বাংলাদেশে মানবাধিকার নেই। আর সেই দেশে অন্যায়ভাবে জনগণের সমর্থন ছাড়া পেশিশক্তির বলে প্রশাসনকে দলীয় ক্যাডার হিসেবে কাজে লাগিয়ে যারা ক্ষমতায় আছেন সেই ক্ষমতার শীর্ষ ব্যক্তিকে যখন মাদার অব হিউম্যানিটি বলে- সেটা জনগণের সঙ্গে মশকরা, ঠাট্টা ছাড়া আর কিছুই নয়।
প্রধান বিচারপতির ছুটি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ২ অক্টোবর প্রধান বিচারপতি ছুটিতে গেলেন। এর আগেও কিন্তু তিনি এক মাসের ছুটিতে গিয়েছিলেন কিন্তু তখন তার ছুটি নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে কোনো ধরনের কথা ওঠেনি। কারণ সেই ছুটিটা ছিল যথারীতি এবং তার নিজের ইচ্ছায়।
সেই ছুটির দরখাস্ত রাষ্ট্রপতি অনুমোদন করছেন কিনা- সেটা কিন্তু পত্র-পত্রিকায় আসেনি। কারণ এটা একটা সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। নিজের ছুটি তিনি নিজেই নেন এবং বঙ্গভবনের রেজিস্ট্রার কর্তৃক অনুমোদিত হয়।
ছুটিকালীন রাষ্ট্রপতি সংবিধানের নিয়মানুযায়ী তার অনুপস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত বিচারপতি নিয়োগ দেন এবং অনুমোদন করেন। কিন্তু এবার যখন তিনি ছুটি নিলেন তার পরের দিন বিচারপতিদের সমন্বয়ে নৈশভোজের আয়োজন করলেন।
শেখ হাসিনা নোবেল পাওয়ার যোগ্য এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, শান্তির জন্য নয়, অর্থনীতির জন্য নয়, গুমের জন্য তিনি নোবেল পাওয়ার যোগ্য।
এমনকি ৫ জানুয়ারির অদ্ভূত নির্বাচনের জন্য তার নোবেল পাওয়া উচিত ছিল। যেহেতু নোবেল কমিটি তাকে দেয় নাই তাই আওয়ামী লীগের নেতাদের উচিত নীলক্ষেত থেকে একটি নোবেল কিনে তাকে দেয়া।
সরকারের উদ্দেশ্যে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, সামনে নির্বাচন আসছে এখনই ভয় পাইছেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে দিলেন?
আগামী নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে। কিন্তু সত্যটা কি জানেন? শেখ হাসিনা সেই নির্বাচন পরিচালনার জন্য থাকবেন না। তাকে পদত্যাগ করতে হবে। বিরোধী দলের নেত্রীর সমান সমান নেত্রী হিসেবে নির্বাচন করতে হবে।
আপনি মনে করছেন ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি মার্কা নির্বাচন করে ক্ষমতায় থাকবেন, সে আশায় গুড়ে বালি। যে স্বপ্নই দেখেন, দুঃস্বপ্নে পরিণত হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন