‘সর্বত মঙ্গল রাধে’ বিতর্কে যা বললেন চঞ্চল চৌধুরী
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2020/10/IMG_20201024_005713.jpg)
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2025/02/475351977_1256003665483861_2959209934144112011_n.jpg)
‘সর্বত মঙ্গল রাধে’ বিতর্কে যা বললেন চঞ্চল চৌধুরী
অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী ও অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওনের গাওয়া ‘সর্বত মঙ্গল রাধে’ গানটি ইউটিউবসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোড়ন সৃষ্টি করে। তবে গানটির কপিরাইট নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।
মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) গানটি ইউটিউব ও ফেসবুকে মুক্তি পায় আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের উদ্যোগে ‘আমাদের গান’ নামের লোকজ সংগীত গানের অনুষ্ঠানে। তবে কিছু সময় পরই গানটি নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক।
চঞ্চল ও শাওনের গানে কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি ব্যান্ডদল ‘সরলপুরের’ কাছ থেকে। ব্যান্ডটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও প্রধান তরিকুল ইসলামের অভিযোগে ইউটিউব গানটি সরিয়ে নিয়েছে।
গণমাধ্যমকে দেয়া বক্তব্যে নানা বিশ্লেষণ উপস্থাপন ‘আয়নাবাজি’ খ্যাত চঞ্চল চৌধুরী সরলপুর ব্যান্ডদলের কাছে জানতে চেয়েছেন, কপিরাইট আইনের ব্যাখ্যা কী?
তার ভাষ্যে, যে আইনে তাদের দোষ দেয়া হচ্ছে ওই একই আইনে সরলপুর ব্যান্ডদলও দোষী। কারণ গানটি সরলপুর ব্যান্ডের মৌলিক সৃষ্টি নয়। এটি বহু বছর আগের প্রচলিত একটি গান। সরলপুরের গানটির বেশিরভাগই লাইন মধ্যযুগের কবি দ্বিজ কানাইয়ের লেখা মৈমনসিংহ গীতিকার মহুয়া গানের পদের মতো।
চঞ্চল চৌধুরী বলেন, ‘পুরো ঘটনাটিতে আমি খুব অবাক হয়েছি। ‘সর্বত মঙ্গল রাধে’ গানটিকে আমরা সবাই প্রচলিত গান বলেই জানতাম। বহু বছর আগে সাধকেরা রাধাকৃষ্ণের প্রেম নিয়ে পালা-পুঁথি লিখতেন, নানা পদ রচনা করতেন। এই গান সেখান থেকেই সৃষ্ট। আর এমন প্রচলিত গানের জন্য অনুমতি লাগবে সেটা কেউ ভাবেনি। তাছাড়া আমরাই প্রথম নই। ইউটিউবেও এই গানের অনেকগুলো ভার্সন দেখা যাচ্ছে। কোথাও কোনো ব্যান্ডের নাম ক্রেডিট হিসেবে দেয়া নেই। যদি জানা যেত গানটির মালিক সরলপুর ব্যান্ড তাহলে আইপিডিসি বা পার্থ বড়ুয়া অবশ্যই তাদের অনুমতি নিত।’
এমন ধরনের প্রচলিত ফোক গান নতুন করে রেকর্ড করলেই নিজের হয়ে যায় না বলেও জানান চঞ্চল।
উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, আমিও বেশ কিছু গান গেয়েছি। যার সবই প্রচলিত ফোক গান। যেমন ‘বকুল ফুল বকুল ফুল’ গানটি সর্বপ্রথম আমার কণ্ঠেই রেকর্ড হয়েছে। এরপর এর জনপ্রিয়তা দেখে জলের গান গেয়েছে, দিনাত জাহান মুন্নী গেয়েছেন। এখন আমি কি বলব- যে এই গান তারা আমার অনুমতি ছাড়া কেন গাইল? আমি এই গানের মালিক? বা আমি এই গানের কপিরাইট আমার নামে করে নেব?
একইভাবে ‘ফুল গাছটি লাগাইছিলাম ধুলা মাটি দিয়া রে’ ও ‘মনপুরা’ ছবিতে ব্যবহৃত ‘নিথুয়া পাথারে’ গানটির কথা জানান চঞ্চল। তিনি বলেন, প্রথমটি পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুরা অঞ্চলের গান। আমি গাওয়ার পর যা খুব জনপ্রিয়তা পায়। অনেকেই ভাবেন এটা আমার গান। তাই বলে এটা তো আমার হয়ে গেল না। এর পদ রচনাকারী আমি নই। ‘নিথুয়া পাথারে’ গানটিও নিজের বলে দাবি করেননি গিয়াসউদ্দিন সেলিম ভাই। এটাও সংগৃহিত গান হিসেবে পরিচিত।
এরপর চঞ্চল প্রশ্ন করেন, সরলপুর ব্যান্ড কর্তৃপক্ষের বক্তব্য অনুযায়ী ‘সর্বত মঙ্গল রাধে’ গানের ৩০ ভাগ তারা সংগ্রহ করেছেন আর ৭০ ভাগ তাদের লেখা। আমি জানতেই চাই যে, ৩০ ভাগের বেলায় কপিরাইট আইন কি বলে? আর বাকি ৭০ ভাগ তারা লিখেছেন বলে যে দাবি করছেন সেখানে কোন কোন লাইনগুলো তাদের লেখা? কারণ বেশিরভাগই লাইন মধ্যযুগের কবি দ্বিজ কানাইয়ের লেখা মৈমনসিংহ গীতিকার মহুয়া গানের পদের মতো। প্রায় হুবহু। সব মিলিয়ে জানতে চাই কীভাবে গানটি তাদের মালিকানায় এলো?
এদিকে আইপিডিসির সঙ্গে যোগাযোগ করলে গণমাধ্যমকে তারা জানান, বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। ব্যাপারটি খতিয়ে দেখার জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং স্টেকহোল্ডারদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছি।
উল্লেখ্য, শেরপুরের ব্যান্ড সরলপুর গত ১০ বছর ধরে বিভিন্ন চ্যানেলে এবং অনুষ্ঠানে গানটি পরিবেশন করে আসছে।
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2024/12/469719549_122234398946008134_2936380767280646127_n.jpg)
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন