সরকারের সহায়তায় নতুন দল গঠন জনগণ মেনে নিবে না : মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ছাত্ররা দল গঠন করলে স্বাগত জানাই। সরকারে কিছু থাকবেন আবার কিছু লোক সরকারের সহায়তায় দল গঠন করবেন এটা হতে পারে না। সরকারের লোকজন সংঘাতময় কোন বক্তব্য দিবেন না। নিরপেক্ষ থেকে নির্বাচন দিতে হবে। আর নয়তো জনগণ মেনে নিবে না।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারী) বিকেলে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানার ১৩ নং সেক্টর খেলার মাঠে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি আয়োজিত খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি কামনায় দোয়া মাহফিল ও দরিদ্রদের শীত এবং শাড়ী বিতরন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা এখন দম ছেড়ে নিস্বাস নিতে পারতেছি হাসিনা পালানোর কারনে। দেশে এখন আতঙ্ক নেই। ১৮ কোটি জনগণের বুকে পাথরের মতন বসে শাসন করেছে। হাসিনা আগেও ষড়যন্ত্র করেছে। দেশ থেকে পালিয়ে ভারতে গিয়ে এখনো ভালো হয়নি। ভারতে আশ্রয়ে থেকে দেশ নিয়ে দুষ্টামি করছে। হাসিনা অনেক মা বাবার বুক খালী করেছে। এনিয়ে হাসিনার কোন অনুশোচনা করে নাই।
নূনতম সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচন দিতে বর্তমান সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, পলাতক হাসিনা সরকারের রুগ্ন অর্থনীতির কারনে এখন বাজারদর বৃদ্ধি হয়েছে। দক্ষিনখানের গুমের শিকার মুন্নার মা বাবার কান্না দেখে আমি নিজেও অসুস্থ হয়ে পড়েছি। পলাতক হাসিনা দেশে আয়নাঘর সৃষ্টি করে গুম খুনের রামরাজত্ব কায়েম করেছিল। পলাতক হাসিনা সরকারের উত্তরা এলাকার এমপি হাবিব হাসান এবং খসরু নিরীহ মানুষের জমি বাড়ীঘর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল করেছিল।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ আফাজ উদ্দিনের সার্বিক সহযোগিতা ও সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে বক্তব্য রাখেন বিএনপি কেন্দ্রীয় ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক,সদস্য সচিব মোস্তফা জামান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন দক্ষিণখান থানা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক হেলাল উদ্দিন তালুকদার।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহবায়ক আমিনুল হক বলেন, বিএনপি জনগণের দল, জনগনের পাশে থেকে কাজ করে। তারেক রহমানের নির্দেশে করোনা কালে আমরা জনগণের পাশে থেকে লাশ দাফন করা সহ দরিদ্রদের পাশে ত্রাণসামগ্রী নিয়ে গ্রামে গ্রামে গিয়ে দিয়েছি। কিন্তু আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা জনগণের পাশে ছিল না।
তিনি বলেন, এখন দেখা যায় নব্য বিএনপি সেজে আওয়ামীলীগের লোকজন চাঁদাবাজী দখলদারি লুটতরাজসহ বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম করে বিএনপির উপর চাপিয়ে দেওয়া অপচেষ্টা করছে। এজন্য আমাদের সকলকে সর্তক থাকতে হবে।
অন্তবর্তী সরকারের প্রতি আহবান জানিয়ে আমিনুল হক বলেন, বাংলাদেশের জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী অতি দ্রুত সময়ের ভিতরে একটা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দিয়ে এদেশের জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করুন। কারন বাংলাদেশের মানুষ গত ১৫ বছর ধরে ভোট দিতে পারেনি। তারা ভোট দিতে চায়।
বাংলাদেশে কোন স্বৈরাচারের স্হান নেই উল্লেখ করে আমিনুল হক বলেন,বাংলাদেশের মানুষ গত ১৭ বছরের আওয়ামী স্বৈরাচারদের কাউকেই ক্ষমা করবে না।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্যসচিব হাজী মোস্তফা জামান বলেন, গত ১৭ বছর আমরা যেভাবে নির্যাতিত হয়েছি। আমাদের লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মী হামলা মামলা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে। আমাদের অনেক ভাই ও বোনেরা গুম হয়েছে। গত ১৭ বছরে আমরা বহু লাশ দেখেছি। তিনি বলেন, এদেশের জনগণের আন্দোলনের ফসল হলো এই অন্তবর্তী সরকার,এই সরকারের কাছে আমরা আহবান করব, জনগণের প্রত্যাশা পূরণে খুব দ্রুত সময়ের ভিতরে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দিন।
অনুষ্ঠানের সার্বিক সহযোগী এবং সভাপতির বক্তব্যে মোহাম্মদ আফাজ উদ্দিন বলেন, তারেক রহমানের প্রতিটি নির্দেশ সততার সাথে পালন করতে ঢাকা মহানগর উত্তরবিএনপি বদ্ধপরিকর। তিনি আরো বলেন, উত্তরায় রাজউক কর্তৃক জমি অধিগ্রহণের কারনে ক্ষতিগ্রস্থ জমির মালিকদের মধ্যে ৮/৯ শত এওয়ার্ড মালিকদেরকে এখনও ক্ষতিগ্রস্থ প্লট বরাদ্দ দেয়নি।ক্ষতিগ্রস্থদের অতিদ্রুত প্লট বরাদ্দ দেয়ার জন্য প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বানও জানান বিএনপি ঢাকা মহানগরীর এই নেতা।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, মহানগর উত্তরের যুগ্মআহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন,এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন,এম কফিল উদ্দিন আহমেদ,গাজী রেজাউনুল হোসেন রিয়াজ, মাহাবুব আলম মন্টু,মহানগর সদস্য আব্দুস সালাম সরকার, রেজাউল রহমান ফাহিম, রফিকুল ইসলাম খান, সাজ্জাদ হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর মহিলাদলের সদস্য সচিব এ্যাড রুনা লায়লা রুনা,ঢাকা মহানগর উত্তর শ্রমিক দলের সদস্য সচিব কামরুজ্জামান,উত্তরা পশ্চিম থানা বিএনপি নেতা মোঃ আব্দুস ছালাম, আলমগীর হোসেন শিশির,তুরাগ থানা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক হারুন অর রশীদ খোকা,হাজী জহিরুল ইসলাম,মোঃ চান মিয়া বেপারি, আলী আহমেদ, তুরাগথানা বিএনপি অন্যতম সদস্য আবদুল আলী,উত্তরাপূর্ব থানা বিএনপি আহবায়ক শাহআলম প্রমুখ।
অনুষ্ঠান শেষে দরিদ্রের মধ্যে শীতবস্ত্র ও শাড়ি বিতরণ করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন